আজ ২১শে জুলাই,তৃণমুলের শহীদ দিবস। আর এই শহীদ দিবস উপলক্ষ্যে কলম ধরলেন মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায়।তৃণমুলের মুখপত্র জাগো বাংলাতে ১৯৯৩ সালের সেই ভয়াবহ দিনের স্মৃতি চারন করলেন মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায়।কিভাবে তার উপর হামলা করা হয়েছিল তা নিয়ে ‘জাগো বাংলা’ পত্রিকায় বিশেষ কলম লিখেছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘১৯৯৩ সালের ২১ জুলাইয়ের আগে ছাপ্পা ভোট, ভুয়ো ভোট হতো। আমরা সেদিন বলেছিলাম– ‘নো আই কার্ড, নো ভোট’। সচিত্র পরিচয়পত্র চাই। দেশে প্রথম আমরাই আওয়াজ তুলেছিলাম। শেষে নির্বাচন কমিশন এটা মেনে নিয়েছিল। ২১ জুলাই আমাদের শহিদদের প্রাণের বিনিময়ে এল ভোটারদের সচিত্র পরিচয়পত্র। আর ২১ জুলাই হয়ে থাকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে নিরপরাধ রাজনৈতিক কর্মীদের উপর আক্রমণের এক কালো দিন।’
আরও পড়ুনঃ Presidential Election 2022 Result:পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে?ফল ঘোষনা আর কিছুক্ষন পরেই
১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই মমতার ডাকে মহাকরণ অভিযানের জন্য কলকাতার রাজপথে নামেন কয়েক হাজার যুবকংগ্রেসকর্মী। রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক সচিবালয়ে এই অভিযান রুখতে তৎপর হয় পুলিশ। বিভিন্ন ক্রসিং-এ গড়া হয় ব্যারিকেড। এরপরই হঠাৎ চলতে থাকে গুলি। সেই গুলিতে নিহত হন ১৩ জন যুবকংগ্রেস কর্মী। এই ‘শহিদ’রা হলেন- বন্দনা দাস, মুরারী চক্রবর্তী, রতন মণ্ডল, কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্বনাথ রায়, অসীম দাস, কেশব বৈরাগী, শ্রীকান্ত শর্মা, দিলীপ দাস, রঞ্জিত দাস, প্রদীপ দাস, মহম্মদ খালেক, ইনু।
আরও পড়ুনঃ অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেলেন মুহাম্মদ জুবায়ের
মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায় বিশেষ কলমে লিখেছেন ‘২১ জুলাই আমার কাছে এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই আমাদের অহিংস, গণতান্ত্রিক পথে আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে চক্রান্ত চালিয়েছিল বামফ্রন্ট সরকার এবং সিপিআইএম। আন্দোলনের উপর অত্যাচারের এই দিনটি বাংলা তথা দেশের চিরকালীন ইতিহাসে এক কলঙ্কিত দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। সেদিন কোনও অপরাধ ছাড়াই আমার সহকর্মীদের উপর তাণ্ডব করেছিল পুলিশ আর সিপিআইএমের গুন্ডারা। প্রশাসনকে জানিয়ে, অনুমতি নিয়ে কর্মসূচি হয়েছিল। তারপরেও ওরা প্রাণঘাতী আক্রমণ করেছিল, তা গণতন্ত্রের লজ্জা। চিরকালীন ইতিহাসের কালো দিন। আমি মনে করি ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই–সহ যতগুলি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সিপিআইএম বর্বরোচিত আক্রমণ করেছে, কতজনকে শহিদ করেছে, বাংলার মানুষের তা মনে রাখা উচিত। এখন যারা বড় বড় কথা বলছে, তারাও মনে রাখুক, ২১ জুলাই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যারা গিয়েছিল, তারা অপরাধী ছিল না। তারা ছিল রাজনৈতিক কর্মী, গরিব সাধারণ মানুষ। এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে ১৩ জনকে হত্যা করা হল। আমি ধন্যবাদ দিই আমাদের কর্মী থেকে সাধারণ মানুষকে, সেদিন আহতদের প্রাণ বাঁচাতে রক্ত দেবার জন্য তাঁরা লাইন দিয়েছিলেন।’
আরও পড়ুনঃ Presidential Election 2022 Result:পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে?ফল ঘোষনা আর কিছুক্ষন পরেই
২০১১ সালের ১৩ মে (বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হয়েছিল) ৩৪ বছরের বাম শাসনে ধস নামিয়ে রাজ্যে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের পর আলাদা করে কোনও বিজয় উৎসব করেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
সেদিন বেলা গড়াতেই জনাদেশ স্পষ্ট হয়ে যায়, আর এরপরই দৃশ্যত আপ্লুত মমতা জানিয়ে দেন, জয়ের উদযাপন হবে ২১ জুলাই শহিদ তর্পণের দিন।