নারিকেল হলো অন্যতম প্রধান অর্থকারী ফসল। নারিকেলের ইংরেজি নাম Coconut। নারিকেলের বহুবিধ ব্যবহারের জন্য নারিকেল গাছকে কল্পবৃক্ষ বা স্বর্গীয় বৃক্ষ বলা হয়। ঔষধি গুণসম্পন্ন পানীয় হিসেবে ব্যবহারের পাশাপাশি নারিকেল দিয়ে বিভিন্ন রকম সুস্বাদু খাদ্য তৈরি হয় যেমন- পিঠা, মোয়া ইত্যাদি।
সার প্রয়োগ/ব্যবস্থাপনা(Fertilizer):
ক) নারিকেল গাছের গোড়ায় মাটিতে পানি ও খাবার কম থাকলে কচি ডাব ঝরে পড়ে।
খ) পটাশিয়ামের অভাবে কচি ডাব বেশি ঝরে। এক্ষেত্রে মাটিতে পটাশিয়াম ও নাইট্রোজেন জাতীয় সার ব্যবহার করতে হবে।
গ) নারিকেল গাছের গোড়ায় চারদিকে ১.৮ মিটার দূরে বৃত্তাকার গর্ত করে ইউরিয়া ৪ কেজি, এমওপি ৬ কেজি, টিএসপি ১ কেজি এবং সামান্য লবণ দিতে হবে। খেয়াল রাখবেন লবণাক্ত এলাকায় লবণ দেয়া উচিৎ না।
আগাছা ও নিড়ানি:
ক) নারিকেল গাছের কিছু নিয়মিত পরিচর্যা করলে গাছের পুষ্টি উপাদানে ভারসাম্য আসে, পোকা ও রোগবালাই কম হয় এবং ফলন বৃদ্ধি পায়।
আরও পড়ুন -Saffron farming: এবার উত্তরবঙ্গেও শুরু হলো কাশ্মীরি জাফরান চাষ
খ) এর মধ্যে আছে নিয়মিত নারিকেল গাছ বাছাই বা গাছ ঝাড়া, সুষম সার ও সার ও সেচ প্রয়োগ, ইঁদুর দমন এবং সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করা।
গ) ঝুনা নারিকেল বা ডাব সংগ্রহের সময় গাছের মাথা পরিষ্কার করে দেয়া ভালো। সাথে সাথে মরা ও হলুদ পাতা ফেলে দিতে হবে।
পোকামাকড় ও রোগ নিরাময়(Disease management):
ক) নারিকেলের প্রধান রোগের মধ্যে আছে কুঁড়ি পচা, কাণ্ডের রস ঝরা ও পাতায় দাগ পড়া। কুঁড়ি পচা রোগ হলে গাছের মাথার সবচেয়ে সবচেয়ে কচিপাতাগুলো শুকিয়ে যায়।
খ) পাতা প্রথমে ধূসর বাদামি ও পরে গাঢ় বাদামি হয়ে গোড়ার দিকে ভেঙে পড়ে। আক্রান্ত জায়গা থেকে পচা দুর্গন্ধ বের হয় এবং জায়গাটি আঠার মত দগদগে দেখায়।
গ) গাছের আগার একেবারে মাঝের নরম কুঁড়ি পাতাটি পচে যায়, অবশেষে গাছ মরে যায়। একইভাবে নারিকেল, কাদি, কুঁড়ি প্রভৃতির গোড়া আক্রান্ত হয় ও ভেঙে পড়ে।
ঘ) কাণ্ডের রস ঝরা রোগে গাছের কাণ্ড লম্বালম্বিভাবে ফেটে যায়। ঐ ফাটা জায়গা দিয়ে লালচে বাদামি রঙের রস ঝরতে থাকে।
ঙ) রস ঝরার কিছু দিনের মধ্যে আবার তা শুকিয়ে কালো হয়ে যায়। এই ফাটা জায়গা আস্তে আস্তে পচতে শুরু করে।
চ) এছাড়া পাতার দাগ পড়া রোগে নারিকেলের পাতায় বিভিন্ন আঁকারের ধূসর-সাদা দাগ পড়ে। কয়েকটি দাগ মিলে বড় দাগের সৃষ্টি হয়।
ছ) আক্রমণ বেশি হলে পাতা শুকিয়ে যায়। কুঁড়ি পচা বা পাতার রোগ দেখা দিলে গাছের মাথা পরিষ্কার করে মাথায় মিশ্রণ ছিটাতে হবে।
জ) অথবা ৪০ গ্রাম ডায়থেন এম ৪৫ বা কপার অক্সিক্লোরাইড কুপ্রাভিট ৫০ ডব্লিউপি ১২ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে স্প্রে করলে সুফল পাওয়া যায়।
ঝ) কাণ্ডের রস ঝরলে ফাটা ও পচা অংশ পরিষ্কার করে বোর্দো মিশ্রণ ১০ থেকে ১৫ দিন পর পর লাগাতে হবে। মিশ্রণের সাথে যেকোন কীটনাশক মিশিয়ে ফাটা অংশে লাগালে ভালো হয়।
আরও পড়ুন - Breeding process of Koi Fish: জেনে নিন কৈ মাছের কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতি