'রাক্ষুসে মাছ'-বিপদ কোথায়? 'MFOI, VVIF কিষাণ ভারত যাত্রা' গুজরাটের বিভিন্ন গ্রামে পৌঁছে কৃষকদের সম্মানিত করেছে কাঁচা আম খেলে হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ হবে এবং এই সমস্যাগুলো দূর হবে!
Updated on: 7 June, 2021 11:59 AM IST
Pointed gourd (Image Credit - Google)

পটল একটি গ্রীষ্মকালীন জনপ্রিয় সব্জি। পটল Cucurbitaceae পরিবারের সব্জি যার ইংরেজি নাম  Pointed gourd এবং বৈজ্ঞানিক নাম Trichosanthes dioica। গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে যখন সব্জির অভাব দেখা দেয় তখন পটল একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সব্জি হিসেবে কাজ করে। জাতভেদে পটোলের ফলন প্রতি হেক্টরে ৪ টন থেকে ১৫ টন পাওয়া যায়। এছাড়া, বাজারে এই সব্জির চাহিদা প্রচুর থাকায়, পটল চাষ (Parwal Cultivation) করে কৃষকরা লাভবান হয়ে থাকেন |

বিভিন্ন অঞ্চলে পটলের বিভিন্ন জাত দেখা যায়।  যেমন- লম্বা ও চিকন, খাটো ও মোটা, গাঢ় সবুজ থেকে হালকা সবুজ। ডোরা কাটা ও ডোরা কাটা বিহীন, পুরু ত্বক থেকে হালকা ত্বক। তবে জেনে নিন, এই চাহিদা সম্পন্ন সব্জির চাষ পদ্ধতি;

মাটি ও জলবায়ু (Soil and Climate):

উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু পটল চাষের জন্য উপযোগী | বেশি তাপমাত্রা ও সূর্যালোকের প্রয়োজন। বন্যামুক্ত ও জল  জমে না এমন বেলে দো-আঁশ বা দো-আঁশ মাটি পটল চাষের জন্য ভাল। নদীর তীরে পলিযুক্ত মাটিতেও পটল চাষ করা যায়।

চাষের সময়:

আগস্ট মাসেও পলিব্যাগে চারা তৈরী করা হয় | যাতে ডিসেম্বরে বাজারে বিক্রি করা যায় | এছাড়া, অক্টোবর থেকে  নভেম্বর অথবা ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাস পটল রোপণের উপযুক্ত সময়। পটল চাষের কথা চিন্তা করলে অক্টোবর মাসের আগেই জমি তৈরি করতে হবে। মাটিতে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা না থাকলে শাখা কলম শুকিয়ে মারা যায়। এ ক্ষেত্রে পলিব্যাগে শাখা কলম লাগানোর মাধ্যমে চারা গজিয়ে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। এতে তীব্র শীত পড়ার আগেই গাছের অঙ্গজ বৃদ্ধি হয়।কারণ এগুলো ফেব্রুয়ারি -মার্চ মাসে বাজারে চলে আসে।

জমি তৈরী (Land preparation) :

প্রথমে মাটি ভালো করে চাষ দিয়ে নিতে হবে। জমিকে ৪-৫টি আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে ও সমান করে নিতে হবে। বেড পদ্ধতিতে পটল চাষ করলে ফলন ভালো হয় এবং বর্ষাকালে ক্ষেত নষ্ট হয় না। সাধারণত একটি বেড ১.০-১.৫ মিটার চওড়া হয়। বেডের মাঝামাঝি ১ মিটার থেকে ১.৫ মিটার বা ২ হাত থেকে ৩ হাত পর পর মাদায় চারা রোপণ করতে হয়। ১  বেড থেকে আর ১  বেডের মাঝে ৭৫ সেমি. নালা রাখতে হবে। মাদা বা পিট তৈরির ক্ষেত্রে, মাদা বা পিটের আকার- দৈর্ঘ্য- ৫০ সেমি. প্রস্থ- ৫০ সেমি. গভীরতা- ৪০ সেমি. নালা- ৭৫ সেমি।

মাদা থেকে মাদার দূরত্ব -

১.০-১.৫ মিটার। মাদায় গাছের দূরত্ব-৭.০-১০.০ সেমি, গভীরতা-৫০ সেমি,মোথার সংখ্যা ১০,০০০/হেক্টর। সঠিকভাবে পরাগায়নের ক্ষেত্রে ১০% পুরুষ জাতের গাছ লাগানো উচিত অর্থাৎ ১০টি স্ত্রী গাছের জন্য ১টি পুরুষ গাছ লাগানো উত্তম এবং এসব গাছ ক্ষেতের সব অংশে সমানভাবে ছড়িয়ে লাগানো উচিত।

সার প্রয়োগ (Fertilizer):

