এবার AI এর সাহায্যে ছাগলের গর্ভধারণ করা হবে, জেনে নিন কীভাবে কাজ করবে এই প্রযুক্তি শীতকালে মাছ চাষ: জল ব্যবস্থাপনা এবং মাছের সঠিক যত্ন নেওয়া শিখুন! বাগমাল গুর্জরের সাফল্যের গল্প
Updated on: 18 January, 2021 4:21 AM IST
Ginger Cultivation (Image Credit - Google)

এতদিন রাজ্যের দার্জিলিং, ক্যালিম্পং এর পাশাপাশি তরাই-এর কিছু অঞ্চলে আদার চাষ হতো। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে পরীক্ষা নিরিক্ষার পর এখন সমতলে আদার উদপাদন শুরু হয়েছে। সমতলে আদা চাষ করে নজর কেড়েছেন, বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। গরুবাথান, বর্ধমান নামক ভারতীয় জাতের আদা ছাড়াও রিও-ডি-জেনেইরো, চীনা, ওয়াইনাদ প্রভৃতি বাইরের দেশের আদার জাতও চাষ করা হচ্ছে।

আদার বীজ শোধন (Ginger seed purification) - 

পচন রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আদার বীজ শোধন করতে হবে। এজন্য ১০ লিটার জলে  ডাইথেন এম-৪৫ মিশিয়ে তাতে ১০ কেজি আদা বীজ আধ ঘন্টা পর্যন্ত ভিজিয়ে তুলে ছায়াযুক্ত স্থানে খড়/চট দিয়ে ঢেকে রাখলে ভ্রুণ বের হয়। এ ভ্রুণযুক্ত আদা জমিতে রোপণ করতে হবে।

আদার বীজ রোপণ পদ্ধতি (Planting method) - 

সারি ৫০ সেমি এবং কন্দ থেকে কন্দ ২৫ সেমি দূরত্বে রোপণ করা হয়। একক সারি পদ্ধতিতে ৫০ সেমি পরপর ৫-৬ সেমি গভীর করে সারি তৈরি করার পর ২৫ সেমি দূরত্বে বীজ আদা রোপণ করতে হয়। বীজ আদা রোপণের সময় সবগুলো বীজের অঙ্কুরিত মুখ একদিকে রাখতে হবে যাতে বীজ আদা রোপণের ৭৫-৯০ দিন পর সারির এক পার্শ্বের মাটি সরিয়ে সহজেই আদার রাইজোম সংগ্রহ করা যায়।

আদা চাষে জমি প্রস্তুতঃ

১। আদা চাষের জন্য জমিতে ভালো করে ৫/৬টি চাষ ও মই দিয়ে এবং মাটি ঝুরঝুরে করে জমি প্রস্তুত করতে হবে।

২। আদা চাষ করার জন্য উঁচু অথবা মাঝারী উঁচু জমি নির্বাচন করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে আদা চাষ করার জমিতে যেন পানি না জমে। 

আদার জমিতে সার প্রয়োগ (Fertilizer Application) - 

বেশি ফলন পেতে হলে আদার জমিতে প্রচুর পরিমাণ জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। আদার জন্য প্রতি হেক্টরে জৈব ও রাসায়নিক সার নিচে উল্লিখিত হারে প্রয়োগ করতে হবে -

সম্পূর্ণ গোবর এবং টিএসপি, জিপসাম, জিঙ্ক এবং অর্ধেক এমপি জমি তৈরির সময় মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া এবং এমওপি সারের অর্ধেক আদা রোপণের ৫০ দিন পর জমিতে প্রয়োগ করতে হবে। অবশিষ্ট ইউরিয়া এবং এমওপি দুই কিস্তিতে সমানভাবে বীজ রোপণের ৮০ দিন এবং ১০০ দিন পর উপরি প্রয়োগ করতে হবে।

কৃষি আধিকারিকরা বলেছেন, আদা চাষে পটাশ সার বেশী লাগে। গোবর সার, কম্পোস্ট সার, ছাই, তুষ, পাতা পচা বেশী করে দিতে হবে। হেক্টরে ১০-১৫ টন জৈব সার দেওয়া দরকার। বিঘায় ৪০ কেজি ইউরিয়া, ৮০ কেজি সিঙ্গল সুপার ফসফেট ও ৪০ কেজি পটাশ দিতে হবে। জমি তৈরির সময় মাটিতে ফসফরাস মিশিয়ে দেওয়া দরকার। নাইট্রোজেন ও পটাশ দু-ভাগে ভাগ করে চাপান হিসাবে দিতে হবে, একবার ৪৫ দিন ও একবার ৯০ দিনের মাথায়। সিমেন্টের বস্তাতেও মাটি ভরে আদা চাষ করা যায়। বস্তা পিছু গড়ে ২ কেজি আদা মেলে। ৬-৭ মাসেই ফলন পাওয়া যায়। প্রতি বিঘায় আদার চাষে খরচ ২৫-৩০ হাজার টাকা, বিঘা প্রতি ৩ টন ফলন মেলে, বিক্রি করে ১ লক্ষ টাকা পাওয়া যায়। অর্থাৎ প্রতি বিঘায় লাভ ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

আদা সংগ্রহ ও সংরক্ষণ

কন্দ রোপণের প্রায় ৯-১০ মাস পর পাতা এবং গাছ হলুদ হয়ে শুকিয়ে যায়। সাধারণত ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে কোদাল দিয়ে মাটি আলাদা করে আদা উত্তোলন করা হয়। ফসল সংগ্রহের পর মাটি পরিষ্কার করে আদা সংরক্ষণ করা হয়। আদা উঠানোর পর ছায়াযুক্ত স্থানে বা ঘরের মেঝেতে গর্ত করে গর্তের নিচে বালির ২ ইঞ্চি পুরু স্তর করে তার উপর আদা রাখার পর বালি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। পরে খড় বিছিয়ে দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। এতে আদার গুণাগুণ এবং ওজন ভালো থাকে।

আদার ফলন - 

আধুনিক ও উন্নত পদ্ধতিতে আদার চাষ করলে হেক্টরপ্রতি ২০ থেকে ২৫ টন ফলন পাওয়া যাবে।

আরও পড়ুন - আলু ফসল চাষে কোন সার কোন সময়ে প্রয়োগ করলে কৃষকের দ্বিগুণ লাভ হবে? কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা, জেনে নিন লাভের উপায় (Earn Double By Cultivating Potato In This Way)

English Summary: Earn million by cultivating Ginger
Published on: 05 January 2021, 12:01 IST