রাইজোবিয়াম শুঁটি জাতীও ফসলের শেকড়ের গুটিতে বাস করে। এই জীবাণু বাতাস থেকে নাইট্রোজেন সংগ্রহ করে তাদের শরীরে রেখে দেয়। ফসল এই নাইট্রোজেন শিকড়ের সাহায্যে শোষণ করে এবং প্রতিদানে জীবাণুকে খাদ্য সরবরাহ করে। ফসল কাটার পরেও কিছুটা নাইট্রোজেন মাটিতে থেকে যায় যাতে পরবর্তী ফসল লাভজনক হয়। প্রায় সবরকম ডাল শস্য, বাদাম, সয়াবিন, বারসিম, লুসারন, বরবটি, শিম, বিন এমনকি অপরাজিতা ফুলের মত যে কোন শিম্বী গোত্রীয় ফসল চাষ করলে মাটিতে রাইজোবায়াম জীবাণু বৃদ্ধি পায় ও মাটিতে জৈবিক উপায়ে নাইট্রোজেনের পরিমান বারে। দেখা গেছে রাইজবিয়াম প্রয়োগ করলে ১০-৩৫% ফলন বাড়ে। তাই কোন জমিতে বছরে একবার অন্তত শিম্বী গোত্রীয় যেকোন একটি ফসল চাষ করলেই মাটির স্বাস্থ্যের উন্নতি হওয়ার ফলে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।
বিভিন্ন শিম্বী / শুঁটি জাতীও ফসলের জন্য বিভিন্ন রাইজবিয়াম জীবাণু সার নির্দিষ্ট-
শিম্বী গোত্রীয় জাত |
ফসলের নাম |
রাইজবিয়াম লেগুমিনসেরাম |
মটর শুঁটি |
রাইজবিয়াম ফ্যাসিওলিস |
বীণ, গাইমুগ |
রাইজবিয়াম ট্রাইফলি |
ক্লভার, বারসিম |
রাইজবিয়াম মেলিলটি |
লুসারন |
রাইজবিয়াম সাপেনিকাম |
সয়াবিন |
রাইজবিয়াম স্পিসিস |
বরবটি |
রাইজবিয়াম সার প্রয়োগ পদ্ধতিঃ
১) ১৫০ মিলি লিটার জলে ১৫ গ্রাম গুড় মিশিয়ে একটু গরম করে নিতে হবে। তারপর সেটিকে ঠাণ্ডা করে তাতে প্রয়োজন মত ভাতের ফ্যান বা ৭০ গ্রাম মত বাবলার আঠা মেশানো প্রয়োজন।
২) তারপর তাতে ৫০-৬০ গ্রাম রাইজবিয়াম সার মেশানো হলে একটা থকথকে লেই তৈরি হবে।
৩) এবার ১ বিঘার জন্য প্রয়োজন মত বীজ হাত দিয়ে ভালো করে মেশান যাতে সমস্ত বীজে সার ভালোভাবে মেশে।
8) মোটা কাগজ বা পলিথিন বিছিয়ে তার উপর সার ছড়িয়ে ভালো করে বীজের সঙ্গে মাখান, তারপর ছায়ায় রেখে বীজ শুকিয়ে নিতে হবে ।
৫) সকালের দিকে জমিতে বীজ বুনুন। মনে রাখবেন যে ভর দুপুরে বীজ বোনা যাবেনা।
৬) ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোন ছাত্রাকনাশক বা রাসায়নিক কিছু বীজের সঙ্গে মেশাবেন না।
তথ্য সূত্র: অনিক মজুমদার, হুগলী কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র, চুঁচুড়া, হুগলী
রুনা নাথ(runa@krishijagran.com)
Share your comments