
হিং ভারতীয় মশলার মধ্যে একটি শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকার করে। ভারতীয় উপমহাদেশের অনেক খাদ্যের মধ্যেই এই হিঙের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। আফগানিস্তান, তুর্ক্মেনিস্তান ছাড়াও কাজাকস্তান থেকেও ভারতে হিঙের আমদানি করা হয়ে থাকে। এখন ভারতে হিং চাষের অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে কারণ ভারত চায় না খুব বেশিদিন এই মশলার জন্য অন্য কোনো দেশের মুখাপেক্ষী থাকুক। আই এফ রিপোর্ট অনুসারে, বাইরের দেশে যত পরিমাণ হিং উৎপন্ন হয়, তার মধ্যে ৪০ শতাংশ হিং এই ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যবহার করা হয়। হিঙের এত চাহিদা এই দেশে রয়েছে, তা সত্ত্বেও ভারতে কোনো জায়গায় হিঙের চাষ হতো না, কিন্তু বর্তমানে হিমাচল প্রদেশ ভারতের প্রথম হিং উৎপাদনকারী রাজ্য হিসাবে পরিগণিত হয়েছে। আসলে হিমাচলের লাহৌল স্পিতি ও কিন্নৌর নামক স্থানে তুর্কীস্তান থেকে হিঙের বীজ এনে চাষের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
হিঙের গাছ কেমন হয় এবং সেখান থেকে কীভাবে হিং বের হয়
আসলে হিং গাজর প্রজাতির একটি ক্ষুদ্র গাছ বিশেষ। এই গাছ মোটামুটি পাঁচ বৎসর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। এই একেকটি হিঙের গাছ থেকে আধ থেকে এক লিটার হিং-এর দুধ নির্গত হয়। এই দুধ থেকেই হিং বানানো হয়।
বাজারে প্রাপ্ত অশুদ্ধ হিং
একটি সহজ অনুমান থেকে বলা যাচ্ছে যে, বাজারে যে হিং পাওয়া যায় তা একেবারেরই অশুদ্ধিতে ভরা। এতে হিঙের সাথে ৮০ থেকে ৯৫ শতাংশ আটা মিশিয়ে বাজারি হিং তৈরী করা হয়। এখন বাজারি হিঙের দাম কিলোপ্রতি ১৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকা চলছে। এতে কৃষকের লাভের পরিমাণ খুব বেশি হয়। কৃষি ও জনজাতিয় বিকাশ মন্ত্রী ডঃ রাম লাল মার্কডিয় বলেছেন নথিভুক্ত কৃষকদের উদয়পুর কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র থেকে হিঙের বীজ প্রদান করা হয়েছে। লাহৌল স্পিতি ও কিন্নৌর-এ এই হিঙের চাষ খুব ভালো হচ্ছে, অবশ্য কিনৌরে হিঙের চাষ অপেক্ষাকৃত বেশি হয়েছে। ওনার মতে লাহৌলের স্পিতি ও কিনৌরে যদি প্রচুর পরিমাণ হিং উৎপন্ন হয় তাহলে আগামী মরশুমে সারা দেশের বৃহত্তর স্তরে এই ফসল চাষের চিন্তাভাবনা করা যাবে।
- প্রদীপ পাল
Share your comments