মৌমাছির জীবন চক্র

মৌমাছির জীবনচক্র সম্পর্কে জানা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত যদি আপনি মৌমাছি চাষের ব্যবসা শুরু করতে ইচ্ছুক হন...

Saikat Majumder
Saikat Majumder
মৌমাছি। Photo Credit: AAleMA ciencias

কৃষিজাগরন ডেস্কঃ মৌমাছির জীবনচক্র সম্পর্কে জানা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত যদি আপনি মৌমাছি চাষের ব্যবসা শুরু করতে ইচ্ছুক হন। মৌমাছি একটি মূল্যবান পতঙ্গ। এদের জীবনচক্র চার ধাপের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। এই পদক্ষেপগুলি হল ডিম, লার্ভা, গুটি এবং প্রাপ্তবয়স্ক কাল।

মৌমাছিদের জীবনচক্রের ইতিহাস অনুযায়ী, প্রতিটি মৌচাকের মধ্যে একটি রানী মৌমাছি, কয়েকটি পুরুষ মৌমাছি এবং বাকি কর্মী থাকে। একটি মৌমাছি জীবন চক্র শুরু করার আগে প্রজনন সময়ের সময়, রাণী মৌমাছি আকাশে উড়ে। উড়ন্ত অবস্থায় সেটি একটি পুরুষ মৌমাছির সাথে মিলন করে।

রানী মৌমাছি তার ডানা ছড়িয়ে  ক্রমাগত উড়ে যায়, প্রায় সব পুরুষ মৌমাছি রাণী মৌমাছির পিছনে উড়তে থাকে। এই ধরনের উড়ান কে নাপিতাল উড়ান বলা হয়। উড়ন্ত অবস্থায় রানি মৌমাছি প্রথম যে পুরুষ মৌমাছির সাথে মিলন করে, তার পরে সেটি মারা যায়।

এরপর স্ত্রী মৌমাছি আরো অনেক পুরুষ মৌমাছির সাথে মিলন করে এবং শুক্রাণু সংগ্রহ করে স্পারমা্‌থেকা তে জমা করে। এরপরে সে মৌচাকে ফিরে আসে এবং ১-২ দিনের মধ্যে ডিম পাড়ে। মৌমাছির জীবনচক্রের প্রথম ধাপ ডিম থেকে শুরু হয়।

আরও পড়ুনঃ থাকার জন্য এসি রুম, ডায়েটে ড্রাই ফ্রুটস, ১০ কোটি টাকার এই মহিষ এসেছে পাটনার কৃষক মেলায়

ডিম

একটি রানী মৌমাছি দিনে প্রায় ৩০০-১০০০ টা ডিম পাড়ে। বেশিরভাগ ডিমই ফলপ্রসূ হয় বাকিগুলি ফলপ্রসূ হয় না। ডিমগুলি ক্ষুদ্র এবং সামান্য গোলাপী বা সাদা রঙের হয়। ডিমগুলি লম্বাটে এবং নলাকৃতির আকারের হয়। রানি মৌমাছি কিছু ডিমকে ফলন্ত করে না। ওইসব অফলা ডিম থেকে পুরুষ মৌমাছি বেরোয় এবং স্ত্রী মৌমাছি তাদের শ্রমিক মৌমাছির চেম্বারে রেখে দেয়।

মৌমাছির লার্ভা

শুককীট

অনুকূল পরিবেশে শুককীট ৩-৪ দিনের মধ্যে ডিম থেকে আসে। এগুলো ক্ষুদ্র হয় এবং এদের কোন চোখ, পা এবং পাখনা নেই। এদেরকে শুককীট বলা হয়। ডিম থেকে বেরিয়ে আসার পর তারা খাবার খেতে শুরু করে। কিন্তু তারা নিজেরাই খাবার গ্রহণ করে না, শ্রমিক মৌমাছিরা তাদের খাবার খাওয়ায়। তরুণ কর্মী মৌমাছি (যাকে নার্স মৌমাছিও বলা হয়) শুককীটকে রয়্যাল জেলি খাওয়ায় যা নার্স মৌমাছির হাইপোফারেনজিয়াল এবং চোয়ালের গ্রন্থি থেকে উৎপন্ন হয়। এরপরে তারা শুককীট গুলোকে একধরনের পাউরুটি খাওয়ায়, যাকে মধু পাউরুটি বলা হয়। রানি মৌমাছির শুককীটই শুধুমাত্র সারা জীবন ধরে রয়্যাল জেলি খায়।

