Weather Update: ঝেঁপে নামবে বৃষ্টি! শনিবার থেকেই আবহাওয়ার আমূল পরিবর্তনের পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের “ট্র্যাক্টর কে খিলাড়ি” কৃষকদের 51 হাজার টাকা পর্যন্ত পুরস্কার “মিলিওনেয়ার ফার্মার অফ ইন্ডিয়া অ্যাওয়ার্ডস 2024” এবার জুরির সভাপতিত্বে নীতি আয়োগের সদস্য অধ্যাপক রমেশ চাঁদ
Updated on: 13 March, 2021 8:47 PM IST
Fish Farming (Image Credit - Google)

মাগুর মাছ হল একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জিওল মাছ। ভারত, পাকিস্তান, চীন, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশে এই মাছটির বিস্তার দেখা যায়। অতিরিক্ত শ্বাসযন্ত্রের উপস্থিতির ফলে এই মাছ জলের বাইরে অনেকক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে এবং বাতাস থেকে সরাসরি অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে। তাই এই ধরণের মাছগুলিকে জিওল মাছ বলা হয়। উপরিউক্ত কারণগুলির জন্য, পুকুরে চাষ করার জন্য মাগুর মাছ (Magur Fish) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রজাতি।

চাষের পদ্ধতি (Farming Procedure) -

সাধারণত দুটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুকুরে মাগুর মাছের চাষ করা হয় -

১) একক ভাবে মাগুর মাছের চাষ।

২) পোনা ও মাগুর মাছের একত্রিত চাষ।

১) এককভাবে মাগুর মাছ চাষঃ

সময়কাল - ৫-৬ মাস।

পর্যায়ক্রমিক কার্যাবলী -

পুকুর নির্বাচন -

২ থেকে ৩ ফুট গভীরতাযুক্ত ছোট অগভীর পুকুরগুলিকে মাগুর মাছ চাষের জন্য আদর্শ বলে বিবেচনা করা হয়। এই মাছ চাষের জন্য পুকুরের আদর্শ আকার ০.০২ থেকে ০.১৩ হেক্টরের মধ্যে হলে ভালো হয়। মজা ও পতিত জলাভূমিতেও এই মাছের চাষ করা সম্ভব।

পুকুরের পাড় তৈরি - পুকুরের পাড়ে ইঁদুরের গর্ত করার প্রবল সম্ভবনা থাকায় পুকুরের পাড় উঁচু ও মোটা করে বাঁধানো দরকার। তাই সব থেকে ভালো উপায় হল, এই সমস্যাগুলির থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এক ফুটের মত উঁচু প্রাচীর পুকুরের পাড়ের ওপর তৈরী করা। তবে এই পদ্ধতিতে প্রাথমিক খরচা বেশী হয়, তাই অনেক সময় জালের বেড়া দিয়েও পুকুরের পাড় ঘিরে দেওয়া হয়।

পুকুর প্রস্তুতি-পদ্ধতিঃ পুকুরের জলজ আগাছা প্রথমে পরিস্কার করে মাটি শুকিয়ে নেওয়া হয়। তারপর অপ্রয়োজনীয় মাছ তুলে ফেলার জন্য পুকুরে মহুয়া-খোল প্রয়োগ করা হয়। মহুয়া খোল প্রয়োগের ৭ দিন পর চুনগোলা জল সমান ভাবে পুকুরে ছড়িয়ে দিতে হবে। চুন প্রয়োগের পরের দিন তলার মাটি ভালো করে নাড়িয়ে দিতে হবে।  এটিকে পুকুরে মাগুর মাছের খাদ্য উৎপাদনের একটি প্রাকৃতিক পদ্ধতি বলে মনে করা হয়। এতেও যদি পুকুরে খাদ্যকণা সঠিক ভাবে প্রস্তুত না হয় তাহলে বিঘা প্রতি ১৫০০-২০০০ কেজি গোবর-সার প্রয়োগ করা দরকার।

পুকুরে চারা মজুত পদ্ধতিঃ

৫০০০-৭০০০ সংখ্যক মাগুর মাছের চারা পুকুরে ছাড়া যেতে পারে। চারাগুলি সুস্থ, সবল এবং ২ ইঞ্চি লম্বা হওয়া দরকার। চারা গুলিকে পুকুরে ছাড়ার আগে অবশ্যই লিটার প্রতি ৮ থেকে ১০ ফোঁটা ফরমালিন যুক্ত জলে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ডুবিয়ে রেখে শোধন করে নিতে হবে।

চুন ও সারের প্রয়োগঃ

মাগুর চাষে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে চুন ও সারের মিশ্রণ প্রয়োগ করা হয়। তাই ১২৫ থেকে ১৫০ কেজি কাঁচা গোবর সার এবং ১০ কেজি চুন প্রয়োগ করতে হবে।

পালিত মাছের পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণঃ

মাসে একবার করে অন্তত মাছের নমুনা সংগ্রহ করে তাদের স্বাস্থ্য ও বৃদ্ধির হার পরিমাপ করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে তাল মিলিয়ে মাছের জন্য প্রয়োজনীয় পরিপূরক খাদ্যের পরিমাণকে বাড়ানো বা কমানো হয়।

