Weather Update: ঝেঁপে নামবে বৃষ্টি! শনিবার থেকেই আবহাওয়ার আমূল পরিবর্তনের পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের “ট্র্যাক্টর কে খিলাড়ি” কৃষকদের 51 হাজার টাকা পর্যন্ত পুরস্কার “মিলিওনেয়ার ফার্মার অফ ইন্ডিয়া অ্যাওয়ার্ডস 2024” এবার জুরির সভাপতিত্বে নীতি আয়োগের সদস্য অধ্যাপক রমেশ চাঁদ
Updated on: 10 April, 2021 5:00 PM IST
Honey Bee (Image Credit - Google)

সারা দেশেই মৌমাছি পালনে এখন গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে। সরকার মিষ্টি বিপ্লবের আহ্বান দিয়ে, আমাদের দেশে ফুলে ফুলে যে নেক্টার উৎপন্ন হয় তার সুচারু ব্যবহারের প্রস্তাব রেখেছেন।

নেক্টারের সুচারু ব্যবহার আসলে কি?

সপুস্পক উদ্ভিদে ফুল থেকে পুষ্পরস বা নেক্টার নিঃসরণ একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। পরাগমিলনকারী পতঙ্গকে আকর্ষণ করতেই মূলতঃ এই মিষ্টিরস ব্যবহৃত হয়। আমাদের দেখা জীব বৈচিত্রে সমৃদ্ধ। ফলতঃ পুষ্প বৈচিত্রও বিপুল। এই ফুলগুলি থেকে যে নেক্টার উৎপন্ন  হয় তার ২৫% ও ব্যবহৃত হয় না, দিনের শেষে শুকিয়ে যায়। এই নেকটারের একটা বড় অংশ যদি মৌমাছি পালনের বৃদ্ধি ঘটিয়ে আমরা সংগ্রহ করতে পারি , দেশে মধু উৎপাদনে বিপুল অগ্রগতি ঘটতে পারে। শুধু তাই না এই উদ্যোগ সফল করতে পারলে পরাগ মিলনের উন্নতি ঘটিয়ে, দেশের কৃষি উৎপাদনেও বিপুল অগ্রগতি ঘটানো সম্ভব। পরাগমিলনে অন্যান্য পতঙ্গের তুলনায় মৌমাছি বেশী দক্ষ। কারণ মৌমাছি শুধু নিজের প্রয়োজন মেটাতে নেকটার সংগ্রহ করে না, চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত সংগ্রহ করে, মধু রূপে মৌচাকে জমা করে অসময়ের জন্য বা সন্তান সন্ততির জন্য। ফলে অন্যান্য কীটপতঙ্গের তুলনায় মৌমাছি ফুলে ফুলে ওড়াউড়ি বেশী করে। ফলে পরাগ মিলনে ও সাহা্য্য বেশী হয়।

মৌমাছির বৈচিত্র্য:

পৃথিবীতে এখনও পর্য্যন্ত ২০,০০০ মত প্রজাতির মৌমাছি চিহ্নিত করা গেছে। তার মধ্যে ৭৮৫টি শস্য ক্ষেত্রে পাওয়া যায়। বাক্স বন্দী করে যে মৌমাছিগুলি পালন করা হয় তা মূলতঃ তিন প্রজাতির।

মৌমাছির প্রজাতি -

১. এপিস মেলিফেরা বা ইউরোপিয়ান মৌমাছি: 

এই মৌমাছির মধু উৎপাদন ক্ষমতা অনেক বেশী, বছরে বাক্স  প্রতি প্রায় ৪০ কেজি। উৎপাদন ও পরিচর্যা ব্যায় অনেক বেশী। নেকটার সমৃদ্ধ ফুলের লভ্যতার ওপর নির্ভর করে মৌমাছি স্থানান্তর করে এই মৌমাছির চাষ করতে হয়।

২. এপিস সেরানা ইন্ডিকা:

এশিয়াঞ্চলের মৌমাছি এদের মধু উৎপাদন ক্ষমতা অনেক কম। বাক্স প্রতি বছরে প্রায় ৪ কেজি। কিন্তু বাক্স স্থানান্তর না করেই এই মৌমাছি চাষ করা যায়। উৎপাদন ব্যয়ও অনেক কম।

৩. হুল বিহীন মাছি:

এরা এপিস গণ ভুক্ত নয়। সামান্য পরিমানে মধু সংগ্রহ করে। গাছের কোটরে বা বাড়ি ঘর দোরের ফাটলের মধ্যে এরা চাক বাঁধে। এদেরও বাক্স বন্দী করে চাষ করা যায়। মধু উৎপাদনের চাইতে আচ্ছাদনের চাষ (protected cultivation) –এ ফসলের পরাগ মিলনে এই মাছি অনেক বেশী কার্যকরী।

এছাড়া বাক্সবন্দী করা যায় না এমন অনেক মৌমাছি ও রয়েছে। বড় গাছে মস্ত মস্ত চাক বেঁধে থাকে সাধারণত: এপিস ডরসাটা। এরা ডাশ মাছি। আর অপেক্ষাকৃত অনেক ছোট ছোট মাছি হল এপিস ফ্লোরেয়া।

মৌমাছির খাদ্য:

(ক) নেকটার ও মধু:

মৌমাছির খাদ্য হিসেবে নেকটারের কথা তো উল্লেখ করেছি। এই নেকটার অপেক্ষাকৃত তরল মিষ্টি রস। এই রসকে মধুতে রূপান্তরিত করে মৌমাছি – যা অপেক্ষাকৃত ভাবে অনেক ঘন। মধুতে জলীয় অংশ থাকে ২০% এর মধ্যে। মৌপ্রকোষ্ঠে জমা করার সময়, মৌমাছি যদি বোঝে, মধুতে জলের অংশ বেশী আছে, তবে ডানা ঝাপটে ঝপটে তারা জলীয় অংশ কমায় ও মৌপ্রকোষ্ঠটিতে capping বা ঢাকনা দিয়ে দেয়। এই হচ্ছে পরিপক্ক মধু বা matured honey – যা সহজে নষ্ট হয় না।

