আলু শীতকালীন অর্থকরী ফসল। আলুর বৈচিত্র্যময় চাহিদা এবং অত্যন্ত লাভজনক চাষ হওয়ার কারণে কৃষকেরা এই চাষে বিশেষ আগ্রহী ও যত্নশীল। আলু চাষে লাভ আরো বাড়ানোর লক্ষ্যে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিগুলির আরো যথাযথ ভাবে প্রয়োগ করতে হবে। চাষে রোগ পোকার আক্রমণ একটি সাধারণ ঘটনা হলেও এর প্রতিকার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আলু ফসলের পোকা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন, তার বিশদ আলোচনা রইল এই নিবন্ধে।
১) জাবপোকা -
পূর্ণাঙ্গ ও অপূর্ণাঙ্গ জাবপোকা গাছের পাতায় ও ডটায় চাপচাপ ভাবে বসে রস চুষে খায়। ফলে আক্রান্ত পাতা বিবর্ণ হয়ে ঢলে পড়ে ও কুঁকড়ে যায়। এরা ভাইরাস রোগের জীবাণু জমিতে ছড়িয়ে দেয়। আলু গাছের ১০০টি যৌগিক পাতায় যদি ২০ অথবা তার বেশি হয় তখনই এদের নিয়ন্ত্রণ করার উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রতিকার (Management) -
আক্রান্ত গাছ দেখামাত্রই তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।তাছাড়া জাবপোকা দমনের জন্য ইমিডাক্লোরপ্রিড ৫ মিলি প্রতি ১৫ লিটার জলে বা এসিফেট ০.৭৫ মিলি বা অ্যাসিটামিপ্রিড ১ মিলি প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে হবে।
২) সাদামাছি (Whitefly) -
পূর্ণাঙ্গ ও অপূর্ণাঙ্গ সাদামাছি আলুগাছের পাতার নীচে থেকে রস চুষে খায়। ফলে আক্রান্ত পাতা বাদামী বা হলুদ হয়ে কুঁকড়ে যায়, আক্রান্ত গাছ খৰ্বাকায় হয়ে পড়ে ও ফলন অনেক কমে যায়। এরাও বিভিন্ন ভাইরাস রোগের জীবাণু ছড়িয়ে আলু গাছের ক্ষতি করে।
প্রতিকার (Pest management) -
জাবপোকা দমনের অনুরূপ। আক্রান্ত গাছ দেখামাত্রই তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।তাছাড়া জাবপোকা দমনের জন্য ইমিডাক্লোরপ্রিড ৫ মিলি প্রতি ১৫ লিটার জলে বা এসিফেট ০.৭৫ মিলি বা অ্যাসিটামিপ্রিড ১ মিলি প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে হবে।
৩) কাটুইপোকা -
কাটুই পোকার কীড়া বা ল্যাদা রাত্রে বেলায় বের হয়ে ছোট আলুগাছের গোড়া কেটে নষ্ট করে। এরা দিনের বেলায় মাটির ফাটলে বা ঘাসের নীচে লুকিয়ে থাকে। একটি কীড়া এক রাতে ৫-১০টি আলু গাছ বা তার শাখা প্রশাখা কেটে ক্ষতি করতে পারে। গাছে আলু ধরার
পর নতুন আলুর উপর বিভিন্ন ধরনের গোলাকার ছিদ্র দেখা যায়। আক্রান্ত আলুর বাজারে চাহিদা থাকে না।
প্রতিকার -
আক্রমণের মাত্রা ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেলে ক্লোরপাইরিফস ২.৫ মিলি প্রতি লিটার জলে গুলে স্পে করতে হবে। জমির কিছু দূরে আগাছা বা ঘাস সন্ধ্যে বেলা জড়ো করে রাখতে হবে। রাতে এর মধ্যে কাটুই পোকা আশ্রয় নেবে। দিনের বেলা এদের মেরে ফেলতে হবে। তাছাড়া বিষটোপ ব্যবহার করেও এদের দমন করা যায়। যেমন ২ ভাগ চালের কুঁড়ো, পরিমাণ মত ঝোলা গুড় এবং ২ শতাংশ ক্লোরপাইরিফস মিশিয়ে টোপ তৈরী করে গাছের গোড়ায় আলে এবং ভেলির মাঝখানে সন্ধ্যার দিকে ছড়িয়ে রাখতে হবে।
Related link - (Fig farming) কৃষকবন্ধুরা ডুমুর চাষ করে আয় করতে পারেন ৩ লাখেরও বেশী অর্থ