ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলায় হাইকোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট | ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলায় ধাক্কা খেল রাজ্য | রাজ্যের অবস্থা দেখে রিপোর্ট দিতে মানবাধিকার কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের ৫ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ। সেই পুনর্বিবেচনার জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। তবে ভোট পরবর্তী হিংসা (Post poll-violence) মামলায় রাজ্যের আবেদন এদিন খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ এই মামলার শুনানি শুরু হয়। তবে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় রাজ্যের (West-Bengal) আবেদন এদিন খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
ফলে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগগুলিতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
ভোট পরবর্তী হিংসার জেরে ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে গত ৩১ মে কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তিন সদস্যের সেই কমিটিতে ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও রাজ্যের লিগ্যাল সার্ভিসের আধিকারিক। কিন্তু সেই কমিটির কাজে সন্তুষ্ট ছিল না আদালত। ফগত শুক্রবারের শুনানিত ফের নতুন করে কমিটি তৈরির নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের উচ্চতর বেঞ্চ। নয়া কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানকে।
আরও পড়ুন - FSII এবং NSAI সরকারকে অবৈধ তুলা চাষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছে
কলকাতা হাইকোর্টের রায় (Judgment of Kolkata High-court):
শুক্রবার পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, রাজ্য লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির সদস্য-সচিবকে রেখে ওই কমিটি তৈরি করতে হবে। রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরাও তাতে থাকবেন। ওই কমিটিই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে। কমিটির যাতায়াত-সহ যাবতীয় পরিকাঠামোগত সহায়তার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। এমনকী, নাগরিকদের মনের ভয় দূর করে তাঁদের সুস্থ ভাবে জীবন ধারণের জন্য রাজ্যকেই সব রকম ভূমিকা নিতে হবে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে হাইকোর্টের পরামর্শ, যেখানে যেখানে অশান্তির অভিযোগ রয়েছে, সেখানে কমিটির সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখবেন। কোথায় কত লোক বাড়িছাড়া, কোথায় রাজনৈতিক হিংসার ফলে নাগরিকরা সত্যিই দিশেহারা, সে সব ঘটনা বিস্তারিত জেনে রিপোর্ট তৈরি করবে কমিটি।
কোথাও গিয়ে এই কমিটি যাতে বাধার মুখে না-পড়ে, তা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্যকেই। যদি এমন কোনও অস্বস্তিকর ঘটনা ঘটে, সে ক্ষেত্রে আদালত কড়া পদক্ষেপ করবে। এমনকী, সেই ঘটনাকে আদালত অবমাননা হিসেবে ধরেও পদক্ষেপ করতে পারে হাইকোর্ট।
মানবাধিকার কমিশনকে হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে তা একেবারেই নাপসন্দ রাজ্য সরকারের। কারণ গত শুক্রবার এই মামলায় রাজ্য সরকারের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে রায় দিয়েছিল হাই কোর্ট। কঠোর সমালোচনা করা হয়েছিল রাজ্যের ভূমিকার। তাই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য রবিবার উচ্চ আদালতে আর্জি জানায় রাজ্য।
সেই পরিপ্রেক্ষিতে এদিন ফের শুরু হয় ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার শুনানি। তবে শুনানি শুরু হতেই রায় যে পুনর্বিবেচনা করা হবে না তা স্পষ্ট করে দেয় আদালত। ফলত হাইকোর্টের এই নির্দেশে আরও অস্বস্তি বাড়ল রাজ্যের। রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার বিষয় খতিয়ে দেখতে কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। গুরুত্বের বিচারে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টে তৈরি হয় পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ। যদিও রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে বলে দাবি করে আসছে রাজ্য সরকার |
নিবন্ধ: রায়না ঘোষ
আরও পড়ুন - Corona 3rd Wave: আগামী ৬-৮ সপ্তাহের মধ্যেই দেশে আসছে করোনার তৃতীয় ঢেউ