আজ ন্যাশনাল ফিশ ফার্মার্স ডে। বিজ্ঞানীদের মতে যারা বেশী মাছ খায় তাদের স্মরণশক্তি ও বোঝার ক্ষমতা প্রখর হয়। তার কারণ হিসেবে বলা হয়ে থাকে যে, মাছে বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছে মেধা বৃদ্ধিকারক ডি.এইচ.এ (Docosahexaenoic acid) নামক এক ধরণের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা মাছের তেলে যথেষ্ঠ পরিমাণে থাকলেও অন্যান্য আমিষ জাতীয় খাদ্যে খুব একটা পাওয়া যায় না।
মাছের তেলে ওমেগা থ্রি এম নামে এক ধরনের অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড আছে যা রক্তের অণুচক্রিকাকে জমাট বাঁধতে বাধা দেয়। ফলে রক্তনালী বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা কমে যায়। বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছের তেল রক্তে কোলেস্টেরল কমায়, ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়। এছাড়া মাছের কোলেষ্টেরলও মানুষের দেহের জন্য ক্ষতিকারক নয়।
ন্যাশনাল ফিশ ফার্মার্স ডে- এর ইতিহাস (History Of This Day) -
১৯৯৭ সালের প্রথম দিকে ওয়ার্ল্ড ফিশারি কনসোর্টিয়ামের জন্য একটি ফোরাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই ফোরামটি ডাব্লুএফএফ (ওয়ার্ল্ড ফিশারি ফোরাম) নামে পরিচিত ছিল। এই ফোরামের অধীনে, সারা বিশ্ব থেকে বহু অংশগ্রহণকারী সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিল।
এর ফলে ফিশিংকে বাণিজ্য ও বাণিজ্যের মাধ্যম হিসাবে কার্যকর করার জন্য উচ্চতর উন্নয়নমূলক পদ্ধতি এবং নীতি নির্দেশিকা চিহ্নিত করার জন্য টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল।
ন্যাশনাল ফিশ ফার্মার্স ডে ২০২১, থিম (Theme, 2021) -
ন্যাশনাল ফিশ ফার্মার্স ডে ২০২১ এ একটি উদ্ভাবনী থিম রাখা হয়েছে, যা মৎস্য শিল্প, প্রকৃতি এবং পরিবেশের সঠিক সংমিশ্রণ এবং জীববৈচিত্র্যের উপর আরও বেশি মনোনিবেশ করে।
২০২১, ন্যাশনাল ফিশ ফার্মার্স ডে-এর তাৎপর্য (Significance Of This Day) -
মাছ বিশ্বের বহু মানুষের ঐতিহ্যবাহী খাবার। উপকূলীয় অঞ্চলে এবং সমুদ্রের কাছাকাছি অঞ্চলে বসবাসকারী লোকেরা তাদের প্রধান খাবারের অংশ হিসাবে মাছ গ্রহণ করে। এই দিনটি পালনের মাধ্যমে ব্যবসায়ের জন্য ভবিষ্যতের লক্ষ্য এবং মাইলফলক নির্ধারণ করে।
ন্যাশনাল ফিশ ফার্মার্স ডে ২০২১, উদযাপন (Celebration of this day) -
মৎস্যজীবী সম্প্রদায়গুলি মাছ ধরা শিল্পের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় দিনটি উদযাপন করে। সুবিন্যস্ত সমাবেশ এবং মিছিলের মাধ্যমে এই দিনটিতে আলোকপাত করা হয়। অনেকগুলি অন্তর্নিহিত বিভাগ সহ মৎস্য শিল্প এক বিস্তৃত বাণিজ্য শিল্প।
ছোট মাছের উপকারিতা (The benefits of small fish) -
ছোট মাছ আকারে ছোট হলেও পুষ্টিতে ছোট নয়। ছোট মাছে আছে প্রচুর ক্যালসিয়াম। কাঁটাসহ ছোট মাছ ক্যালসিয়ামের এক অনন্য উপাদান। তাই ছোট মাছ খাওয়ার আর একটা বিশেষ দিক হলো যে, এই সব ছোট মাছ কাঁটাসহ খাওয়া যায়, তা থেকে আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম পেতে পারি। মৌরলা, ঢেলা, চাঁদা, পুঁটি, ছোট চিংড়ি ইত্যাদি জাতীয় মাছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং ভিটামিন ‘এ’ বিদ্যমান। মানবদেহে দৈনিক প্রচুর ক্যালসিয়ামের চাহিদা থাকে। বিশেষ করে বাড়ন্ত শিশু, গর্ভবতী মা এবং প্রসূতি মায়েদের ক্যালসিয়ামের চাহিদা আরও বেশি। হাড় ও দাঁত গঠনে ক্যালসিয়াম অত্যন্ত দরকারি। তাই প্রতিদিন আমাদের ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ ছোট মাছ খাওয়া উচিত।
উঠতি বয়সী শিশুদের জন্য প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি-৩ এবং ভিটামিন ডি যুক্ত গুঁড়া মাছ খুবই উপকারী। ছোট মাছে অসম্পৃক্ত চর্বি আছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এ ছাড়া আয়রন, প্রোটিন, ফসফরাস, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি২, ফ্যাটি অ্যাসিড, লাইসনি ও মিথিওনিনেরও ভাল উৎস ছোট মাছ।
তাই বলা যায় যে প্রাণিজ আমিষের মূল যোগানদাতা মাছ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করলে শরীরের প্রোটিনের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ফলশ্রুতিতে শরীর সুস্থ থাকার সম্ভাবনাও বাড়বে। আর বলা হয়ে থাকে সুস্থ দেহে সুস্থ মন ।
যাইহোক , আসুন আমরা একদিকে যেমন মাছের স্বাস্থ্যকর ও রোগপ্রতিরোধক বিষয়ে অবগত হয়ে এই করোনা অতিমারির মতো সকল বিষয়ে লড়াই করব তেমন জলাভূমি সংরক্ষণ সহ পরিবেশ সচেতন ভূমিকা পালন করি। আর এর সাথে ভূলবনা সেসব মৎস্যচাষি, মৎস্যজীবী যারা নিরলস ভাবে পরিশ্রমের ফসল ফলাচ্ছে।
কৃষি জাগরণের পক্ষ থেকে সকলকে ন্যাশনাল ফিশ ফার্মার্স ডে'র শুভেচ্ছা জানাই।
আরও পড়ুন - Delta Variant Fear: আতঙ্কের অন্য নাম ডেল্টা ভ্যরিয়েন্ট!