গতবছর আমফানের তান্ডবে ফুল ব্যাবসায় এক বিরাট ধাক্কা এসেছিলো | সমস্ত ফুলগাছ কার্যত মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছিলো | ফের গাছ লাগিয়ে এক বছর ধরে পরিচর্যা করায় এখন আবার ফুল মিলছে। বিক্রিও হচ্ছে কিছুটা। কিন্তু এই বছরও যদি ঘূর্ণিঝড়ের (cyclone yass) দাপট একই রকম থাকে, তা হলে যে লোকসানের সম্মুখীন হতে হবে, সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো খুবই কঠিন| এই আশঙ্কায় চাষীরা!
ফুলচাষিরা জানাচ্ছেন, গত বার আমফানের সময়ে করোনার জন্য পুরো লকডাউন ছিল। ফলে বাজারে ফুলের বিক্রি কার্যত ছিল না। চাষিদের বাগান থেকে ফুল তুলে ফেলে দিতে হচ্ছিল। সেই অবস্থায় আমফানের ধাক্কায় ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ফুলের ব্যবসা (flower farming)। চাষীদের মতে, এবারও যদি আগের বারের মতো ক্ষতি হয় তবে তাদের পক্ষে ব্যবসা চালানো কঠিন হয়ে পড়বে |
ফুল চাষের জেলা (Flower cultivation district) :
চাষিরা জানাচ্ছেন, ফুলচাষের মূল জেলাগুলি হল পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং নদিয়া। এই জেলাগুলির মধ্যে বিশেষ করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা এবং হাওড়ার উপরে যদি ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বেশি পড়ে তা হলে এই বছরও ফুলচাষের ক্ষতি হবে। শুধু ঝড় নয়, প্রবল বৃষ্টির জেরেও ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে ফুল চাষে |
সাধারণত বেশিরভাগ ফুল গাছই নরম প্রকৃতির গাছ | ইয়াস যতটা শক্তিশালী হবে, তাতে কোনো গাছই বেঁচে থাকবেনা | সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, ঘূর্ণিঝড় নিয়ে তথ্য থাকলেও গাছ বাঁচানোর কোনও উপায় নেই। চাষিরা তাই অসহায়। ঝড় এলে চোখের সামনে বাগান নষ্ট হতে দেখা ছাড়া তাঁদের আর কিছুই করার নেই। এই ঘূর্ণিঝড়ে যদি ফের চাষীদের লোকসান হয়, তবে তাদের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো খুবই মুশকিল হয়ে পড়বে |
এমনিতেই দেশজুড়ে , করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে কিন্তু তাতেও পূর্ণ লকডাউন নেই | অন্তত ৩ ঘন্টা তারা ফুল বিক্রি করতে পারছেন | কিন্তু, এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ফুল চাষের ক্ষতির আশঙ্কায় মাথায় হাত চাষীদের | কিভাবে তারা ফের চাষ শুরু করবে নাকি পেটের ভাত জোগাবে? ফুল-চাষীরা হতাশাগ্রস্ত!
নিবন্ধ: রায়না ঘোষ