বর্তমানে, করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় দফার সংক্রমণ দেশে অনিয়ন্ত্রিত গতিতে বেড়ে চলেছে, যা কৃষি ক্ষেত্রকেও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে। ফসল চাষ, পরিচর্যা এবং যাবতীয় কৃষি কর্মসহ ফসল সংগ্রহ কৃষিকার্যের সকল ক্ষেত্রকেই প্রভাবিত করছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস। এর ফলে , কৃষক এবং অন্যান্য কৃষি কার্যক্রমে জড়িতদের জন্য এক গুরুতর সংকটজনক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
দেশে লকডাউনের কারণে যেন থমকে রয়েছে জনজীবন। কৃষকদের এবং শ্রমিকদের যাতে কোন অসুবিধা না হয়, সেদিকে সরকারের সতর্ক দৃষ্টি থাকলেও লকডাউনের কারণে পরিবহন ব্যবস্থা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস না মেলায় ফসল বিক্রি করতে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন তারা। বেশীরভাগ কৃষকের ক্ষেতের ফসল রয়ে গেছে ক্ষেতেই, তা আর বাজারে পাঠানো সম্ভবপর হয়ে ওঠেনি। আর বাজারে ফসল এলেও নির্ধারিত সময় বাজার খোলা থাকায় সমস্ত কিছু বিক্রি করা সম্ভবপর হয়ে উঠছে না। ফলে এই সকল দিক থেকেই ক্ষতি হয়ে চলেছে দেশের কৃষি খাতের, বলা চলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দেশের কৃষকবন্ধুরাই।
তবুও দেশের ডাক্তারদের মতোই সমস্ত কৃষক ভাইরাও যোদ্ধাদের মতোই করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। দেশের সমস্ত কৃষক ভাইদের কঠোর পরিশ্রমের ফলস্বরূপ, দেশে লকডাউন থাকলেও খাদ্যশস্য উৎপাদনে কোনও প্রভাব পড়েনি। ২০১৯-২০ সালে কৃষি খাতের অর্থনৈতিক পর্যালোচনা অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ সালে ২৮৫.২১ মিলিয়ন টনের তুলনায় দেশটি ২৯৬.৬৫ মিলিয়ন টন খাদ্যশস্য উৎপাদন করেছে। বর্তমান গণনা অনুযায়ী আরও ১১.৪৪ মিলিয়ন টন খাদ্যশস্য উতপাদিত হয়েছে।
কৃষিকাজের কথা উল্লেখ করতে হলে বলতেই হয় যে, কৃষির দৃষ্টিকোণ থেকে মে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাস। এই মাসে, একদিকে যেখানে কৃষকরা ফসল সংরক্ষণ করে, অন্যদিকে তখন প্রধান খরিফ মৌসমের ফসল ধান চাষের জন্য সকলে প্রস্তুত হয়। তবে, কৃষক ভাইরা করোনার কারণে খামারের বিভিন্ন সরঞ্জামের ঘাটতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
করোনা সংকটের মধ্যে কৃষকদের জন্য একটি সুখবর রয়েহে। বস্তুত, আবহাওয়াবিভাগের হিসেবে এ বছর দেশে বর্ষা স্বাভাবিক থাকবে এবং সময়মতো রাজ্যে তার আগমন ঘটবে। সুতরাং, কৃষক ভাইদের ফসল বপনের জন্য ক্ষেত অবশ্যই প্রস্তুত করা উচিৎ।
আরও পড়ুন - নারী কৃষির অগ্রদূত, ভারতের কৃষিতে মেরুদন্ডই নারী
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষ ছাড়াও কৃষক ভাইদের যে কোনও ফসল বপনের আগে বীজ চিকিৎসা করে নিতে হবে। ভালো ফলনের প্রত্যাশা করলে প্রত্যয়িত বীজ বপন করুন। মনে রাখবেন, ফসলে রাসায়নিক সার ব্যবহারের সঠিক পরিমাণ নির্ধারণে সহায়তার জন্য মাটি পরীক্ষা করানো কিন্তু আবশ্যক। অনুর্বর, অম্লীয় জমি উন্নত করার জন্য সঠিক উপায় অবলম্বন করতে অবশ্যই কৃষি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
আরও পড়ুন - কৃষিক্ষেত্রে উন্নতির লক্ষ্যে সরকারের নয়া পদক্ষেপ 'সাব মিশন অন এগ্রিকালচারাল মেকানাইজেশন প্রকল্প