আরও পড়ুনঃ পুকুর পাড়েই তৈরী করা যেতে পারে মাছের বিভিন্ন প্রাকৃতিক খাবার

একটি নার্স মৌমাছি একটি শুককীটকে একবার খাওয়াতে প্রায় ২১ মিনিট নেয়। শুককীটের রয়্যাল জেলি গ্রহণ করার আলাদা আলাদা তালিকা আছে,- ফলন্ত ডিমের শুককীটদের জন্য ২৫ মিলিগ্রাম, অফলা ডিমের জন্য ১০.৫ মিলিগ্রাম এবং রানি মৌমাছির শুককীটের জন্য ৩২৫ মিলিগ্রাম। প্রত্যেকটি শুককীট ৭ দিন ধরে রয়্যাল জেলি খায়। এই সময় এরা খোলস ছাড়ায় এবং আকারে বড় হয়। ৬-৭ দিন পরে এরা গুটিতে পরিণত হয় এবং খাওয়া বন্ধ করে দেয়।

মৌমাছির গুটি

গুটি

চেম্বারের ভেতরে শুককীটের জীবনকে গুটি বলা হয়। তারা বন্ধ চেম্বারের মধ্যে থাকে। গুটির মুখ থেকে যদি তরল পদার্থ বেরোয় তবে তা অসম্পূর্ণ গুটি হয়। রানি মৌমাছির গুটির সময় হল ৭-৮ দিন, শ্রমিক মৌমাছির ১২-১৩ দিন, আর পুরুষ মৌমাছির ১৪-১৫ দিন। এই সময় গুটির শরীরে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। পাখা, পা, চোখ এবং শরীরের অন্যান্য অংশের এই সময় বৃদ্ধি হয়। এই সময় গুটি পূর্ণাঙ্গ পতঙ্গের আকার ধারণ করে। 

প্রাপ্তবয়স্ক কাল

গুটি প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে মৌমাছিতে পরিণত হয়। গুটিপোকা থেকে প্রাপ্তবয়স্ক হতে মৌমাছির সময় লাগে ২০ দিন। রানি মৌমাছি ৩-৪ বছর, পুরুষ মৌমাছি ১-৩ বছর, আর শ্রমিক মৌমাছি ২-৩ মাস বেচে থাকে।

কীটনাশকের ন্যায়সঙ্গত ব্যবহার

ফসলে কীটনাশক স্প্রে করতে হবে এমন সময়ে যখন সঠিক ফসল পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। উৎপাদনের অর্থনৈতিক ক্ষতির মাত্রার উপর নির্ভর করে, খুব তাড়াতাড়ি বা খুব দেরিতে স্প্রে করা সম্পূর্ণ সুবিধা প্রদান করে না। যতটা সম্ভব, ফুল ফোটার সময় ফলের গাছ বা ফসলে স্প্রে না করার চেষ্টা করা উচিত। যদি এমন পরিস্থিতিতে স্প্রে করতে হয় তবে কীটনাশক সঠিকভাবে নির্বাচন করতে হবে এবং নিরাপদ সময়ে সুপারিশকৃত পরিমাণে স্প্রে করতে হবে। কীটনাশক নির্বাচন: মশার প্রতি তাদের বিষাক্ততা অনুযায়ী কীটনাশকের তালিকা নিম্নে দেওয়া হল:

(ক) কার্টপ হাইড্রোক্লোরাইড,ক্লোরপাইরিফস, আজিনোফস,কার্বোফুরান,ডাইমেথিওনেট,ফেমসালফোথিয়ন, ম্যালাথিয়ন

ফুল আসার সময় কখনই স্প্রে করা উচিত নয়।

(খ) কার্বো ফেনেথিয়ন, ডাইসস্টোন, ফোসালোন, সাইপারমেথিন,পারমেডিন, ডেল্টামেডিন, থিওমেথক্সাম

 

সন্ধ্যা এবং সকালে স্প্রে করা যেতে পারে।

 

(গ) নিকোটিন সালফেট, পাইরেথ্রাম, রোটেনোন রানিয়া, আজাডিরাকটিন প্রোফেনোফস, ইমিডাক্লোপিড, পলুবেনডিয়ামাইড, ক্লোরেন্ট্রানিলিপল, টেডানিলিপল

 

দিনের বেলা স্প্রে করা যেতে পারে।

 

ভারতে পরিচালিত কিছু পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে, এন্ডোসালফান, মেনাজোন, ফরমিডিয়ান, ফোসালিন। পাইরেথ্রাম, নিকোটিন সালফেট, আজাদিরাকটিন ইত্যাদি কীটনাশক তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। কীটনাশকের ফর্মটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। দ্রবণীয় এবং দানাদার পদার্থ বেশি উপযোগী।

Published On: 31 January 2019, 04:13 PM English Summary: Life cycle of honey bee

Like this article?

Hey! I am Saikat Majumder. Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters