বর্তমানে ডিম উৎপাদনের জন্য হাঁস পালন (Poultry Firming) বেশ জনপ্রিয় | তবে, বেশি ডিমের জন্য খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস (Campbell duck )পালন করা যেতে পারে | প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক পরিচর্যা করলে এই হাঁস বছরে ৩০০টি ডিম দিতে সক্ষম | এই হাঁস টানা ২-৩ বছর একই হারে ডিম দেয়।সংকরায়ন পদ্ধতিতে উৎপন্ন এটি একটি উন্নত প্রজাতির হাঁস এবং মুরগির চেয়ে এই ব্যবসা খুবই লাভজনক |
ক্যাম্পবেল হাঁসের বাসস্থান(House):
এদের মুরগির মতো ভালো বাসস্থানের প্রয়োজন হয়না | মেঝেতে হাঁস পালন করতে চাইলে প্রতি হাঁসের জন্য ১২০ বৰ্গ সেন্টিমিটার (প্রায় ৪ বৰ্গফুট) জায়গার প্রয়োজন হয়। হাঁসের ঘরের উচ্চতা ১৫০ সেন্টিমিটার বা ৫ ফুট রাখতে হয় | মেঝে স্যাতসেঁতে হলে ঠান্ডা লেগে হাঁসের অসুখ হতে পারে, তাই ঘরের মেঝে পাকা হলে ভালো হয় | সর্বদা মেঝে পরিষ্কার রাখতে হবে | ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে | যেমন, ৩০০ বর্গফুট স্থানের জন্য ১টি ৬০ ওয়াট বাল্বের দরকার | হাঁসের চড়ার জন্য একটু খোলা জায়গা রাখতে হবে |
ক্যাম্পবেল হাঁসের খাদ্য ও খাদ্য প্রদানের নিয়ম(Food):
মুরগির চেয়ে হাঁসের কম খাবারের প্রয়োজন, তাই অনেকেই পোল্ট্রি ব্যাবসায় (Poultry Business) হাঁস পালনে আগ্রহী হচ্ছে | তবে হাঁসকে সঠিক পরিমান ও নিয়ম মেনে খাবার প্রদান করতে হয় | শামুক ও গুগলি হাঁসের প্রিয় খাদ্য, যা তাদের আমিষ জাতীয় খাদ্যের চাহিদা পূরণ করে | হাঁসকে নির্দিষ্ট পাত্রে খাবার দিতে হয় | হাঁসকে সবসময় খাবার ম্যাশ অর্থাৎ নরম করে দিলে তা সহজে খেতে পারে | খাবার পাত্রের পশে সবসময় জলের পাত্র রাখতে হয় কারণ, হাঁস খাবার খেয়েই জল পান করে |
আরও পড়ুন -Shing Fish Farming: পুকুরে লাভজনক শিং মাছ চাষ করে দ্বিগুন উপার্জন করুন
দৈনিক খাবারের হার,
০-৪ সপ্তাহ – দৈনিক ৪ বার।
৪-৮ সপ্তাহ – দৈনিক ৩ বার।
৮ সপ্তাহের উপর – দৈনিক ২ বার।
ক্যাম্পবেল হাঁসের পরিচর্যা:
এই হাঁস উপযুক্ত যত্ন ও পরিচর্যা পেলেই মাত্র সাড়ে ৪ বয়স থেকে ডিম দিতে শুরু করে | লক্ষ রাখতে হবে, পর্যাপ্ত খাবার ও জল যেন থাকে | দিনের আলো ছাড়াও হাঁসের ঘরে যেন ২-৪ ঘন্টা কৃত্রিম আলো থাকে | কারণ, ডিম পাড়ার সাথে আলোর প্রতক্ষ্য বা পরোক্ষ সম্পর্ক রয়েছে | হাঁসের বাচ্চার বয়স ১ মাস হয়ে গেলে ঘরে তাপ দিতে হবে | জলের পাত্রে জলের গভীরতা বাড়িয়ে ১২.৫-১৫.০ সেন্টিমিটার করতে হবে যাতে হাঁস মাথা ডোবাতে পারে।
রোগের লক্ষণ:
সাধারণত, ক্যাম্পবেল হাঁসের রোগ কম | তবে দুটি মারাত্মক রোগ ডাক-প্লেগ ও ডাক-কলেরা হয়ে থাকে | এই রোগ হলে হাঁস ঝিমোয়, চোখ বন্ধ হয়ে যায় | নাক-মুখ দিয়ে জল বেরোতে থাকে | সবুজাভ-সাদা পাতলা মলত্যাগ করতে থাকে এবং ৩-৪ দিনেই হাঁস মারা যায় |
রোগের প্রতিকার:
৩ সপ্তাহ বয়সে বুকের মাংসে ১ ডাক প্লেগ টিকা দিতে হবে | ১৫ দিন পর আবার বুকের মাংসে ডাক প্লেগ টিকা দিতে হবে | ৭০ দিন বয়স হলে কলেরার টিকা দিতে হবে | ১৩০ দিন বয়সে আবার কলেরার টিকা দিতে হবে |
আরও পড়ুন - Star Fruit Cultivation: জেনে নিন ছাদে কামরাঙার চাষ পদ্ধতি