স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের (Student Credit Card) লোন অনুমোদনের চেয়ে বাতিলের সংখ্যাই বেশি। অন্তত তেমনটাই পরিসংখ্যান ধরা পড়ছে নবান্ন সূত্রে। পাশাপাশি এখনো পর্যন্ত ২২ হাজারের সামান্য বেশি পড়ুয়ার আবেদনপত্রই ব্যাঙ্কগুলির বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে। যদিও তার মধ্য থেকে শুধুমাত্র ৪৯৩ জন পড়ুয়ার লোন অনুমোদন করা হয়েছে। যার মধ্যে এখনো লোন অনুমোদন হয়নি ২০৫১৪ জন আবেদনকারীর যেগুলি এখনো ব্যাঙ্কের বিবেচনার অধীনে রয়েছে।
পাশাপাশি ১০৩৯ জন আবেদনকারীর আবেদনই বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। কী কারনে আবেদনপত্র বাতিল সে বিষয়ে অবশ্য নির্দিষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। কিন্তু ভর্তির সময় চলাকালীন এত সংখ্যক পড়ুয়ার কিভাবে লোন অনুমোদন করা সম্ভব তার উত্তরই খুঁজছেন অর্থ ও উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরা বলেই নবান্ন সূত্রে খবর।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্যসচিব বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলোর বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব নিতে চলেছে রাজ্য এমন বার্তা শুক্রবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন জেলা গুলিকে বার্তার মাধ্যমে। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে বেসরকারি ব্যাঙ্ক গুলি সরকারি প্রকল্প কে মান্যতা দিয়ে ঋণ দেবে না সেই ব্যাঙ্কগুলি থেকে সরকারি অ্যাকাউন্ট তুলে নেওয়া হতে পারে। তার পরপরই শুক্রবার পর্যন্ত যে তথ্য তৈরি হয়েছে সেই তথ্যতেই দেখা যাচ্ছে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বহু পড়ুয়ার লোন অনুমোদনই হয়নি। এক্ষেত্রে বেশিরভাগ বেসরকারি ব্যাঙ্ক ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের লোন দেওয়ার সম্মতি না দেওয়ার কারণেই লোন মঞ্জুর হয়নি বলে মনে করা হচ্ছে। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এবং বেশ কয়েকটি কো-অপারেটিভ ব্যাংকের অধীনস্থ শাখা গুলির মাধ্যমে আপাতত স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের(Student Credit Card)) লোন দেওয়ার সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে বলেই নবান্ন সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন -Weather update: বজ্র-বিদ্যুৎ সহ তুমুল বৃষ্টি, জেনে নিন দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ার পূর্বাভাস
যে পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় থেকে খুব কম সংখ্যক পড়ুয়াই স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লোনের সুবিধা পেয়েছেন। আলিপুরদুয়ার জেলায় এখনও পর্যন্ত ১১৮ টি আবেদনপত্র ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে। যার মধ্যে চারটি আবেদনপত্র বাতিল হয়েছে,৪৩ টি আবেদনপত্রের লোন অনুমোদন হয়েছে এবং ৭১ টি আবেদন এখনো ব্যাঙ্কের বিবেচনাধীন রয়েছে। বাঁকুড়া জেলায় ৯০৪ টি আবেদনপত্রই ব্যাংক গুলিকে পাঠানো সম্ভব হয়েছে। যার মধ্যে ৬২ টি আবেদনপত্র বাতিল করা হয়েছে, অনুমোদন হয়েছে ২৯ টি এবং এখনো ব্যাঙ্কের বিবেচনার অধীনে রয়েছে ৮১৩ টি আবেদনপত্র। বীরভূম জেলাতে ৬৭টির মধ্যে ৬৭ টি আবেদনপত্রই এখনো ব্যাঙ্কের বিবেচনাধীন। কোচবিহার জেলা তে ২২৫ টি আবেদনপত্র কে ব্যাংক গুলিকে পাঠানো হয়েছে। যার মধ্যে ১৩ টি আবেদনপত্র বাতিল হয়েছে। অনুমোদন হয়েছে ৬৬ টি এবং এখনো ব্যাঙ্কের বিবেচনার অধীনে রয়েছে ১৪৬ টি আবেদনপত্র।
দক্ষিণ দিনাজপুরে ১৭৫টি আবেদনপত্র ব্যাঙ্কগুলিকে পাঠানো হয়েছে যার মধ্যে একটি মঞ্জুর হয়েছে।১৭৪ টি আবেদনপত্র এখনো ব্যাঙ্কের বিবেচনাধীন। দার্জিলিং জেলায় ব্যাংকের বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে ৩৩১ টি আবেদনপত্র। যার মধ্যে বাতিল হয়েছে ১৭ টি আবেদনপত্র। অনুমোদন হয়েছে ৫ টি আবেদনপত্রের ও ব্যাংকের বিবেচনার জন্য এখনো পড়ে রয়েছে ৩০৯ টি আবেদনপত্র।
নবান্ন সূত্রে খবর এই ভাবেই রাজ্যে একাধিক জেলায় এই পরিসংখ্যান ধরা পড়েছে। সূত্রের খবর নদিয়া জেলা তে সব থেকে বেশি আবেদনপত্র বাতিল করেছে ব্যাঙ্কগুলি। তার পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর,উত্তর দিনাজপুরের মত জেলাগুলিতেও উল্লেখযোগ্যভাবে আবেদনপত্র বাতিল করা হয়েছে। প্রসঙ্গত শনিবার স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিভিন্ন জেলাগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। এই বৈঠকে বেশ কিছু কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।