ভগবানগোলার শতাধিক কৃষক কলাই বীজ কিনে প্রতারিত হয়েছেন, কলাই এর গাছ হয়েছে ফুল ফল কিছুই হয়নি, গাছ সব হলুদ

এ বছর কলাই এর নাম ছিল আকাশ ছোঁয়া। যখন যে ফসলের দাম বেশী হয় তখন চাষীরা -বিচার বিবেচনা না করে সেই ফসলের চাষ করেন বেশী বেশী করে।

Saikat Majumder
Saikat Majumder

এ বছর কলাই এর নাম ছিল আকাশ ছোঁয়া। যখন যে ফসলের দাম বেশী হয় তখন চাষীরা -বিচার বিবেচনা না করে সেই ফসলের চাষ করেন বেশী বেশী করে। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। বহু চাষী বলাই চাষ করে ঠকেছেন। দোকানদাররা না বুঝে সুঝে কলাই বীজ বিক্রি করে নিয়েছেন মোটা টাকা লাভের লোভে। এখন কৃষকরা বিপদে পড়েছেন। কলাই এর গাছ হয়েছে হাঁটু সমান উঁচু। দমদমে কলাই গাছ জমির মাটি দেখা যাচ্ছেনা, এত ভাগ গাছ হয়েছে। কিন্তু গাছে ফুলও নাই ফলও নাই। গাছের রঙ হলুন। দূর থেকেই হলুদ রঙের কলাই জমিতে দেখা যাচ্ছে। দিয়াড় শ্যামপুর, তেলিয়া, বেলিয়া, মহৎপুর এবং সুন্দরপুর মৌজাগুলিতে তিনশো (৩০০) বিঘারও বেশী কলাই এর এমন অবস্থা।

কৃষকরা প্রতিবেদককে জমিতে নিয়ে গিয়ে সরেজমিনে দেখালেন তাদের দুরাবস্থার কথা। অতি উচ্চ দাম থাকায় বীজ কোম্পানীগুলি এইসব কলাই বীজ উচ্চদামে বিক্রি করে ভালো মুনাফা করে নিয়েছেন। আর গ্রামের সাধারন গরীব কৃষকরা না বুঝে ১৪০-১৫০ টাকা কেজি দরে এই বীজ কিনে জমিতে চাষ করে এখন হাহুতাশ করছেন। দোকানদাররা কোন দায়িত্ব নিতে চাইছেনা। তারা বলছে আমরা তো মাল কিনে এনে বিক্রি করেছি। ভালো-মন্দের আমরা কিছু জানিনা। আমাদের কিছু করার নাই।

আরও পড়ুনঃ তিন মাসে ৬ লাখ টাকা মুনাফা, চিয়া বীজ চাষ করে ধনী হবেন কৃষক!

বেলিয়াশ্যামপুর গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম জানালেন তিনি ৫ বিঘা কলাই চাষ করেছেন। তার মধ্যে ৩ বিঘা জমির কলাইবীজ কিনেছিলেন স্থানীয় পিন্টু সেখ এবং কমল সেখের সার বীজের দোকান থেকে। এই বীজগুলি নকল। এগুলির ফুল ফল কিছুই হয়নি, গাছ গুলি সব হলুন। আর গ্রামের কৃষকের বাড়ি থেকে ২ বিঘা কলাই চাষ করেছেন সেগুলিতে ফুল ফল ধরেছে ভালো ভাবে, কোন সমস্যা নাই। বীজ কিনেছিলেন দোকান থেকে ১৪০ টাকা কেজি। গ্রাম থেকে ১৫০টাকা কেজি। বিঘায় চার কেজি করে কলাই বীজ লাগে।

শ্যামপুরের মানোয়ার হোসেন করেছেন ৩ বিঘা কলাই চাষ। তিনি স্থানীয় দোকান রফিকুলের লোকান থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে বীজ কিনেছিলেন। কলাই বুনেছিলেন ভাদ্রমাসের প্রথমেই। কলাই জমিতে দমদম করছে, মাটি দেখা যাচ্ছেনা এত ভাল গাছ হয়েছে। অথচ ফুল ফল কিছুই হয়নি গাছ হলুদ। গোয়ালারাও গোরু মোষ এর জন্য এই গাছ কিনছেনা। কারন এগুলি গোরু মোষে খাচ্ছেনা। এগুলি ভেতো তাই। এক বিঘা জমি পরিষ্কার করতে ৫-৬ টা মুনিশ লাগবে, মুনিশের রোজ ২৫০ টাকা করে, জানালেন মানোয়ার হোসেন। তার জমি থেকেই ছবি তোলা হল, ছবিতে মানোয়ার হোসেনকে দেখা যাচ্ছে, বলাই হলুদ। এ বছর সরকারী মিনিকিট দেওয়া হয়েছে কলাই এর। যদিও সেগুলি বেশীর ভাগই চাষ করা যায়নি। কারন বীজ যখন কৃষকরা পেয়েছেন তখন কলাই চাষ এর সময় ছিলনা।

আরও পড়ুনঃ সারের দাম লাগাম ছাড়া বৃদ্ধি,আমন চাষে বাড়তি কর গুনতে হচ্ছে চাষিদের

অল্প সংখ্যাক কৃষক যারা এই সরকারী মিনিকিটের চাষ করেছেন সেগুলিতে ফুলফল আসছে কোন সমস্যা নেই। শ্যামপুরের নজরুল ৫ বিঘা কলাই চাষ করেছেন তার মধ্যে ২ বিঘা ভাল বীজ। সেগুলিতে ফুল রুল এসেছে। ৩ বিঘা খারাপ বীজ যেগুলিতে ফুল ফল ধরেনি। কুড়ান মন্ডল জানালেন তিনিও আড়াই বিঘা কলাই চাষ করে প্রতারিত হয়েছেন। মহৎপুরের উড়ানি মন্ডল ২ বিঘা কলাই চাষ করে ঠকেছেন। দোকান দাররা কোন দায়িত্ব নিতে চাইছেনা এইসব প্রতারিত চাষীরা একত্রিত হয়ে A.D.A এবং B.D.O. কে গন ডেপুটেশন দিয়ে ক্ষতিপূরন পাবার জন্য তৈরী হচ্ছেন। পূজোর ছুটির পর অফিস খুললেই কৃষকরা A.D.A এবং B.D.O. কে তাদের প্রতারিত হবার কথা জানাবেন। ও জমি পরিদর্শন করে যাতে তারা ক্ষতিপূরন পান তার আবেদন জানাবেন বলে জানালেন।

Published On: 18 August 2022, 01:36 PM English Summary: Hundreds of farmers of Bhagbangola have been cheated by buying kalai seeds, kalai plants have flowered and fruited nothing, the trees are all yellow.

Like this article?

Hey! I am Saikat Majumder. Did you liked this article and have suggestions to improve this article? Mail me your suggestions and feedback.

Share your comments

আমাদের নিউজলেটার অপশনটি সাবস্ক্রাইব করুন আর আপনার আগ্রহের বিষয়গুলি বেছে নিন। আমরা আপনার পছন্দ অনুসারে খবর এবং সর্বশেষ আপডেটগুলি প্রেরণ করব।

Subscribe Newsletters