পটল দীর্ঘমেয়াদি ফসল। এজন্য জুন মাস থেকে ফসল সংগ্রহের পর পর্যন্ত প্রতি মাসে একবার শতকে ৭৫ গ্রাম ইউরিয়া, ১০০ গ্রাম টিএসপি ও ৬০ গ্রাম এমওপি সার বেডের মাটিতে ছিটিয়ে মিশিয়ে সেচ দিলে ভালো হয় এবং ফলন বৃদ্ধি পায়।

মাচা তৈরী:

পটল যেহেতু লতানো প্রকৃতির উদ্ভিদ, তাই এগুলো মাটির ওপর কিংবা খড় বিছিয়ে উৎপাদন করলে গায়ে সাদা সাদা ফ্যাকাসে বা হলুদ বর্ণের হয়ে পড়ে। এতে পটোলের বাজার মূল্য কমে যায়। মাচা সাধারণত দু ধরনের হয় – বাঁশের আনুভূমিক মাচান ও রশি দিয়ে তৈরি উলম্ব মাচা। তাই, মাচায় চাষ করলে ভালো |

রোগবালাই ও দমন (Disease management system):

মাছি পোকা:

ফলের মাছি পোকা কচি ফলের ভেতর ছিদ্র করে ও ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। এরা ফলের নরম অংশ খেয়ে পূর্ণ বয়স্ক পোকা বের হয়ে আসে।

প্রতিকার:

ক্ষেত পরিষ্কার রাখতে হবে। পোকা দমনে ফাঁদের ব্যবহারও ব্যাপক জনপ্রিয়। বিষটোপ আরেকটি জরুরি দমন উপাদান। এ ছাড়া ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার করে পোকামাকড় দমন করা সম্ভব। আক্রমণ মারাত্মক হলে সবিক্রন ২ মিলি/লিটার বা সাইপারমিথ্রিন ১ মিলি/লিটার বা এসিমিক্স ১ মিলি/লিটার জলে  মিশিয়ে ৭-১০ দিন পরপর ৩-৪ বার স্প্রে করেও ভালো ফল পাওয়া যায়।

লাল মাকড় :

আক্রান্ত পাতা শক্ত চামড়ার মতো হয় এবং পাতা বিবর্ণ হয়ে ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। লাল মাকড় আকারে অত্যন্ত ছোট হয়। এরা পাতার নিচের দিকে অবস্খান করে। এদের আক্রমণে পাতা শক্ত চামড়ার মতো হয়ে কুঁকড়ে যায়। ব্যাপক আক্রমণের ফলে সম্পূর্ণ পাতা হলুদ ও বাদামি রঙ ধারণ করে এবং ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। ফলে গাছের বৃদ্ধি কমে যায় এবং ফলন অনেক কমে যায়।

প্রতিকার:

পটল ক্ষেত পরিষ্কার রাখতে হবে। ১ কেজি আধা ভাঙা নিমবীজ ১০ লিটার জলে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে ওই জল পাতার নিচের দিকে স্প্রে করতে হবে। আক্রমণের হার বেশি হলে ওমাইট বা টলস্টার (প্রতি লিটার জলে ২ মিলি মিশিয়ে), ইবামেকটিন গ্রুপের ভার্টিমেক ১.২ মিলি/লিটার বা একামাইট ২ মিলি/ লিটার জলে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পরপর স্প্রে করতে হবে। 

আরও পড়ুন - Tuberose Cultivation: রজনীগন্ধা চাষের খরচ কমাতে ও ফলন বৃদ্ধিতে পলিথিন ব্যবহার করুন

ফসল সংগ্রহ:

কচি অবস্থায় সকাল অথবা বিকালে পটল সংগ্রহ করতে হবে । সাধারণত জাতভেদে ফুল ফোটার ১০-১২ দিনের মধ্যে পটল সংগ্রহের উপযোগী হয়। পটল গাছে ফেব্রুয়ারি থেকে ফল ধরা শুরু হয়ে অক্টোবর পর্যন্ত মোট নয় মাস সংগ্রহ করা যায়।

নিবন্ধ: রায়না ঘোষ

আরও পড়ুন - Cardamom farming - এলাচ চাষ করে প্রতি বিঘায় আয় করুন ১০ লক্ষ টাকা

English Summary: Pointed Gourd Farming: How to cultivate Patal? Learn great strategies
Published on: 07 June 2021, 11:59 IST

எங்களுக்கு ஆதரவளியுங்கள்!

প্রিয় অনুগ্রাহক, আমাদের পাঠক হওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার মতো পাঠকরা আমাদের কৃষি সাংবাদিকতা অগ্রগমনের অনুপ্রেরণা। গ্রামীণ ভারতের প্রতিটি কোণে কৃষক এবং অন্যান্য সকলের কাছে মানসম্পন্ন কৃষি সংবাদ বিতরণের জন্যে আমাদের আপনার সমর্থন দরকার। আপনার প্রতিটি অবদান আমাদের ভবিষ্যতের জন্য মূল্যবান।

এখনই অবদান রাখুন (Contribute Now)