চোখ রাঙাচ্ছে অশনি। এখন ঘূর্ণিঝড় রয়েছে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে। বাড়ছে ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি। এগিয়ে আসছে অন্ধ্র- ওড়িশা উপকুলের দিকে। আবহাওয়া সুত্রের খবর এই মুহূর্তে উপকূলের আরও কাছে অশনি। অশনি এই মুহূর্তে অন্ধ্রের কাঁকিনাড়া থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব এবং বিশাখাপত্তনমের ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে রয়েছে। এরপর ওড়িশার উপকুলের দিকে সমান্তরাল ভাবে এগোতে পারে অশনি। তবে ওড়িশার উপকূলের দিকে এগোলেই শক্তি হারাবে অশনি। এমনটাই মনে করছে অশনি।
আজ সকাল থেকেই অশনির অশনি সংকেত দেখা গেছে সুন্দরবন, কাকদ্বীপ, বসিরহাট, হাওড়া, ব্যারাকপুর ইত্যাদি জায়গায় সকাল থেকেই শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। আজ সারাদিন কলকাতার আকাশ থাকবে মেঘলা। মঙ্গলবার থেকে শুরু করে শুক্রবার পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস জানিয়েছে হাওয়া অফিস। এদিকে সকাল থেকেই ওড়িশার পারাদ্বীপ উপকূল অশান্ত। গর্জে উঠছে সমুদ্র উপকূল। আগামী ১৩ তারিখ পর্যন্ত সমুদ্রের আশেপাশেও যেতে বারণ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের। আজ রাতেই ওড়িশার উপকূলে আছড়ে পড়ার কথা অশনির। তবে তারপর শক্তিক্ষয় হবে অশনির। সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে এই অশনি।
দিঘার আবহাওয়াও রয়েছে অশান্ত। পর্যটকদের সমুদ্রের আশে পাশে আসতে দেওয়া হচ্ছেনা। সকাল থেকেই চলছে মাইকিং। সুন্দরবনে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে এনডিআরএফের দল। নজর রাখা হচ্ছে বকখালির দিকেও। পাশাপাশি সাগরে আগামী কয়েকদিনে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সেইভাবে পড়বে না বঙ্গে। কিন্তু ভারী বৃষ্টিপাতের দাপট চলবে বেশ কিছু জেলায়। দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, নদিয়া এই ৬ জেলায় মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত হবে ভারী বৃষ্টিপাত।
বিজ্ঞানীদের ব্যাখা অনুযায়ী এই জোড়া ঘূর্ণিঝড় তৈরির অন্যতম কারণ হল পশ্চিমী বাতাসের বিস্ফোরণ। কিছুদিন ধরে ভারত মহাসাগরে পশ্চিমী বাতাসের প্রবাহ এতটাই বেশি যে তৈরি হয়েছে জোড়া ঘূর্ণিঝড়। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের প্রবাহ হবে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে এবং ভারত মহাসাগরে এই বায়ু প্রবাহ বইবে ঘড়ির কাঁটার দিকেই। আপাতত দুই মহাসাগরে তৈরি হচ্ছে নিম্নচাপ। যার মধ্যে যে নিম্নচাপ বেশি পশ্চিমী বাতাস টানবে সেটি সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।
আরও পড়ুনঃ একে অশনি! দোসর যমজ ঘূর্ণিঝড়, বঙ্গের ওপর চলবে যমজ ঘূর্ণিঝড়ের দাপট
তবে এই জোড়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব এই প্রথমবার নয়। এটি ইতিহাসের প্রত্যাবর্তন। ২০১৯ সালে যখন ফনির তাণ্ডব চলে ঠিক তখনই একইসঙ্গে সৃষ্টি হয় ঘূর্ণিঝড় লরনা। তবে বেশি শক্তিশালী হতে পারেনি এই ঘূর্ণিঝড়। প্রবল দাপট চালিয়েছিল ফনি। তবে এবারের যে ঘূর্ণিঝড় অশনি আসতে চলেছে সেটি এতটা শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই জানাচ্ছে হাওয়া অফিস।
আরও পড়ুনঃ কৃষকদের জন্য় শুরু হচ্ছে নতুন প্রকল্প, নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য় সরকার
IMD-এর মতে, পশ্চিম উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, কর্ণাটক, বিহার, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, ছত্তিশগড় ইত্যাদিতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া হিমাচল প্রদেশে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। এর পাশাপাশি, কটক এবং ভুবনেশ্বরে বৃষ্টির সাথে বজ্রপাতেরও সম্ভাবনা রয়েছে, যার কারণে আবহাওয়া দফতর মানুষকে নিরাপদে থাকতে সতর্ক করেছে। আজ, মুম্বাই শহর মেঘলা থাকবে এবং যদি আমরা তাপমাত্রার কথা বলি, তাহলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা 26 ডিগ্রি পর্যন্ত এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা 35 ডিগ্রি পর্যন্ত থাকতে পারে।
সিমলায় বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে
যেখানে উত্তর ভারতে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। একইসঙ্গে হিমাচল প্রদেশের রাজধানী সিমলায় ভারী বর্ষণে বিপর্যস্ত মানুষ। সূত্রের খবর, সিমলার বহু গ্রামের বাড়িতে বৃষ্টির জল ঢুকছে। ঘরবাড়িতে জল এতটাই ঢুকেছে যে দেওয়াল পর্যন্ত ফাটল ধরেছে। বৃষ্টির কারণে যাদের ঘরে কচ্ছা ছিল তাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হিমাচলের অনেক শহরে বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অফিস।