Weather Update: ঝেঁপে নামবে বৃষ্টি! শনিবার থেকেই আবহাওয়ার আমূল পরিবর্তনের পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের “ট্র্যাক্টর কে খিলাড়ি” কৃষকদের 51 হাজার টাকা পর্যন্ত পুরস্কার “মিলিওনেয়ার ফার্মার অফ ইন্ডিয়া অ্যাওয়ার্ডস 2024” এবার জুরির সভাপতিত্বে নীতি আয়োগের সদস্য অধ্যাপক রমেশ চাঁদ
Updated on: 2 August, 2021 2:25 AM IST
Chital Fish (Image Credit - Google)

মিষ্টি জলের নানা প্রজাতির মধ্যে চিতল (Chital Fish Farming) আমাদের এক সবেধন নীলমণির মতো। মূলত নদীর মাছ হলেও আমাদের রাজ্যের পুকুর, খাল ও বিলের প্রকৃতি ও পরিবেশ শুধু যে তার বাসোপযোগী তাই নয়, চাষেরও অমিত সম্ভবনা আছে। কার্প-জাতীয় মাছের সঙ্গে (Carp Fish) পুকুরে মিশ্র চাষ ও এককভাবে চাষও সম্ভব। কিছুটা প্রযুক্তির প্রয়োগ, দক্ষ ব্যবস্থাপনায় আশাতীত উৎপাদন সম্ভব ও এইসাথে।

দ্রুত বর্ধনশীল এই মাছটি পরিণত অবস্থায় দৈর্ঘ্যে এক মিটারের বেশী ও অজনে দশ কেজিরও ঊর্ধ্বে হতে পারে। চিতল ও ফলুই দেখতে অনেকটা একরকম হলেও, চিতল আকারে অনেক বড় হয়, মাথার দিকটা দুপাশ থেকে চ্যাপ্টা ও ওপরের দিকে ধনুকের মতো বাঁকানো। কুঁজ বিশিষ্ট, সারা গায়ে লম্বালম্বি ৮-১০ টি রূপালি দাগ থাকে ও ল্যাজের দিকে ৭-৮ টি গোলাকৃতি কালো ছোপ দাগ থাকে। খসখসে দেহটি খুব ছোট আঁশে ঢাকা, বিস্তৃত পায়ু-পাখ্‌না বড় পুচ্ছ-পাখ্‌না পর্যন্ত বিস্তৃত। এদের পটকা (Swim bladder) অতিরিক্ত শ্বাসযন্ত্রের কাজ করে

স্বভাবে শিকারি – ছোট মাছ, পোকামাকড় পছন্দের খাবার হলেও ফিশমিল-যুক্ত তৈরি করা পরিপূরক খাবার গ্রহণে কোন বাঁধা নেই। বর্ষার আগমনে স্বাভাবিকভাবেই পুকুরে ডিম দিয়ে থাকে। ডিমগুলি গোলাকার ও হলুদ রঙের হয়, খুব আঠালো ডিম, এগুলি সংগ্রহ করতে বিশেষ কিছু ব্যবস্থা অবলম্বন করার দরকার হয়। বর্ষার মরশুমে অমাবস্যা ও পূর্ণিমার রাতে সাধারণত ডিম পাড়ে। স্ত্রী ও পুরুষ মাছ একযোগে ডিম পাহারা দেয়। চাষীরা যে পুকুরে চিতল চাষ করবেন, সেখানে জলের প্রবাহ দিতে পারেন এই সময়ে, এতে ডিমপাড়া ত্বরান্বিত ও সহজভাবে হতে পারে। 

ডিমের পরিমাণ সাধারণত বেশ কম, সাথে ডিম ফুটতে ও লার্ভা বেরোতে সময় লাগে অন্তত দুসপ্তাহ। ডিম দেওয়ার পরেই নার্সারি পুকুরের প্রস্তুত করা যেতে পারে। আগে থেকে বানানো থাকলে জলদূষণ সম্ভবনা বেড়ে যায়, যাতে ডিম ফুটে বাচ্চা বেরিয়ে নষ্ট হয়ে যেতে পারে

