'রাক্ষুসে মাছ'-বিপদ কোথায়? 'MFOI, VVIF কিষাণ ভারত যাত্রা' গুজরাটের বিভিন্ন গ্রামে পৌঁছে কৃষকদের সম্মানিত করেছে কাঁচা আম খেলে হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ হবে এবং এই সমস্যাগুলো দূর হবে!
Updated on: 8 February, 2021 10:16 PM IST
Rambutan Fruit (Image Credit - Google)

রাম্বুটান (Rambutan Fruits) একটি আকর্ষণীয়, অত্যন্ত সুস্বাদু ও রসালো ফল। সাদা, স্বচ্ছ, অম্লীয় মিষ্টি গন্ধযুক্ত শাঁস এ ফলের ভক্ষণীয় অংশ। গায়ে লাল ও নরম কাঁটা থাকার কারণে এদের লিচু থেকে কিছুটা ব্যতিক্রম দেখায়। যে সব বিদেশী ফল এ দেশে সফলভাবে লাভজনক হিসেবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে তার মধ্যে রাম্বুটান অন্যতম। 

উৎস ও বিস্তার: 

মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া এ ফলের আদি উৎস। থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ফিলিপাইনস, ভিয়েতনাম, মায়ানমার, ব্রুনাই ও শ্রীলংকায় প্রচুর রামবুটান ফল উৎপাদন হয়ে থাকে। এ সব দেশ থেকে অনুরূপ আবহাওয়া বিশিষ্ট দেশে বা দেশের অংশ বিশেষে এ ফলের বিস্তার আরম্ভ হয়। শীতের তীব্রতা কম এমন দেশে যেমন ভারত, ও বাংলাদেশের এমন অংশেও এ ফলের বিস্তার ও চাষ জনপ্রিয়তা বাড়ছে।

রাম্বুটানের জাত (Species) - 

রাম্বুটানের সবচেয়ে বেশি জাত দেখা যায় মালয়েশিয়ায়। সে দেশে রাম্বুটানের ১৫টি জাত রয়েছে। বিভিন্ন দেশে রাম্বুটানের অনেক জনপ্রিয় জাত রয়েছে। তবে বিশ্বে বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য ফিলিপাইনের সিবাবাত, সিঙ্গাপুরের লি, মালয়েশিয়ার পি১, পি৪, পি৫, পি৬, পি৮, পি২২, পি২৮, পি৫৪, পি৬৩ এবং ইন্দোনেশিয়ার মেরাহ ও কোয়েনেং জাতগুলো উল্লেখযোগ্য।

উপযুক্ত আবহাওয়া :

এশীয় দেশগুলোতে ২২ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার মধ্যে রাম্বুটান জন্মে। কিন্তু অব-উষ্ম ও কিছুটা ঠাণ্ডা অঞ্চলে ১২ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে ভালো হয়। যেসব এলাকায় বেশি বৃষ্টিপাত হয় সেখানে রাম্বুটান ভালো হয়। তা না হলে বেশি সেচ দিতে হবে। বিশেষ করে ফুল আসার সময় থেকে ফল সংগ্রহের আগ পর্যন্ত সেচ চালিয়ে যেতে হবে। 

চাষ উপযোগী মাটি :

উঁচু, যেখানে বৃষ্টির পানি জমে থাকে না এরূপ সুনিষ্কাশিত বেলে দো-আঁশ মাটি রাম্বুটান চাষের জন্য ভালো। তবে এঁটেল-দো-আঁশ মাটিতেও চাষ চলে। তবে মাটিতে বেশি জৈবপদার্থ থাকলে বা দিলে রাম্বুটানের গাছ ভালো বাড়ে ও ফল বেশি ধরে। মাটির অম্লমান বা পিএইচ মান ৪.৫ থেকে ৬.৫-এর মধ্যে হওয়া ভালো।

বংশ বিস্তার:

অঙ্গজ উপায়ে অথবা বীজের মাধ্যমে রাম্বুতানের বংশ বিস্তার হয়ে থাকলেও মাতৃ গুণাগুণ বজায় রাখার জন্য অঙ্গজ উপায়ে বংশ বিস্তার উত্তম। কুঁড়ি সংযোজন, বায়বীয় দাবা কলম ও সংযুক্ত দাবাকলম পদ্ধতিতে রাম্বুতানের বংশ বিস্তার করা হয়। ১-২ বৎসর বয়সী শাখা থেকে সুপ্ত কুঁড়ি সংগ্রহ করে ৮-১২ মাস বয়সের রুটস্টক সংযোজন করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এছাড়া জোড়কলম পদ্ধতিতে রাম্বুতানের বংশ বিস্তার করা হয়।

চারা তৈরি :

জোড়কলম করে রাম্বুটানের চারা তৈরি করা হয়। বীজ থেকে গজানো এক বছর বয়সী চারার মাথা কেটে, সেখানে ফাটল করে ফল ধরা কোনো রাম্বুটান গাছের ডগা তেরছা করে কেটে গোজের মতো ঢুকিয়ে ফিতে দিয়ে বেঁধে দেয়া হয়। এ পদ্ধতিকে বলে ক্লেফট গ্রাফটিং। তেজি কোনো ভিত্তি চারার ওপর ফোরকাট বা চোখকলম করেও রাম্বুটানের কলম করা হয়। লিচুর মতো বায়ব দাবা কলম করেও প্রতিষ্ঠিত কোনো ফলবান গাছের ডাল থেকে রাম্বুটানের চারা তৈরি করা যায়। তবে এ ক্ষেত্রে সফলতা কম পাওয়া যায়। চোখকলম করেও সুঠাম আকৃতির ভালো গাছ পাওয়া যায়। বসন্তকাল আসার ঠিক আগে চোখকলম করার উপযুক্ত সময়।

