ভারত কৃষিপ্রধান দেশ। এখানে বেশীরভাগ মানুষেরই প্রধান জীবিকা কৃষিনির্ভর। কৃষিতে শস্যের ফলনে জলবায়ু এবং আবহাওয়া সুগভীর প্রভাব রাখে। একদিকে করোনা আবহে লকডাউন, অন্যদিকে টাউকটে, ইয়াশ একের পর এক সাইক্লোন, ফলতই কৃষকরা আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা রাজ্যে সাইক্লোন ‘ইয়াশ’ –এর বিধ্বংসী তান্ডবে শতাধিক বাঁধ ভেঙ্গে পড়েছে। জমিতে জল ঢুকে নষ্ট হয়ে গেছে জমির ফসল। মাথায় হাত পড়েছে কৃষকদের, যদিও সরকার থেকে পাওয়া গেছে আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি রাজ্যের ‘কৃষকবন্ধু প্রকল্প’-এর আওতায়। তৎসত্ত্বেও আদৌ কতটা পূরণীয় এ ক্ষতি – প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে।
সকল দুর্যোগের মধ্যেও কৃষকদের জন্য আশার আলো এই যে, আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই রাজ্যে প্রবেশ করেছে দক্ষিণ পশ্চিম বর্ষা। সময়ের আগে বর্ষার অনুপ্রবেশ ঘটলেও এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হতে চলেছে, যার ফলে কৃষিতে ফসলের উন্নত ফলন কৃষকরা আশা করতেই পারেন। আগত খরিফ মরসুমে প্রধান অর্থকরী ফসল ধান, জোয়ার, বাজরা, সয়াবিন, আখ, ডাল ইত্যাদি চাষের সাথে সাথে কৃষকভাইরা অপ্রচলিত সবজীর চাষও করতে পারেন অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের জন্য।
কৃষকদের জন্য আরও একটি সুখবর এই যে, এ বছর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের উদ্যোগে খরিফ ধান সংগ্রহ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১৩ লাখ কৃষক সংশ্লিষ্ট সংস্থা কর্তৃক অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। বলা হয়েছে যে, প্রায় ৭২ লক্ষ ধান চাষী এই প্রকল্পে নিবন্ধিত হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে যে, তারা এই প্রকল্পের আওতায় যতটা সম্ভব কৃষকের কাছে পৌঁছানোর পরিকল্পনা করছে। সরকার প্রতিটি কৃষকের কাছ থেকে প্রায় ৪৫ কুইন্টাল ধান ক্রয় করবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনও ধানের দাম নির্ধারণ করতে পারেনি। এই প্রকল্পের আওতায় পিডিএসে চাল সরবরাহ অক্ষুণ্ণ থাকবে। এই স্কিমটি ডিসেম্বর মাসে চালু হবে।
পরিশেষে বলা যায়, লকডাউনের সময়েও, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির মধ্যেও কৃষকরা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন আমাদের অন্নের যাতে অভাব না হয় তার জন্য। সুতরাং, আমাদের সকলের উচিৎ যে কোন পরিস্থিতিতে তাদের পাশে সাধ্যমতো থাকা। কৃষি জাগরণ সকল কৃষকবন্ধুকে বিশ্ব খাদ্য সুরক্ষা দিবসের শুভেচ্ছা জানায়।
আরও পড়ুন - Soil Test - ফসলে ভালো ফলন পেতে হলে কৃষকবন্ধুরা অবশ্যই মাটি পরীক্ষা করান