কালো গম স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, জেনে নিন এর বিশেষত্ব হলুদ চাষের উন্নত পদ্ধতিঃ শিখে নিলেই ইনকাম হবে দ্বীগুন নারী মৎস্যজীবীদের ক্ষমতায়ন: সুন্দরবনের কুলতলীতে মহিলা মৎস্যজীবী দিবস
Updated on: 15 September, 2021 4:50 PM IST
Ginger plant (Image Credit - Google)

আদা (Ginger Farming) উৎকৃষ্ট ভেষজ গুণসম্পন্ন মসলা জাতীয় ফসল। আদা দেহের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে। আদার রস রুচিবর্ধক হিসেবে কাজ করে। আদার রস মধু মিশিয়ে খেলে কাশি দূর হয়। আদার রস পেট ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। আদা পাকস্থলী ও লিভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি ছাড়াও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে। আদা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কার্যকরভাবে কমাতে সাহায্য করে। আদা মানবদেহে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

চাষের সময় ও জমি তৈরি (Land Preparation) :

মার্চ-এপ্রিল মাসে বৃষ্টি হওয়ার পর জমি যখন জো অবস্থায় আসে তখন ৬-৮ টি চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করা হয়। এরপর ৪ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ২ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট বেডের চারিদিকে জল সেচ ও নিষ্কাশনের সুবিধার জন্য ৫০ সেমি চওড়া নালা তৈরি করতে হবে।

আদা রোপণের সময় :

এপ্রিলের শুরু থেকে মে মাস পর্যন্ত আদা রোপণ করা যায়। তবে এপ্রিলের শুরুতে রোপণকৃত আদার ফলন সবচেয়ে বেশি হয়।

আদার বীজ রোপণ পদ্ধতি :

সারি ৫০ সেমি এবং কন্দ থেকে কন্দ ২৫ সেমি দূরত্বে রোপণ করা হয়। একক সারি পদ্ধতিতে ৫০ সেমি পরপর ৫-৬ সেমি গভীর করে সারি তৈরি করার পর ২৫ সেমি দূরত্বে বীজ আদা রোপণ করতে হয়।

বীজ আদা রোপণের সময় সবগুলো বীজের অঙ্কুরিত মুখ একদিকে রাখতে হবে যাতে বীজ আদা রোপণের ৭৫-৯০ দিন পর সারির এক পার্শ্বের মাটি সরিয়ে সহজেই আদার রাইজোম সংগ্রহ করা যায়।

আদার রোগ ও পোকামাকড় (Disease and Pest Management) :

রাইজম রট রোগ :

পিথিয়াম এফানিডারমেটাম নামক ছত্রাকের আক্রমণের কারনে এ রোগ হয়। এ রোগ রাইজমে আক্রমণ করে বলে আদা বড় হতে পারে না ও গাছ দ্রুত মরে যায়।

কন্দ পচা রোগ :

এই রোগে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক পর্যায়ে কপার অক্সিক্লোরাইড ৫০% ডব্লিউপি প্রতি লিটার জলে ৪ গ্রাম বা রিডোমিল গোল্ড প্রতি লিটার জলে ২ গ্রাম মিশিয়ে মাটির সংযোগ স্থলে ১৫-২০ দিন অন্তর অন্তর প্রয়োগ করে রোগ প্রতিরোধ করা যাবে।

ডগা বা কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা :

কান্ড আক্রমণ করে বলে গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। ফলে উৎপাদন কম হয়। এ পোকার মথ কমলা হলুদ রঙের এবং পাখার উপর কালো বর্ণের ফোটা থাকে। কীড়া হালকা বাদামি বর্ণের। গায়ে সুক্ষ্ণ শুং থাকে।

ব্যবস্থাপনা :

পোকার আক্রমণ বেশি হলে, সুমিথিয়ন ৫০ ইসি ২০ মিলি হারে প্রতি ১০ লিটার জলে মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়। অথবা ডারসবান বা ডাইমেক্রণ প্রতি লিটার জলে ০.৫ মিলি হারে মিশিয়ে স্প্রে করা যাবে। অথবা নুভাক্রন ১০০ ইসি ১ মিলি/ লিটার জলে মিশিয়ে ১৫ দিন পরপর ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করতে হবে।

আরও পড়ুন - Pabda Fish Farming - পাবদার মিশ্রচাষে অনন্য উদ্ভাবন “মাটির কলসি” কৌশল

আদা সংগ্রহ ও সংরক্ষণঃ

কন্দ রোপণের প্রায় ৯-১০ মাস পর পাতা এবং গাছ হলুদ হয়ে শুকিয়ে যায়। সাধারণত ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে কোদাল দিয়ে মাটি আলাদা করে আদা উত্তোলন করা হয়। ফসল সংগ্রহের পর মাটি পরিষ্কার করে আদা সংরক্ষণ করা হয়।

আদা উঠানোর পর ছায়াযুক্ত স্থানে বা ঘরের মেঝেতে গর্ত করে গর্তের নিচে বালির ২ ইঞ্চি পুরু স্তর করে তার উপর আদা রাখার পর বালি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। পরে খড় বিছিয়ে দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। এতে আদার গুণাগুণ এবং ওজন ভালো থাকে।

আদার ফলনঃ

উন্নত পদ্ধতিতে আদার চাষ করলে হেক্টরপ্রতি ২০ থেকে ২৫ টন ফলন পাওয়া যাবে।

আরও পড়ুন - Terrace Farming – জেনে নিন ছাদবাগানের জন্য মাটি প্রস্তুতি, গাছ রোপণ ও সার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে

English Summary: Learn how to cultivate ginger through sustainable management
Published on: 15 September 2021, 04:50 IST