জমি তৈরি:

রাম্বুতানের জন্য সুনিষ্কাশিত উঁচু ও মাঝারী উঁচু ঊর্বর জমি নির্বাচন করতে হবে। পর্যায়ক্রমিক কয়েকটি চাষ ও মই দিয়ে জমি সমান করে নিতে হবে। মাদা তৈরির পূর্বে জমি থেকে বহুবর্ষজীবী আগাছা বিশেষ করে উলুঘাস সমূলে অপসারণ করতে হবে।

রোপণের সময়:

মধ্য-সেপ্টেম্বর থেকে মধ্য-অক্টোবর চারা কলম রোপণের উপযুক্ত সময়। প্রচণ্ড শীতের সময় ছাড়া বছরের যেকোনো সময় রাম্বুটানের চারা লাগানো যায়। তবে বর্ষার আগে লাগানো উত্তম।

চারা রোপণ:

গর্ত ভর্তির ১০-১৫ দিন পর নির্বাচিত চারাটি সোজাভাবে গর্তের মাঝখানে লাগিয়ে চারার চারদিকের মাটি হাত দিয়ে চেপে ভালোভাবে বসিয়ে দিতে হবে এবং খুঁটি দিয়ে বেঁধে দিতে হবে যাতে বাতাসে চারার গোড়া নড়ে না যায়। রোপণের পরপরই পানি সেচ দিতে হবে। এরপর নিয়মিত পানি সেচ ও প্রয়োজনে বেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

চারা রোপণের হারঃ

বাণিজ্যিক বাগান করলে হেক্টর প্রতি ৮০ থেকে ১২০টি চারা লাগানো যায়।

সার প্রয়োগ:

বয়স বাড়ার সাথে সাথে গাছের যথাযথ বৃদ্ধি ও কাক্সিক্ষত ফলনের জন্য সার প্রয়োগ করা আবশ্যক। বিভিন্ন বয়সের গাছের জন্য প্রয়োজনীয় সারের পরিমাণ নিম্নরূপঃ

জল সেচ ও নিষ্কাশন:

রাম্বুটান গাছ খরা সংবেদনশীল। চারার বৃদ্ধির জন্য শুকনো মৌসুমে ১০-১৫ দিন পরপর সেচ দিতে হবে। ফলন্ত গাছের বেলায় সম্পূর্ণ ফুল ফোটা পর্যায়ে একবার, ফল মটর দানার মতো হলে একবার এবং এর ১৫ দিন পর আরও একবার মোট তিনবার সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। সার প্রয়োগের পর সেচ দেওয়া ভালো। বর্ষার সময় যাতে গাছের গোড়ায় জল না জমে থাকে তার জন্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া ফুল আসার ৬-৮ সপ্তাহ আগে সামান্য জলের কষ্ট/পীড়ন দিলে আগাম ও অধিক ফুল ফুটতে দেখা যায়।

ডাল ও মুকুল ছাঁটাইকরণ:

রাম্বুতান গাছকে সধারণত লম্বা ও খাড়াভাবে বাড়তে দেখা যায়। তাই প্রথম দিকেই গাছের সঠিকভাবে প্রুনিং করা জরুরি। ফল সংগ্রহের পরপর ফলের মুকুলগুলো গোড়া থেকে কেটে দিতে হবে তাতে গাছের নতুন কুঁড়িগুলো দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। মৃত, রোগাক্রান্ত এবং লকলকে ডালপালাগুলো নিয়মিত অপসারণ করতে হবে। কলমের চারার ক্ষেত্রে গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য প্রথম ৩-৪ বছর পর্যন্ত মুকুল আসলে তা কেটে দিতে হবে।

ফল সংগ্রহ :

অপরিপক্ক ফলে মিষ্টতা ও অন্যান্য গুণাবলী পরিপক্ক ফলের তুলনায় অনেক কম থাকে। ভালো বাজার মূল্য পাওয়ার জন্য ফল লালচে খয়েরী বর্ণ ধারণ করার ১০-১২ দিনের মধ্যে সংগ্রহ করা ভালো। 

ফলনঃ

ফল পাকলে লালচে রঙ চলে আসে। তখন একটা একটা করে বা গোটা থোকাসহ ফল তোলা যায়।

জাত অনুযায়ী তিন বছরের একটা গাছে ১৫ থেকে ২০ কেজি ফল পাওয়া যায়, নয় বছরের একটা গাছে ৫৫ থেকে ২০০ কেজি ফল পাওয়া যায়, ২০ বছরের একটা গাছে ৩০০ থেকে ৪০০ কেজি ফল পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন - জেনে নিন সঠিক নিয়মে অ্যাডেনিয়াম ফুলের চাষ (Adenium Flower Cultivation)

English Summary: Cultivation of exotic rambutan fruit through modern management
Published on: 08 February 2021, 10:16 IST

எங்களுக்கு ஆதரவளியுங்கள்!

প্রিয় অনুগ্রাহক, আমাদের পাঠক হওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার মতো পাঠকরা আমাদের কৃষি সাংবাদিকতা অগ্রগমনের অনুপ্রেরণা। গ্রামীণ ভারতের প্রতিটি কোণে কৃষক এবং অন্যান্য সকলের কাছে মানসম্পন্ন কৃষি সংবাদ বিতরণের জন্যে আমাদের আপনার সমর্থন দরকার। আপনার প্রতিটি অবদান আমাদের ভবিষ্যতের জন্য মূল্যবান।

এখনই অবদান রাখুন (Contribute Now)