এই 20টি ব্যবস্থা পোল্ট্রি খামারকে বার্ড ফ্লু থেকে নিরাপদ রাখবে! ভার্মি কম্পোস্ট ইউনিটের জন্য ৫০% পর্যন্ত ভর্তুকি পাওয়া যাবে, শীঘ্রই আবেদন করুন এই হাইব্রিড জাতের টমেটো 900 কুইন্টাল প্রতি হেক্টর ফলন দেবে দুধের সঠিক সময় বেছে নিলে উৎপাদন বাড়বে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
Updated on: 17 May, 2021 2:48 PM IST
Maize field (Image Credit - Google)

ভুট্টাকে তণ্ডুল ফসলের রানি বলা হয় | ভুট্টা সারাবছরই অর্থাৎ গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত সব ঋতুতেই চাষ করা যায়। লাভজনক এই চাষের ব্যাপারে বলেছেন বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের(Bidhan Chandra Krishi Viswavidyalaya)সহকারী অধ্যাপক ড. শ্যামলী দাস। সাধারণত, বছরভর সারা ভারতে প্রায় ১০ মিলিয়ন হেক্টরের বেশি জমিতে ভূট্টা চাষ (Maize cultivation) করা হয় যার গড় ফলন মোটামুটি ২৫০০ কেজি প্রতি হেক্টরে | ভুট্টা সারাবছরই অর্থাৎ গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত সব ঋতুতেই চাষ করা যায়।

সব মরশুমেই ভুট্টা চাষের উপযোগী। মুরগির খাবারের উপাদান হিসাবে ৬০ শতাংশের বেশি ভুট্টার দানা থাকে। সেই ক্ষেত্রে আমাদের রাজ্যে প্রতিদিন আজকের হিসাবে প্রায় ২০-২৫ লাখ মেট্রিক টন ভুট্টাদানা শুধুমাত্র পোলট্রী খাবার তৈরিতেই প্রয়োজন হয়। এছাড়া শহর ও শহরতলির বাজারে বেবিকর্ন ও পপকর্ন এর চাহিদাও প্রচুর। তাই, কৃষকরা সারাবছর ভুট্টার চাষে ব্যাপক লাভবান হতে পারে |

জমি তৈরি (Preparation of Soil):

উঁচু ও মাঝারি জমিতে ভুট্টা ভাল হয়। তবে জলনিকাশী ব্যবস্থা যুক্ত বায়ু চলাচলে সক্ষম এমন হালকা বেলে, দোঁয়াশ এবং কাদা দোঁয়াশ মাটিতে ভুট্টা ভাল হয়। মাটিতে যথাযথ জৈব পদার্থ ও খাদ্যোপাদান থাকা বাঞ্ছনীয়। কারন ভুট্টা প্রচুর পরিমানে মাটির খাবার টেনে নেয়। সামান্য আম্লিক মাটিতে ভুট্টা চাষ ভাল হয়। মাটির অম্লতা ৬.৫ থেকে ৭.৫ হলে ভুট্টাচাষের উপযোগী।

চাষের সময়:

বছরের প্রায় সকল সময়েই ভুট্টা চাষ করা যায়। খারিফ, রবি, গ্রীষ্মকালীন ফসল হিসাবে বিভিন্ন জাতের ভুট্টা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় চাষ হয়। খারিফ চাষের জন্য ১৫ জুন-১৫ জুলাই (আষাঢ়), রবি চাষের জন্য ১৫ অক্টোবর(October)- ১৫ নভেম্বর(November) ( কার্ত্তিক) এবং গ্রীষ্মে সেচের জলে চাষের জন্য ১৫ ফেব্রুয়ারী(February) – ১৫ মার্চ(March) (ফাল্গুন) মাসে চাষ করা যায় |

বীজের পরিমান:

সারিতে বুনলে ৩ কেজি/ বিঘা এবং ছিটিয়ে বুনলে ৪-৫ কেজি/ বিঘা। সাধারণত  ৮০০০- ৮৫০০ গাছ প্রতি বিঘায় রাখা হয়।

বীজ শোধন:

বোনার আগে প্রতি কেজি বীজের সঙ্গে ২.০ গ্রাম কার্বেডাজিম বা ম্যানকোজেব জাতীয় ওষুধ মাখিয়ে ভাল করে শোধন করে নিতে হবে।

রোপণ পদ্ধতি (Planting method):

ছিটিয়ে বুনলে ৬-৭ টি গাছ প্রতি বর্গমিটারে এবং সারিতে বুনলে সারি থেকে সারি ও গাছ থেকে গাছ ২ ফুট x ৮ ইঞ্চি – ১ ফুট দূরত্বে লাগানো হয়। বোনার সময় বা ছিটিয়ে লাগানোর সময় একক এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমান গাছ যাতে থাকে সেই কথা মাথায় রাখতে হবে। সাধারণত ২ ফুট x ১ ফুট দূরত্বে ২-৩ টি করে বীজ ভুরোতে/ মাদায় লাগান হয় ১ ইঞ্চি গভীরে। বীজটি ভুরোর ডান দিকে ফেলা হয়। চারা বেরোনোর পর সব থেকে সবল চারাটি রেখে বাকিগুলো তুলে ফেলা হয়। ছিটিয়ে লাগান জমিতে ১০ দিন পর নিড়ান দিয়ে গাছের সংখ্যা বিঘা প্রতি ৮০০০- ৮৫০০ এর মধ্যে রাখা হয়।