(খ) পোলেন বা পরাগরেণু:

নেকটার থেকে মৌমাছির প্রোটিনের চাহিদা মেটে না। সেটা মেটে পরাগরেণু বা পোলেন থেকে। মৌমাছির গায়ের লোমে আটকে থাকা পোলেন যেমন পরাগমিলনের কাজে লাগে, তেমনি কিছু পোলেন জিভ দিয়ে ভিজিয়ে জড়ো করে পেলনের পা জোড়ায় থাকা কোটরে বা পোলেন বা স্কেটে জমা করে ও মৌচাকে গিয়ে জমা করে। এই পোলেনগুলো মধুতে ভিজিয়ে নিয়ে চাকের মধ্যে নির্দিষ্ট প্রকোষ্ঠে জমা করে। এদের বলে পরাগরুটি বা পোলেন ব্রেড। মৌমাছির শাবকের জন্মের কয়েকদিন পর থেকেই এদের পরাগরুটি খেতে দেওয়া হয়।

(গ) রয়াল জেলি:

মৌমাছির সমাজের ক্রম ও শ্রেণীবিন্যাস সম্পর্কে কমবেশী আমরা সবাই অবহিত। এই সমাজ মূলতঃ রাণী কেন্দ্রীক। রাণীর কাজ শুধুই ডিম পাড়ার পরদু তিন দিনের মধ্যেই শাবকেরা বেরিয়ে আসে। সন্তান প্রসবের পর স্তন্যপায়ী প্রানীদের মা যেমন সন্তানকে বুকের দুধ পান করায়, এ মৌমাছির ক্ষেত্রে শ্রমিকেরা (যারা ধাত্রী মাছির কাজ করে) সে দায়িত্ব পালন করে। তাদের হাইপোফ্যারিঞ্জিয়াল গ্রন্থী থেকে এক ধরণের জেলি জাতীয় পদার্থ নিঃসৃত হয়। সেই জেলি তারা সন্তান প্রকোষ্ঠগুলিতে খাদ্য হিসেবে ফেলে রাখে। জন্মের পর প্রথম দু/ তিন দিন সবার জন্যই এই খাদ্য বরাদ্দ থাকে। তারপর শাবকদের জন্য বরাদ্দ হয় পরাগরুটি। কেবলমাত্র যে শাবক হবে ভবিষ্যতের রাণী, তার জন্য সারাজীবন ব্যাপী বরাদ্দ এই রয়াল জেলি। নানা ধরনের মিনারেল, ভিটামিন, প্রোটিন সমৃদ্ধ এই খাদ্য। কিন্তু অধুনা বিজ্ঞানীদের নজরে এসেছে, আসলে পোলেন ও মধু না খাইয়েই রাণী তৈরী করা হয়। রয়াল জেলির গুণে শাবক ভবিষ্যতের রাণী হয় না, এটা আসলে জিন নিয়ন্ত্রিত একটি পদ্ধতি। বিষয়টি অবশ্য এখনো বিতর্কের উর্ধে নয়।

আজকাল এই রয়াল জেলিও বাজারজাত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মহার্ঘ খাদ্য হিসেবেই, পৃথিবীব্যাপী এখন এর চাহিদা।

আরও পড়ুন - চাষের জমিতে পেঁয়াজ চাষের মৌপালনের মাধ্যমে কৃষক বন্ধুরা করুন দ্বিগুণ আয়

সারা পৃথিবীতেই পরাগ মিলনকারী পোকা ও বিশেষ করে মৌমাছির সংখ্যা কমছে। এটা শুধু মধু উৎপাদন নয়, শস্য উৎপাদনেরও ভয়ঙ্কর ক্ষতি করছে। বলা যায় এভাবে চললে স্বপুষ্পক উদ্ভিদের অস্তিত্বই বিপদাপন্ন হবে। মূলতঃ কৃষিতে রাসায়নিকের ব্যবহার, কীটনাশক বিশেষতঃ নিওনি কটিনয়েডসের ব্যবহার, কৃষিজমিতে বিপুল পরিমানে আগাছানাশকের ব্যবহার , জঙ্গল কমে আসা ও নগরায়নের ব্যাপ্তি পৃথিবী ব্যাপী এক জাতীয় পতঙ্গের সংখ্যা হ্রাসের কারণ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে।

তথ্যসূত্র - প্রফেসর শান্তনু ঝা

আরও পড়ুন - সার্টিফায়েড সীড কি? কীভাবে চিনবেন কৃষকবন্ধুরা সার্টিফায়েড সীড, রইল বিস্তারিত

English Summary: Increase grain production by improving pollination
Published on: 10 April 2021, 03:55 IST

எங்களுக்கு ஆதரவளியுங்கள்!

প্রিয় অনুগ্রাহক, আমাদের পাঠক হওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার মতো পাঠকরা আমাদের কৃষি সাংবাদিকতা অগ্রগমনের অনুপ্রেরণা। গ্রামীণ ভারতের প্রতিটি কোণে কৃষক এবং অন্যান্য সকলের কাছে মানসম্পন্ন কৃষি সংবাদ বিতরণের জন্যে আমাদের আপনার সমর্থন দরকার। আপনার প্রতিটি অবদান আমাদের ভবিষ্যতের জন্য মূল্যবান।

এখনই অবদান রাখুন (Contribute Now)