বিশ্বের সর্বমোট উৎপাদিত সাইট্রাস ফসলের দুই তৃতীয়াংশ হলো মালটা। ভিয়েতনাম, উত্তর পশ্চিম ভারত ও দক্ষিণ চীন মালটার আদি উৎপত্তি স্থল। তবে বর্তমানে এই ফলটি বিশ্বের উষ্ণ ও অব–উষ্ণমণ্ডলীয় এলাকায় বেশী চাষ করা হচ্ছে।
মালটার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ (Nutritional value) -
জনপ্রিয় এই ফলটির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমরা হয়তো অনেকেই জানি না। মালটাতে আছে, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস, এবং চর্বিমুক্ত ক্যালরি। এগুলো ছাড়াও মালটাতে আর অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। পুষ্টিবিদদের মতে, এর প্রতি ১০০ গ্রাম ফলে (আহারোপযোগী) ২০০ মিলিগ্রাম ক্যারোটিন এবং প্রায় ৫০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি আছে। অন্য পুষ্টি উপাদানের মধ্যে শর্করা, আমিষ, চর্বি, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২ এবং খাদ্যশক্তি রয়েছে যথাক্রমে ১২ মিলিগ্রাম, ১ মিলিগ্রাম, ০.২ মিলিগ্রাম, ৪০ মিলিগ্রাম, ০.৮ মিলিগ্রাম, ০.১১৩ মিলিগ্রাম, ০.০৪৬ মিলিগ্রাম এবং ২০০ কিলোক্যালরি।
এটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এর উৎস। এটি ত্বকে সজীবতা বজায় রাখে এবং ত্বকের বলি রেখা প্রতিরোধ করে লাবণ্য ধরে রাখে।
-
মালটা ইনফেকশন প্রতিরোধে সহায়তা করে। এটি প্রদাহ জনিত রোগ সারিয়ে তোলে।
-
এক গ্লাস মালটার জুসকে ভিটামিন সি এর সবচেয়ে কার্যকর উৎস বলে মনে করা হয়। এটাকে ভিটামিন সি ট্যাবলেট হিসেবেও গ্রহণ করা যায়।
-
মালটার ভিটামিন সি উপাদান আমাদের শরীরে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এটি আমাদের শরীরের কোলন ক্যান্সার ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের অন্যতম সেল প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
-
মালটা পাকস্থলীকে সুস্থ রাখে। নিয়মিত কমলা খাওয়ার অভ্যাস পাকস্থলীর আলসার ও কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে সুরক্ষা দেবে। পাকস্থলীকে রাখবে সবল।
-
উচ্চ মাত্রায় ওষুধ সেবনের সময় মালটার লো-কলেস্টরেল শরীরে ওষুধের পার্শ প্রতিক্রিয়া হতে করে।
আরও পড়ুন - প্রোস্টেট ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের মতো ঝুঁকি কমাবে রসুন, জানুন এর উপকারিতা
এতে উপস্থিত পটাশিয়াম ইকেট্রোলাইট ব্যালেন্স বজায় রাখে এবং কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেম ভালো রাখতে সহায়তা করে। কমলাতে উপস্থিত বিটা ক্যারোটিন সেল ড্যামেজ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এতে উপস্থিত ক্যালসিয়াম, যা দাঁত ও হাঁড়ের গঠনে সাহায্য করে।
প্রতিদিন একটি করে কমলা খাওয়ার অভ্যাস আপনার দৃষ্টিশক্তিকে ভাল রাখে। কারণ, কমলায় রয়েছে ভিটামিন এ, সি ও পটাসিয়াম। এ ভিটামিনগুলো আপনার দৃষ্টিশক্তির জন্য বেশ উপকারী।
এতে ম্যাগনেসিয়াম থাকার কারণে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়তা করে। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকার কারণে ওজন কমাতেও সহায়তা করে।
এতে কিছু ঔষধিগুণও আছে। রোগির পথ্য হিসেবে মালটা হিতকর এবং খেতে সুস্বাদু। সর্দিজ্বর কমাতে মালটা বেশ উপকারী। এর খোসা দিয়ে প্রসাধনী তৈরি হয়। এছাড়া ওষুধ শিল্পেও ব্যবহার হয়।
আরও পড়ুন - ননী- এক বিস্ময়কর ফল ও তার ঔষধি ব্যবহার