পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের এক চাষী বিধান লায়েক নিয়মিত ও লাভজনক প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে পান-এর চাষ শুরু করেছিলেন। তিনি অনুভব করেছিলেন তার মতো ক্ষুদ্র কৃষকদের জন্য এটি উপযুক্ত ফসল এবং এর চাষ করলে ১০-১২ বছর সময়ের জন্য আরও ভালো প্রত্যাবর্তন সুনিশ্চিত। এই বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে তিনি তার ১০ কাঠা জমিতে পান- এর চাষ করেছিলেন।
প্রথম দিকে তার ক্ষেত ত্রুটিমুক্ত থাকলেও গত বছর এটি ছত্রাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পরে। তিনি পর্যবেক্ষণ করেন যে, পাতায় কালো দাগ দেখা দিছে এবং পাতাগুলি রুক্ষ হয়ে উঠছে, উদ্ভিদের বৃদ্ধি হারও হ্রাস পেয়েছে। তিনি সমস্ত প্রচলিত উপায়গুলি প্রয়োগ করে এই রোগের বিস্তার রোধের উদ্দেশ্যে চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে কিছুই কার্যকর হয়নি।
তাঁর পরিস্থিতি দেখে ব্যথিত হয়ে তাঁর কয়েকজন সহকর্মীর তাকে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন-এর (১৮০০-৪১৯-৮৮০০-) টোল ফ্রি হেল্পলাইনের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। আরও দেরি না করেই তিনি টোল-ফ্রি নাম্বারে কল করে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের বিশেষজ্ঞের সাথে এই রোগ সম্পর্কিত সমস্ত লক্ষণগুলি সম্পর্কে পর্যালোচনা করেন এবং তার সমস্যাগুলি শোনার পরে বিশেষজ্ঞ তাকে জানিয়েছিলেন যে, তার ক্ষেতের উদ্ভিদগুলি অ্যানথ্রাকনোজ্ রোগে আক্রান্ত এবং তাকে অ্যাজক্সাইস্ট্রোবিন ওষুধ প্রতি লিটার পানিতে ০.৭৫ মিলি ডোজ দিয়ে দিনে দুবার প্রয়োগ করার পরামর্শ দেন ।
তিনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ স্প্রে করেন এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হন। প্রস্তাবিত ওষুধের ইতিবাচক প্রভাবের সাক্ষী হয়ে তিনি বিস্মিত হওয়ার সাথে সাথে খুশিও হয়েছেন। কারণ তার গত কয়েক মাসের প্রচেষ্টা এবং কঠোর পরিশ্রম বৃথা যায়নি।
তিনি আরএফ বিশেষজ্ঞের সময়মত সহায়তা এবং দিকনির্দেশনা দিয়ে উন্নত মানের পান উত্পাদন করতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর মোট ১০ কাঠা জমি থেকে উৎপাদন প্রায় ৬৫,০০০। তিনি বাঁকুড়ার স্থানীয় বাজারে পণ্য প্রতি ১০০০ পিস ১০০০ টাকায় বিক্রি করেছিলেন এবং মোট আয় করেছেন প্রায় ৬৫,০০০ / - টাকা। সময়মতো এই রোগের চিকিত্সা করাতে এবং তাকে তীব্র ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচাতে আরএফের দেওয়া সহায়তায় তিনি আনন্দিত হয়েছিলেন।
এখন তিনি তার গ্রাম এবং আশেপাশের গ্রামের কৃষকদের, বিশেষত তরুণ কৃষকদের স্মার্টফোন ব্যবহার করে, কৃষি বা পশুসম্পদ সম্পর্কিত তাদের প্রশ্নের সমাধানের জন্য রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন প্ল্যাটফর্মের সাথে সংযুক্ত হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
বিধান লায়েক বলেন, “রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন তার গ্রামের কৃষকদের একাধিক সম্মেলনের পাশাপাশি অডিও ও পাঠ্য বার্তাগুলির মাধ্যমে উন্নত চাষের পদ্ধতি, আবহাওয়া সম্পর্কিত পরামর্শদান, মাটি পরীক্ষা, সরকারী পরিকল্পনা এবং কর্মসূচি ইত্যাদির অনেক প্রাসঙ্গিক তথ্য সরবরাহ করছে। আমি পান চাষে লাভবান হয়ে যথেষ্ট সন্তুষ্ট এবং আগামী দিনে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন গ্রুপ- এর কাছ থেকে প্রযুক্তিগত সহায়তা পেতে থাকব ”।
তথ্যসূত্র – প্রদ্বীপ পান্ডা
রিলায়েন্স গ্রুপ
অনুবাদ
স্বপ্নম সেন (swapnam@krishijagran.com)
Share your comments