জঙ্গল জালেবি, এই ফলটিকে অনেকে মিষ্টি তেতুঁল বলে থাকে | জঙ্গল জালেবিকে ক্রান্তীয় ভারতীয় ফল হিসাবে বিবেচনা করা হয়। বিভিন্ন ভাষায় এর বিভিন্ন নাম রয়েছে। এটিকে তামিলের "কোদুক্কা পুলি", তেলেগুতে "সীমা চিন্তক্যা", কর্ণাটকের "সীমা হুনাসে" এবং ইংরেজিতে এটিকে বানর পোড, কামাচিল এবং মাদ্রাজে একে কাঁটা ফল হিসাবে উল্লেখ করা হয় । উত্তর ও দক্ষিণ কর্নাটকে এই ফলের চাষ দেখা যায় |
উত্তর ও দক্ষিণ কর্নাটকে এই ফলের চাষ দেখা যায় | এই গাছটি সাধারণত ১৪ থেকে ১৮ মিটারের হয়ে থাকে এবং কাঁটাযুক্ত হয়ে থাকে | এই গাছের পাতাগুলি ছোট হয় এবং ৬ থেকে ৮ মিটার লম্বা হয়ে থাকে | ফুলগুলি সাদা ও গোলাকার হয়ে থাকে | জঙ্গল জালেবি গাছটি ভারত, ফিলিপাইন, মেক্সিকো এবং দক্ষিণ আমেরিকার অঞ্চলে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায় | এই ফলগুলি অত্যন্ত স্বাদযুক্ত, মিষ্টি ও ভোজ্য প্রকৃতির হয়ে থাকে |
এটিতে প্রোটিন, ক্যালোরি, ডায়েট্রি ফাইবারস, কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট (যা শক্তির প্রয়োজনে সহায়তা করে এবং হজমে সহায়তা করে) এর সাথে ডায়রিয়ার চিকিৎসা, রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখতে এবং দাঁতকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে | এই ফলগুলি সম্পূর্ণরূপে আয়রন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি এবং বি সমৃদ্ধ |
জঙ্গল জালেবি ফলের স্বাস্থ্যগুণ (Health benefits of jangla jalebi):
অন্ত্রের সমস্যা নিরাময় করে (Reduce gut problem):
জঙ্গলের জালেবি ফলগুলি কোরেসেটিন এবং ফ্ল্যাভোনয়েডের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলিতে সমৃদ্ধ। এই গুণগুলি অন্ত্র এবং পেটে থাকা বিষাক্ত ময়লা পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। তাই এটি ডায়রিয়া নিরাময়ে সহায়তা করে।
ডায়াবেটিস নিরাময় করে (cure diabetes problem):
জঙ্গল জলেবীর নিষ্কাশিত রসকে অ্যান্টি-হাইপারগ্লাইসেমিক অ্যাট্রিবিউট বলা হয়, যা টাইপ ২ ডায়াবেটিস মেলিটাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস করতে সহায়তা করে। অতএব, জঙ্গল জালাবির এই জুস নিয়মিত গ্রহণ করা যেতে পারে।
ত্বকের উপযোগী (Maintain skin):
স্যাপোনিনস, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং ভিটামিন-সি এর উপস্থিতি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে, যা স্বাস্থ্যকর ত্বক গড়ে তোলে |
হাড় ও পেশি সুরক্ষিত রাখে (Secures bones):
খনিজ এবং ক্যালসিয়ামের উপস্থিতি জলেবি হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে, ফলমূল নয় এমনকি এর পাতাগুলি পেশী শিথিল করতে সহায়তা করে |
চাষ পদ্ধতি (Farming process):
২ ভাগ দো-আঁশ / বেলে দো-আঁশ মাটির সঙ্গে ১ ভাগ গোবর, ১০০ গ্রাম টি, এস, পি, ১০০ গ্রাম পটাশ, ২৫০ গ্রাম হাড়ের গুড়া এবং ৫০ গ্রাম সর্ষের খোল একত্রে মিশিয়ে একটি কমপক্ষে ২০ ইঞ্চি বড় টব বা হাফ ড্রামে জল মিশিয়ে রেখে দিন । ১০-১২ দিন পর মাটি খুচিয়ে রেখ দিন আরও ৪-৫ দিন । তারপর একটি ভাল কলমের চারা উক্ত টবে লাগান। তবে চারাটি অবশ্যই কলমের (Grafting) কিনা এবং মিষ্টি তেতুলের কিনা তা নিশ্চিত হয়ে লাগাবেন ।
আরও পড়ুন - Guava Farming: এই পদ্ধতিতে পেয়ারা চাষে আপনিও লাভ করতে পারেন দ্বিগুন
পরিচর্যা:
মিষ্টি তেতুলের চারা গাছ লাগানোর পর প্রথম ৬ মাস তেমন কোন যত্ন নিতে হবে না । পরিমিত জল এবং আগাছা পরিষ্কার করলেই চলবে । ৬ মাস পর থেকে প্রতিমাস অন্তর অন্তর সর্ষের খোল মিশ্রিত পচা জল দিতে হবে । খোল এর জল দেওয়ার পূর্বে মাটি খুচিয়ে নিলে ভাল হয় ।
নিবন্ধ: রায়না ঘোষ
আরও পড়ুন - Areca Nut Farming: জেনে নিন বাংলাদেশে কোন জাতের সুপারি গাছ চাষ লাভজনক