বাংলাদেশের রাজশাহীতে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ । তবে শুরুতেই দেখা দিয়েছে শ্রমিক-সংকট। অতিরিক্ত ধান দিয়েও কাটা ও মাড়াইয়ের শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন চাষিরা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, এখনো ধান কাটা পুরোদমে শুরু হয়নি। তাই শ্রমিকেরা কাজ শুরু করেননি। ধান পুরোপুরি কাটা শুরু হলে শ্রমিক-সংকট থাকবে না বলেও জানা গেছে ।
রাজশাহী কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এ বছর ৬৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। কিছু জমির ধান কাটা শুরু হয়েছে এক সপ্তাহ আগেই। তবে ফলন কেমন হচ্ছে তা এখনো নিশ্চিত নয় কৃষি বিভাগ। তবে কয়েকজন চাষি জানিয়েছেন, এবার ফলন কম। আর সে কারণেই শ্রমিক-সংকট দেখা দিয়েছে। শ্রমিকেরা ধান কাটা বাদ দিয়ে রাজশাহী শহরে গিয়ে দিনমজুরের কাজ করছেন।
বাংলাদেশে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাংলাকান্দর রাস্তার ধারে শুক্রবার বিকেলে কাটা ধান একাই আঁটি বাঁধছিলেন হৃদয় আলী (৩০)। তিনি মূলত নলকূপের মিস্ত্রি। এবার নিজের এক বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। কিন্তু কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। তাই নলকূপের কাজ বাদ দিয়ে এক চাচাতো ভাইকে নিয়ে নিজেরাই ধান কেটেছেন।
আরও পড়ুনঃ সোনালী ধানের মাঝে উঁকি মারছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, এবার ধানের ফলন কম । সে জন্য শ্রমিকেরা ধান কাটতে চাইছেন না । আগে ছয়-সাতজন শ্রমিক এক বিঘা ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করে দিলে প্রায় আড়াই মণ ধান দিতে হতো । কিন্তু এবার শ্রমিকেরা সাড়ে চার মণ চাইছেন । তা-ও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না । ধানের বদলে টাকা দিলে একজন শ্রমিককে এখন একবেলার জন্যই দিতে হচ্ছে ৪০০ টাকা । গত বছর শ্রমিকের এই পারিশ্রমিক কম ছিল।
আরও পড়ুনঃ ডেইরি ফার্মিং ব্যবসা শুরু করে আপনি লাখ লাখ টাকা আয় করতে পারেন, এভাবে শুরু করুন
বরেন্দ্র অঞ্চলে ধান লাগানো থেকে কাটা-মাড়াইয়ের বেশির ভাগ শ্রমিকই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর । কয়েক বছর ধরে তাঁরা রাজশাহী শহরে গিয়ে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়নকাজের শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। ফলে গ্রামে ধান কাটার শ্রমিক-সংকট দেখা দিচ্ছে ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন এক সংবাদপত্রকে জানান, কেবল ধান কাটা শুরু হয়েছে। এখনই শ্রমিক-সংকট বলা যাবে না। কারণ রাজশাহীর ধান কাটেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শ্রমিকেরা। তাঁরা এখনো আসেননি। এক বিঘা ধান কেটে তো তাঁরা বসে থাকবেন না। সব জমির ধান পাকলে ওই শ্রমিকেরা আসবেন ।