হলুদের বহুপ্রকার গুণাগুণ যা থেকে আমরা রোজই রোগ প্রতিরোধ থেকে উপকৃত হতে পারি। হলুদ মূলত গাছের কন্দমূল থেকে সংগৃহীত হয়ে থাকে। ভারতসহ গোটা দুনিয়ায় হলুদের ব্যবহার হয়ে থাকে নানারকম ভাবে। রান্নার পাশাপাশি স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও হলুদের ব্যবহার হয় বিপুল পরিমাণে। হলুদের ক্রীম বা হলুদ বাটা সৌন্দর্য চর্চায় ব্যবহার হয়। হলুদ ব্যবহারে খাবারের পচনশীলতা কমে।
প্রাচীন ভারতের সময়কাল থেকে হলুদ একদিকে যেমন আয়ুর্বেদিক ঔষধ হিসাবে পরিচিত তেমনি অন্যদিকে পরিচিত মশলা হিসাবে এর কার্যকারিতা অপরিসীম। বেশিরভাগ বাঙালি রান্নায় হলুদ (Turmeric Powder) তরকারিতে না দিলে এর স্বাদ, গন্ধ, রং পাওয়া যায় না।
কথিত আছে মিশরের রাণী ক্লিওপেট্রা তার সৌন্দর্য চর্চায় হলুদ ব্যবহার করতেন। মশলা হিসেবে ব্যবহার ছাড়াও হলুদ নানাবিধ প্রসাধন সামগ্রী ও রং শিল্পে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয়। ভেষজ চিকিৎসায় এর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। খাদ্য হিসেবেও এটি বেশ উপকারী। এতে প্রচুর পুষ্টিমাণ রয়েছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী দেশে হলুদের উৎপাদন অনেক কম।
ভেষজগুণ -
-
পাকস্থলীর গ্যাস নিবারণ করে;
-
মূত্রনালীর রোগ নিবারণ করে থাকে;
-
ক্ষত শুকাতে সহায়তা করেথাকে;
-
ব্যাথা নিবারণে ব্যবহৃত হয়।
হলুদের ব্যবহার (Health Benefits) -
হলুদ খাবারের রং কে যেমন বাড়ায় তেমনি খাবারের স্বাদও বাড়ায়। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান যেমন- গায়ে হলুদ, বিয়ে, পূজা ইত্যাদিতে হলুদের ব্যবহার লক্ষণীয়। হলুদের ক্রীম বা হলুদ বাটা সৌন্দর্য চর্চায় ব্যবহার হয়। হলুদ ব্যবহারে খাবারের পচনশীলতা কমে। দেশের চাকমা, মারমা, তংচঙ্গা প্রভৃতি উপজাতি গোষ্টি সবজি হিসেবে হলুদের ফুল রান্না করে খায়। প্রাকৃতিক রঙ হিসেবে আইসক্রিম, দই, কাস্টার্ড, ইয়োগার্ট, পানীয় জুস, কেক, বিস্কুটে হলুদ ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুন - জানুন গাঁদাল বা গন্ধভাদালির অব্যর্থ উপকারিতা (Health Benefits Of Rubiaceae)
হলুদের উপকারিতা –
হলুদে নানাবিধ উপকারিতা আছে। এর মধ্যে বিভিন্ন ভিটামিন থাকে। হলুদে আছে প্রোটিন, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, কপার, ম্যাগনেশিয়াম ও জিংকের মত পুষ্টিকর উপাদান সমূহ। যার ব্যবহারে আমাদের শরীর নানাভাবে উপকৃত হয়ে থাকে। বিশেষ করে ত্বকের ক্ষেত্রে হলুদের ব্যবহার খুবই কার্যকারী। কাঁচা হলুদের ব্যবহার সবচেয়ে উপকারি। পেটের সমস্যা হোক বা ত্বকের সমস্যা উভয়ক্ষেত্রে কাঁচা হলুদ ভীষন ফলদায়ক। নিদ্রাজনিত সমস্যা থেকে সমাধানের পথ পেতে পারেন হলুদের নানাপ্রকার ব্যবহারের মাধ্যমে।
১) ত্বকের বলিরেখা রোদে পোড়া দাগ, ব্রনর দাগ ইত্যাদি থেকে মুক্তির সহজ উপায় হল হলুদের পেস্ট রোজ ব্যবহার করা। হলুদের ক্রীম বা হলুদ বাটা সৌন্দর্য চর্চায় ব্যবহার হয়।
২) অ্যালার্জী থেকে বাঁচতে হলুদের ব্যবহার হয়ে থাকে।
৩) রোজ সকালে একটা গোটা কাঁচা হলুদ, মধু বা গুড়ের সাথে খাওয়া অভ্যাস করুন। পেটের সমস্যা, ত্বকের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল ও মসৃণ।
৪) ওজন কমাতে এটি কাঁচা খেতে পারেন। ওজন কমার সাথে সাথে শরীর রোগমুক্ত হয়ে উঠবে সহজে, আর দাঁত থাকবে ভালো।
৫) প্রচন্ড ঠান্ডা লাগা থেকে হলুদ আপনাকে বাঁচাতে পারে। কফ্ বা সর্দি হলে এক গ্লাস দুধে হলুদ মিশিয়ে পান করুন, জলদি ভালো হয়ে যাবেন।
৬) রোজ রাতে এক গ্লাস হলুদ মিশ্রিত দুধ পান করুন। যাদের নিদ্রা-জনিত সমস্যা রয়েছে, তারা উপকৃত হবেন।
-
যে কোনো ক্ষত বা পুড়ে যাওয়া স্থান বা ফোস্কাতে হলুদের প্রলেপ লাগালে তা ব্যাথার উপশম ঘটায়।
-
কাঁচা হলুদ খেলে কমতে পারে টাইপ ২ ডায়েবেটিস।