এখনও পর্যন্ত মাত্র কয়েকটি জায়গা/ফার্মে চিতলের প্রণোদিত প্রজনন করানো হয় গোনাডোট্রপিন হরমোন প্রয়োগ করে। হরমোন ইনজেকশন প্রয়োগের ১৫-১৬ ঘণ্টা পর এদের ডিম ছাড়া শুরু হয় ও আঠালো ডিমগুলিকে প্রবাহমান ট্যাঙ্কে রাখা হয়। জলের তাপমাত্রা ২৫-২৮সেলসিয়াসের মধ্যে এবং জলের প্রবাহ প্রতি সেকেন্ডে ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার রাখা হয়। লার্ভার পরিমাপ সাধারণত ১ সেমি যা ২০-২২ দিন পড়ে ৩ সেমি মত হয়ে যায়। ডিম ফুটে বেরনোর ৭ দিন পর্যন্ত কুসুমথলি দশা থাকে – এই সময়ে মাথা নিচের দিকে ঝোঁকানো ছাড়া আর কিছু বিশেষ পরিলক্ষিত হয় না। এরপরের অবস্থাটি প্রি-ফ্লেকশন দশা নামে অভিহিত- কুসুমথলি নিঃশেষিত অবস্থা দৈর্ঘ্যে ১২ মিমি, চোখের লেন্স দেখা যায়, মুখ উন্মুক্ত হয়। এই অবস্থায় এরা বাইরে থেকে খাবার নেওয়া শুরু করে ও আরও কয়েকদিনের মধ্যেই পায়ু-পাখ্‌না ও পুচ্ছ-পাখ্‌না আলাদা হয়। এরপর ফ্লেক্সম দশা চলে, ডিম ফোটার পর তিন সপ্তাহ পর্যন্ত – কেটোকর্ড ছোট হয় ক্রমশই, পাখনার রঞ্জিতকরণও শুরু হয়। পোষ্ট-ফ্লেক্সন পর্যায়ে (তিরিশ দিন সময় প্রায়) দ্রুত বৃদ্ধি নজরে পড়ে। আঁশ তৈরি হয় না তখনও – যা হতে আরও পনেরো দিন সময় লাগে। 

জলের তাপমাত্রা, পি.এইচ প্রাণীকনার উপস্থিতির উপর নির্ভর করে এই সময়গুলি কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। এরপরে পুকুরে ছাড়ার সময়ে সাধারণত তিলাপিয়ার ছোট চারা থাকলে এদের শুরুর খাবারের চিন্তা থাকে না। চিতল চাষের পুকুর প্রস্তুতির পরেই দু’ – চারটি ব্রুড তিলাপিয়া ছাড়া থাকলে তিলাপিয়ার সদ্য বাচ্চাগুলি চিতলের খাদ্য সংস্থান করে।

যারা পোনা মাছের সাথে চিতল চাষ করতে ইচ্ছুক, তারা যেন বেশ কিছু সময় আগে পুকুরে পোনা মজুত করেন এবং তা প্রায় দু মাস মতো হলে তবেই কিন্তু চিতল ছাড়তে হবে। অন্ধ্রপ্রদেশে পোনা মাছ চাষীরা তাঁদের পুকুরে দু’-চারটি চিতল ছাড়বেনই এইভাবে। ওঁদের মতে, চিতল পুকুরের পোকামাকড় সাফ করা ছাড়া পোনা মাছগুলিকে মাঝে মাঝেই তাড়া দেবে, ফলে ওরা সারা পুকুর ছুটে বেড়াবে, খাবারও বেশী খাবে এবং পোনার বাড়ও হবে খুব ভালো। চিতল-তিলাপিয়ার যৌথ চাষ বা চিতল-পোনার যৌথ চাষ সঠিক অনুপাতে ও সময়ে ছাড়া হলে চিতলের বাড়বৃদ্ধি ভালো হবে, পরিপূরক খাদ্য গ্রহণ করলে তা আরও ভালো হতে পারে।

আরও পড়ুন - Profitable Sheep Farm - জেনে নিন ভেড়ার প্রজাতি ও লাভজনক পালন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য

মাছ চাষীরা এই মাছের চাষ করে খুব কম সময়েই ভালো পরিমাণ অর্থ উপারজন করতে পারবেন। তবে এই মাছের চাষের প্রসারে চাই উদ্যোগ। বাজারে এই মাছের চাহিদা থাকায় চিতল চাষে চাষীদের আর্থিক উন্নতির সুবিশাল সম্ভবনা রয়েছে।

নিবন্ধে - ড. প্রতাপ মুখোপাধ্যায় এবং ড. অনীশ দাস

আরও পড়ুন - Goatery Farming On Terrace – বাড়ির ছাদেও ছাগল পালন করে আয় করতে পারেন প্রচুর অর্থ

English Summary: Chital fish farming method to increase the economic income of fish farmers, said senior scientist. Pratap Kumar Mukherjee
Published on: 31 July 2021, 04:58 IST

எங்களுக்கு ஆதரவளியுங்கள்!

প্রিয় অনুগ্রাহক, আমাদের পাঠক হওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার মতো পাঠকরা আমাদের কৃষি সাংবাদিকতা অগ্রগমনের অনুপ্রেরণা। গ্রামীণ ভারতের প্রতিটি কোণে কৃষক এবং অন্যান্য সকলের কাছে মানসম্পন্ন কৃষি সংবাদ বিতরণের জন্যে আমাদের আপনার সমর্থন দরকার। আপনার প্রতিটি অবদান আমাদের ভবিষ্যতের জন্য মূল্যবান।

এখনই অবদান রাখুন (Contribute Now)