সার প্রয়োগ:

জাতীয় ফসলের মধ্যে ভুট্টা সর্বাধিক ক্ষমতাসম্পন্ন ফলন দিতে পারে, সেই অনুযায়ী ভুট্টার যথোপযুক্ত খাদ্যোপাদান ও মাটিতে থাকা উচিত। উর্বর দোঁয়াশ পলিমাটিতে সর্বাধিক ফলন পাওয়া যায়। অন্যান্য জমিতে রাসায়নিক সার প্রয়োগে ভাল ফলন পাওয়া সম্ভব। পর্যাপ্ত পরিমানে জৈবসার প্রয়োগে গাছ ও ফলন দুইই ভাল হয়।বিঘা প্রতি মোটামুটি ১-১.৫ টন পচাসার ( অথবা পাওয়া গেলে ৬-৭ কুইন্টাল গোবরসার) বর্ষায় শেষ চাষের ১০-১৫ দিন আগে জমিতে দিলে ভাল। রাসায়নিক সার ৪০-৪৫ কেজি ইউরিয়া, ৫৫-৬০ কেজি সি. সু. ফ., ১৫ -২০ কেজি পটাশ এবং ২৫ কেজি জিঙ্ক- সালফেট মুল চাষের সময় মাটিতে দিলে ভালো। ইউরিয়া সার ৫ ভাগে দিলে যেমন ফলন বাড়ে তেমনি সারের ব্যবহার ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায় |

গাছের পরিচর্যা:

খারিফ চাষে ভুট্টার ক্ষেতে আগাছার উপদ্রব বেশি হয়। এক্ষেত্রে ৩০-৩৫ দিন পর্যন্ত জমির আগাছা নিয়ন্ত্রন করতে পারলে গাছের বৃদ্ধি আশানুরূপ হয় ও ফলন বৃদ্ধি পায়। ২০-২২ দিনের মাথায় সেচ দিয়ে নিড়ানি দিতে পারলে ভালো হয় । ছিটিয়ে বোনার ক্ষেত্রে একটি নিড়ানি ও চারা পাতলা করার প্রয়োজন তো থাকেই। সম্ভব না হলে চাষি ভাইয়েরা চারা বেরনোর আগেই অর্থাৎ বীজ বোনার সাথে সাথেই আগাছানাশক অ্যাট্রাজিন বিঘা প্রতি ২.৫ – ৩ গ্রাম প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ লিটার জলের সঙ্গে মিশিয়ে স্প্রে করতে পারেন। এতে ১০- ১৫ দিন আগাছা নিয়ন্ত্রনে থাকে।

আরও পড়ুন - জেনে নিন বাজরার সহজ চাষ পদ্ধতি

ভুট্টা চাষে লাভের পরিমান:

১ বিঘা ভুট্টা চাষে মজুর খরচ ধরে মোট ৮০০০-৯০০০ টাকা খরচ করলে ২৪০০০-২৬০০০ টাকা আস্ত ভুট্টা বিক্রি করে পাওয়া যায় এবং দানা হিসাবে বিক্রি করলে ৪০০ কেজি ভুট্টার দাম ৩৫ টাকা প্রতি কেজি হিসাবে প্রায় ১৪০০০ টাকা পাওয়া যায় মোটামুটি বিঘা প্রতি ৫০০০-৬০০০ টাকা খরচা করে। এছাড়াও ভুট্টার কাণ্ডটিকে গোবর মেখে রোদে শুকিয়ে অতি উৎকৃষ্ট মানের বছরভর জ্বালানি করা হয় যার চলতি বাজার দর কমপক্ষে ৬০০০-৭০০০ টাকা। ভুট্টার কাণ্ডটিকে কুমড়ো বা লাউ এর লতার মাচা হিসাবে ব্যবহার করলে বিঘা প্রতি প্রায় ২০০০-২৫০০ টাকা সাশ্রয় হয়।

তথ্যসূত্র: বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের(Bidhan Chandra Krishi Viswavidyalaya)সহকারী অধ্যাপক ড. শ্যামলী দাস

নিবন্ধ: রায়না ঘোষ

আরও পড়ুন - জানুন এলাচ চাষের জন্য কেমন মৃত্তিকার প্রয়োজন ও তার চাষের পদ্ধতি

English Summary: Learn the easy way to cultivate maize all year round
Published on: 17 May 2021, 02:47 IST

எங்களுக்கு ஆதரவளியுங்கள்!

প্রিয় অনুগ্রাহক, আমাদের পাঠক হওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার মতো পাঠকরা আমাদের কৃষি সাংবাদিকতা অগ্রগমনের অনুপ্রেরণা। গ্রামীণ ভারতের প্রতিটি কোণে কৃষক এবং অন্যান্য সকলের কাছে মানসম্পন্ন কৃষি সংবাদ বিতরণের জন্যে আমাদের আপনার সমর্থন দরকার। আপনার প্রতিটি অবদান আমাদের ভবিষ্যতের জন্য মূল্যবান।

এখনই অবদান রাখুন (Contribute Now)