কৃষিজাগরন ডেস্কঃ গুজরাট ও হিমাচল প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘন্ট বেজে গেছে।নির্বাচনের দিন ঘোষনা হওয়ার পরেই মুখ্য নির্বাচন কমিশন প্রলোভনমুক্ত ভোট করার পক্ষে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার ঐ দুই রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা বলবৎকারী সংস্থাগুলিকে এক্ষেত্রে বিশেষ সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
ঐ দুই রাজ্যে আদর্শ নির্বাচন আচরণ বিধি জারি হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি নজরদারি আরও কঠোর করেছে। ইতিমধ্যে স্পর্শকাতর কেন্দ্রগুলিতে নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে।
নির্বাচন ঘোষিত হওয়ার পর মাত্র কয়েক দিনেই গুজরাটে ভোটারদের প্রভাবিত করার জন্য ৭১ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকার নগদ ও অন্যান্য সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।পিআইবির রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৭ সালে বিধানসভা নির্বাচনে মোট ২৭ কোটি ২১ লক্ষ টাকা অন্যান্য সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।
হিমাচল প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার পর্ব শেষ হয়েছে। ঐ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৫০ কোটি ২৮ লক্ষ নগদ অর্থ ও অন্যান্য সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়। গত বিধানসভা নির্বাচনে বাজেয়াপ্ত নগদ অর্থ ও অন্যান্য সামগ্রীর পরিমাণ ছিল ৯ কোটি ৩ লক্ষ টাকা। গতবারের তুলনায় এবার পাঁচ গুণেরও বেশি নগদ অর্থ ও অন্যান্য সামগ্রী বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ কৃষি যন্ত্র কেনার জন্য ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দেবে রাজ্য সরকার
গুজরাট বিধানসভার নির্বাচনী নির্ঘন্ট ঘোষিত হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই ১ লক্ষ ১০ হাজার লিটার মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়, যার বাজার মূল্য ৩ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা। ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স মুন্দ্রা বন্দরে ৬৪ কোটি টাকারও বেশি খেলনা ও অন্যান্য সামগ্রী আটক করেছে। এই ঘটনায় ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ২৭টি বিধানসভা কেন্দ্রকে স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করেছে এবং এই কেন্দ্রগুলির উপর বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছে। গুজরাটে ৬৯ জন ব্যয় সংক্রান্ত পর্যবেক্ষককে কমিশন নিয়োগ করেছে।
নির্বাচনী প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার সময় মুখ্য নির্বাচন কমিশনার শ্রী রাজীব কুমার এবং নির্বাচন কমিশনার শ্রী অনুপ চন্দ্র পান্ডে হিমাচল প্রদেশে অবৈধ খনিজ সম্পদ ব্যবসা, মদ এবং নগদ অর্থ লেনদেনের উপর বিশেষ নজরদারি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। হিমাচল প্রদেশ ও পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলিতে আয়কর দপ্তরের তদন্তকারী শাখা ২৭টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে। পুলিশ, আবগারি দপ্তর সহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলি উপঢৌকন সামগ্রী, মদ ও অন্যান্য মাদক দ্রব্য বিপুল পরিমাণে বাজেয়াপ্ত করেছে। হিমাচল প্রদেশে ২৩ জন ব্যয় সংক্রান্ত পর্যবেক্ষক রয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ গ্রামে গ্রামে ঘুরে মাছ চাষের পাঠ পড়াচ্ছেন মৎস্য আধিকারিক সুমন কুমার সাহু
সম্প্রতি বিহার, ওডিশা, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশে যে ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন হয়েছে, সেখানে মোট ৯ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকার সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে তেলেঙ্গনার মুনুগোড়ে বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে হাজার হাজার লিটার মদ, ১ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকার মূল্যবান ধাতু সহ বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এর মোট বাজার মূল্য ৬ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা।
নির্বাচন কমিশন ৭ নভেম্বর হিমাচল প্রদেশ ও পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির মুখ্য সচিব, প্রধান সচিব (স্বরাষ্ট্র), পুলিশের মহানির্দেশক, আয়কর দপ্তরের মহানির্দেশক, আবগারি বিভাগের কমিশনার এবং রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে ভোটারদের যাতে কোনোভাবে প্রভাবিত না করা হয়, সে বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এই নজরদারি চলবে।