ছাগল পশ্চিমবঙ্গের অতি গুরুত্বপূর্ণ পশু সম্পদ। ছাগল আমদের দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস। উল্লেখ্য যে, এ রাজ্যের ছাগলের অধিকাংশই ব্ল্যাক বেঙ্গল প্রজাতির। বাংলার কালো ছাগল প্রজাতির নাম হলেও কালো রঙ ছাড়া বাদামী এবং সাদা রঙের প্রজাতির ছাগল কম সংখ্যায় দেখা যায়।
ছাগল পশ্চিমবঙ্গের অতি গুরুত্বপূর্ণ পশু সম্পদ। ছাগল আমদের দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস। উল্লেখ্য যে, এ রাজ্যের ছাগলের অধিকাংশই ব্ল্যাক বেঙ্গল প্রজাতির। বাংলার কালো ছাগল প্রজাতির নাম হলেও কালো রঙ ছাড়া বাদামী এবং সাদা রঙের প্রজাতির ছাগল কম সংখ্যায় দেখা যায়।
ছাগল পালনের সুবিধাদি (Goat rearing facilities) –
-
ছোট প্রাণীর খোরাক তুলনামূলকভাবে অনেক কম, পালনের জন্য অল্প জায়গা লাগে এবং মূলধনও সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের মধ্যে থাকে।
-
গবাদি পশুর তুলনায় ছাগলের রোগ বালাই কম।
-
তুলনামূলক কম সময়ে অধিক সংখ্যক বাচ্চা পাওয়া যায়। বছরে দু’বার বাচ্চা প্রসব করে এবং প্রতিবারে গড়ে ২-৩ টি বাচ্চা হয়ে থাকে।
-
দেশে ও বিদেশে ব্ল্যাক ছাগলের চামড়া, মাংস ও দুধের বিপুল চাহিদা আছে।
-
ছাগলের দুধ যক্ষ্মা ও হাঁপানি রোগ প্রতিরোধক হিসাবে জনশ্রুতি রয়েছে এবং এজন্য এদের দুধের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।
-
ছাগল ভূমিহীন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষীদের অতিরিক্ত আয়ের উৎস হিসাবে বিবাচিত হয়।
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বৈশিষ্ট্য –
-
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বক্ষস্থল চওড়া, কান কিছুটা উপরের দিকে ও শিং ছোট থেকে মাঝারি আকৃতির হয়ে থাকে। দেহের গড়ন আঁটসাঁট, পা অপেক্ষাকৃত খাটো এবং লোম মসৃণ হয়।
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালনের সুবিধা (Benefits of keeping Black Bengal goats) –
-
সাধারণত ১২-১৫ মাস বয়সে প্রথম বাচ্চা দেয়। একটি ছাগী বছরে দু’বার বাচ্চা প্রসব করলেও উপযুক্ত ব্যবস্থাপনায় একটি ছাগী থেকে ২-৮ টি পর্যন্ত বাচ্চা পাওয়া যেতে পারে।
-
২০ কেজি দৈহিক ওজন সম্পন্ন একটি ছাগী থেকে কমপক্ষে ১১ কেজি খাওয়ার যোগ্য মাংস এবং ১-১.৪ কেজি ওজনের অতি উন্নতমানের চামড়া পাওয়া যায়। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের চামড়া একটি অতি মূল্যবান উপজাত।
-
সেমি-ইন্টেনসিভ পদ্ধতিতে ২৫ টি ছাগীর খামার থেকে প্রথম বছরে ৫০,০০০ টাকা, দ্বিতীয় বছরে ৭৫,০০০ টাকা এবং তৃতীয় বছরে ১,০০০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।
বাংলার কালো ছাগল ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিবেচ্য গুণাবলী –
পাঁঠার ক্ষেত্রে –
-
পাঁঠার বয়স ১২ মাসের মধ্যে হতে হবে, অণ্ডকোষের আকার বড় এবং সুগঠিত হতে হবে।
-
পিছনের পা সুঠাম ও শক্তিশালী হতে হবে।
পাঁঠার মা, দাদী বা নানীর বিস্তারিত তথ্যাদি (অর্থাৎ তারা বছরে দু’বার বাচ্চা দিত কিনা, প্রতিবারে একটির বেশীর বাচ্চা হত কিনা, দুধ উৎপাদনের পরিমাণ ইত্যাদি গুণাবলী) সন্তোষজনক বিবেচিত হলেই ক্রয়ের ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
ছাগীর ক্ষেত্রে –
-
নির্বাচিত ছাগী হবে অধিক উৎপাদনশীল বংশের ও আকারে বড়।
-
নয় বা বারো মাস বয়সের ছাগী (গর্ভবতী হলেও কোন সমস্যা নেই) কিনতে হবে।
-
ছাগীর পেট তুলনামূলকভাবে বড়, পাঁজরের হাড় চওড়া, প্রসারিত ও দুই হাড়ের মাঝখানে কমপক্ষে এক আঙ্গুল ফাঁকা জায়গা থাকতে হবে।
-
নির্বাচিত ছাগীর ওলান সুগঠিত ও বাঁট সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়াদি –
গ্রহণযোগ্য ছাগল অবশ্যই সকল ধরণের সংক্রামক ব্যাধি, চর্মরোগ, চক্ষুরোগ, যৌনরোগ ও বংশগত রোগমুক্ত হতে হবে। পিপিআর খুবই মারাত্মক রোগ হওয়ায় কোন এলাকা থেকে ছাগল সংগ্রহ করার আগে উক্ত এলাকায় পিপিআর রোগ ছিল কিনা, তা জানতে হবে। উক্ত এলাকা কমপক্ষে ৪ মাস আগে থেকে পিপিআর মুক্ত থাকলে তবেই সেখান থেকে ছাগল সংগ্রহ করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন - তিলাপিয়া মাছ চাষে কৃষক আয় করছেন ৭ লক্ষ টাকা (Profitable Tilapia Farming)
Share your comments