পুজোর মাসে আট দিন হবে দুয়ারে রেশনের পাইলট প্রজেক্ট বা পরীক্ষামূলক প্রকল্পের কাজ। এমনটাই জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। গত বৃহস্পতিবার রেশন ডিলারদের সংগঠন ‘অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশন -এর পক্ষ থেকে খাদ্যমন্ত্রীকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সেই চিঠিতে খাদ্যমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের রেশন ডিলাররা অনুরোধ করেছিলেন, দুয়ারে রেশন পাইলট প্রকল্পের কাজ অক্টোবর মাসে বন্ধ রাখতে। নভেম্বর মাস থেকে তা শুরু করতে অনুরোধ জানানো হয়েছিল।
কারণ হিসাবে তাঁরা জানিয়েছিলেন, অক্টোবর মাস জুড়ে রাজ্যে উৎসবের মরসুম থাকে। রেশন ডিলার-সহ উপভোক্তারা থাকেন উৎসবের মেজাজে। দোকানে কর্মীরা আসতে চান না। তাই কোনও ভাবেই রেশন দোকান মারফত এই প্রকল্পের কাজ সম্ভব নয়। কিন্তু তাঁদের এমন যুক্তি মানতে রাজি নয় খাদ্য দফতর। তাই অক্টোবর মাসের কর্মদিবসগুলি ঘোষণা করে দিয়েছে তারা।
দুয়ারে রেশন প্রকল্পের কাজ পুজোর পর অক্টোবরের ১৭ তারিখ থেকে শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে। ২১, ২২, ২৪, ২৬ থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত এই প্রকল্পের কাজ হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী রথীন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আগেই জানিয়ে ছিলাম এই প্রকল্পের কাজ কোনও ভাবেই থামানো যাবে না। পুজোর কথা ভেবে দিনগুলি স্থির করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যাতে রেশন ডিলারদেরও সমস্যা না হয়, সে কথাও মাথা রেখে পুজোর দিনগুলি বাদ রাখা হয়েছে। পুজোর মরসুম শেষ হলেই দফতর আবার কাজের দিনের সংখ্যা বাড়িয়ে দেবে।’’
সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ তারিখ থেকে রাজ্যের ১৫ শতাংশ রেশন ডিলারকে নিয়ে পরীক্ষামূলক প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়েছিল। অক্টোবরে আরও ৩৫ শতাংশ রেশন ডিলারকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে বলে খাদ্য দফতর সূত্রে খবর। সব মিলিয়ে অক্টোবরে রাজ্যের ৫০ শতাংশ রেশন ডিলার দুয়ারে রেশনের পরীক্ষামূলক প্রকল্পের আওতায় আসছেন। নভেম্বর মাস থেকে সব রেশন ডিলারকে এই প্রকল্পের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে খাদ্য দফতরের। তবে পুজোর মাসে দুয়ারে রেশন প্রকল্প সামিল হতে নারাজ রাজ্যের ডিলারদের একাংশ।
আরও পড়ুন -Weather forecast: টানা দুদিন ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা, দেখে নিন কোন কোন জেলায় বৃষ্টির সংকেত
১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল এই পাইলট প্রজেক্ট | বর্তমানে রেশন সামগ্রীর কুইন্টাল প্রতি ডিলারদের ৭৫ টাকা কমিশন দেয় রাজ্য সরকার। তবে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পে তা বাড়িয়ে ১৫০ টাকা করার ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও ডিলার সংগঠনের একাংশের দাবি, কুইন্টাল প্রতি ২০০ টাকা কমিশন দিতে হবে । যদিও রেশন ডিলার সংগঠনদের অন্য একটি অংশ, রাজ্য সরকারের শর্ত মেনেই বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দিতে প্রস্তুত ছিল শুরু থেকেই। রাজ্যে মোট রেশন ডিলার রয়েছেন ২০ হাজার ২৮৬ জন।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ১৫ শতাংশ রেশন দোকান নির্দিষ্ট করা হয়েছে। সেখান থেকে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাবে রেশন সামগ্রী। খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ জানিয়েছেন, পরীক্ষামূলকভাবে পাইলট প্রজেক্টে খতিয়ে দেখা হবে সুবিধা-অসুবিধা। এরপর সেই অনুযায়ী পরিস্থিতি বিচার করে পুরোদমে চালু করা হবে দুয়ারে রেশন প্রকল্প।উত্তর ২৪ পরগণায় প্রাথমিকভাবে ১৭১টি রেশন দোকান থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন পৌঁছে দেওয়া শুরু হয়েছে। সকাল থেকেই টোটো নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন মধ্যমগ্রাম বীরেশ পল্লির রেশন ডিলার। খাদ্য দফতরের আধিকারিক ও পুলিশের উপস্থিতিতে শুরু হয় দুয়ারে রেশনের পাইলট প্রজেক্টের কাজ।
সূত্রের খবর, উপযুক্ত পরিমাণে খাদ্যশস্য উপভোক্তাকে দিতে হবে ই–পাস যন্ত্রের মাধ্যমে। সেখানে বায়োমেট্রিকের মাধ্যমে রেশন গ্রহণ করা যাবে। আবার উপভোক্তার মোবাইল ফোনে পাওয়া ‘ওটিপি’ দেখিয়েও সেই কাজ করা হবে। মোবাইল সংযোগের সমস্যা হলে তা নিশ্চিত করতে সরকার শক্তিশালী ইন্টারনেট পরিষেবাযুক্ত সিম ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছে রেশন ডিলারদের। এমনকী বাড়িতে পৌঁছনো রেশন কোনও কারণে কেউ সংগ্রহ করতে না পারলে তা রেশন দোকান থেকে পরে নেওয়া যাবে।
আরও পড়ুন -SSC Group-C recruitment: গ্রুপ- সি কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত, দেখুন বিস্তারিত তথ্য