মাছের উৎপাদনঃ

মাগুর মাছ সাধারণত ৫-৬ মাসে বিক্রয় উপযোগী হয়, যখন এটি বিঘা প্রতি ৫৫০ থেকে ৭৫০ কেজি মত উৎপাদনের ক্ষমতা রাখে।

পরিপূরক খাদ্যের প্রয়োজনীয়তাঃ

মাগুর মাছের চাষের ক্ষেত্রে পরিপূরক খাদ্যের প্রয়োগ ও ব্যবহার খুব গুরুত্বপূর্ণ, যা মাগুর মাছের চারা পুকুরে ছাড়ার পরের দিন থেকে সরবরাহ করার প্রয়োজন পড়ে। পরিপূরক খাদ্য হিসেবে সাধারণত চালের গুঁড়ো, সরষে খোল এবং মাছের গুঁড়ো এই তিনটি উপাদানকে ১:১:১ করে মিশিয়ে পুকুরে পরিবেশন করা হয়। প্রতিদিন পরিপূরক খাদ্য সাধারণত মাছের দৈহিক ওজনের ৩-৫ শতাংশ হারে দেওয়া হয়।

২) পোনা ও মাগুর মাছ চাষের একত্রীকরণঃ

কিছু কিছু পুকুরে মাগুর ও পোনা মাছের চাষ একত্রিত ভাবেও করা সম্ভব। এক্ষেত্রে পুকুরের নিচের স্তরে দ্বিগুণ সম্ভব মাছ ছাড়া হয়। সেই জন্য পুকুরের নীচের স্তরে বসবাসকারী মাছ যেমন, মৃগেল ও সিপ্রিনাস কার্পের সংখ্যাকে কমিয়ে দিয়ে মাগুরের চারার সংখ্যা বাড়ানো হয়।

চারার মাপঃ চারা গুলি কমপক্ষে ৫ সেমি. লম্বা হওয়া দরকার।

খাবারের জোগানঃ

আলাদা করে কোনো খাবার দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না, পোনা মাছের খাবারই এরা খায়।

মাগুর চারা মজুতের হারঃ

পুকুরের নীচের স্তর বাদ দিয়ে ৬০০ থেকে ৭০০ মাগুর চারা বিঘা প্রতি মজুদ করা হয়।

আরও পড়ুন - উপযুক্ত রোগ বালাইয়ের ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পুকুরে পাঙ্গাস মাছ চাষের কৌশল

উপসংহারঃ

পুকুরে মাগুর মাছের চাষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং লাভদায়ক একটি ব্যবসা। কিন্তু পুকুরে এই মাছের চাষের সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার মাথায় রাখা দরকার, না হলে লাভের পরিবর্তে ব্যবসায়ীর ক্ষতির সম্ভবনা বেশী থাকে। জলের উষ্ণতা অনেক তাড়াতাড়ি বাড়ে, যদি পুকুরে জলের গভীরতা কম থাকে। যেহেতু মাগুর মাছ চাষের পুকুরে জলের গভীরতা ১ মিটার রাখলে উষ্ণতা ৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে থাকে, তাই পুকুরে জলের গভীরতা এই পরিমাণ বজায় রাখা খুবই দরকারী। এছাড়াও  জলে শ্যাওলার আধিক্য হলে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন কমে যায় এবং জলের স্বচ্ছতা হ্রাস পায়। তাই এই সমস্যার প্রতিকার করার জন্য, জলে পরিপূরক খাদ্যের সরবরাহ বন্ধ রাখতে হবে এবং জল বদলাতে হবে মাঝে মাঝে। এই ধরণের সতর্কতাগুলির কথা মাথায় রেখে, যদি আমরা পুকুরে মাগুর মাছ চাষ করতে পারি, তবে প্রভূত লাভের সম্ভবনা আছে।

আরও পড়ুন - মাছ চাষে কিভাবে অধিক অর্থ উপার্জন করবেন? পরামর্শ দিচ্ছেন হলদিয়ার মৎস্য সম্প্রসারণ আধিকারিক সুমন কুমার সাহু

English Summary: Earn extra money by cultivating Magur fish profitably in the pond
Published on: 13 March 2021, 08:47 IST

எங்களுக்கு ஆதரவளியுங்கள்!

প্রিয় অনুগ্রাহক, আমাদের পাঠক হওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার মতো পাঠকরা আমাদের কৃষি সাংবাদিকতা অগ্রগমনের অনুপ্রেরণা। গ্রামীণ ভারতের প্রতিটি কোণে কৃষক এবং অন্যান্য সকলের কাছে মানসম্পন্ন কৃষি সংবাদ বিতরণের জন্যে আমাদের আপনার সমর্থন দরকার। আপনার প্রতিটি অবদান আমাদের ভবিষ্যতের জন্য মূল্যবান।

এখনই অবদান রাখুন (Contribute Now)