মাছ চাষের ক্ষেত্রে বড় দুটি সমস্যা হলো মড়ক ও পুকুরে বিষ ঢেলে মাছ মেরে ফেলার মতো প্রতিহিংসা মূলক কাজ। পুকুরে যখন মাছ মরতে দেখা যায় তার অনেক আগে থেকেই তার মৃত্যুর কারণ ঘটে থাকে। আমরা যখন দেখতে পাই তখন প্রায় মড়ক আকার ধারণ করার পর। মাছের মৃত্যু বা মড়ক নানা কারণে হয়ে থাকে।
যে কারনে মাছের মৃত্যু হয়
-
ভৌত কারণ
-
রাসায়নিক কারণ
-
জৈবিক কারণ
ভৌত কারণ
জলের তাপমাত্রা বৃদ্ধিজনিত কারণে দেশে, বিশেষ করে গ্রীষ্মপ্রধান দেশে, গ্রীষ্মের প্রখর তাপের সময় জলাশয়ে জল কমে যায়। ফলে জলের তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে অনেক সময় মাছের মৃত্যু ঘটে। কাতলা বা উপরি স্তরের মাছ আগে আক্রান্ত হয়। অগভীর জাতীয় জলাশয়ে মাছ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। জলের তাপমাত্রা খুব কমে গেলেও মাছের মৃত্যু হতে পারে।
রাসায়নিক কারণ
জলাশয়ে অত্যাধিক শ্যাওলা বা ছোট ছোট উদ্ভিদ থাকলে তাদের শ্বাসক্রিয়ার জন্য প্রচুর অক্সিজেন লাগে। কিন্তু রাত্রে সূর্যের আলোর অভাবে গাছের সালোকসংশ্লেষ না হওয়ার কারণে বিশেষ করে সকালের দিকে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়।
জৈবিক কারণ
মৎস্যভুক মাছের পেটে বহু মাছ মারা পড়ে - কিছু কিছু মাছ আছে যারা মাংসাশী। তারা জলের জুপ্ল্যাঙ্কটন খেয়ে জীবন ধারণ করলেও জলজ প্রাণী এবং তাদের তুলনায় ছোট মাছ তাদের ভীষণ পছন্দের খাবার। এই সব মাছ জলাশয়ে থাকলে অন্য মাছের শরীর ভালো বৃদ্ধি হয়। কারণ মৎস্যভুক তাড়া খেয়ে এরা ছোটাছুটি করে। ফলে এদের ব্যায়াম হয়। শরীর সুস্থ থাকে ও বাড়বৃদ্ধি হয়। কিন্তু সংখ্যা খুবই সীমিত ভালো বা ভালো নয়। যেমন — চিতল, বোয়াল, পাঙাস, হাইব্রিড মাগুর, তেলাপিয়া, ভেটকি ইত্যাদি।
আরও পড়ুনঃ জেনে নিন কচু চাষের পদ্ধতি, আয় করুন প্রচুর
এখন গবেষকরা বলছেন, কিছু পদক্ষেপ নিলেই এসব অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা থেকে মুক্তির সুযোগ রয়েছে।
১) পুকুরের চারপাশে মিহি জাল দিয়ে বেড়া দিন (নেটিং), এটা সব চাইতে নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতি, এতে করে বাহির থেকে উদ, সাপ ও ব্যাঙ পুকুরে প্রবেশ করে পুকুরের পোনা ও মাছ খেতে পারবেনা।
২) আশপাশের জঞ্জাল, আবর্জনা নিয়মিত সাফসাফাই করুন। পুকুরের চারপাশে ও বাগানে আগাছা জমতে দেবেন না। তবে পুকুরের পাড় গুলোতে সবজি বা পেপের বাগান করলে লাভবান হবেন ।
আরও পড়ুনঃ জেনে নিন রুই কাতলা ও মৃগেল মাছ চাষের সঠিক পদ্ধতি
পুকুরকে ঘিরে আরও কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে
১) সিসিটিভি ক্যামেরা সংযোজন করা।
২) পুকুরে বা খামার এলাকায় ছোট টং ঘর তৈরি করে রাতের বেলায় আলো রাখা ।
৩) সুযোগ থাকলে সার্বক্ষণিক পাহারার আয়োজন করা ।