পশুপালন আধুনিক যুগে দ্রুত উদীয়মান ব্যবসায়ে পরিণত হয়েছে। পশুপালন খাত কৃষির একটি অঙ্গ। দুধ, মাংস, ডিম, জৈব সার সহ অনেক কিছুর জন্য পশুপালন করা হয়। আমাদের দেশে গরু, মহিষ, ভেড়া, ছাগল, শূকর, মুরগী, হাঁস, কোয়েল সহ বিভিন্ন ধরণের প্রাণী ও পাখি পালন করা হয়। কৃষক এবং পশুপালকরা যদি বৈজ্ঞানিক উপায়ে পশুপালন করেন তবে তাদের উপার্জন হবে দ্বিগুণ। আজ, আমরা আপনাকে কয়েকটি পন্থা সম্পর্কে জানাব যার সাহায্যে পশুপালন করে আপনি ভালো পরিমাণ অর্থ লাভ করতে পারবেন।
১) ভালো প্রজাতির গরু নির্বাচন -
পশুপালনের মূল বিষয় হল ভাল জাতের প্রাণী নির্বাচন করা। প্রাণী কেনার সময় একজন বিশেষজ্ঞ বা পশুচিকিত্সকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কেনার আগে প্রাণীটির পূর্ববর্তী অবস্থা সম্পর্কে তথ্য জেনে নিন।
২) খাদ্যের ক্ষেত্রে সতর্কতা –
কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার যেমন: আটা, রুটি, ভাত ইত্যাদি প্রাণীদের খাওয়ানো উচিত নয়। প্রাণীদের সুষম ডায়েটে শস্য ও চারার অনুপাত ৪০:৬০ রাখা উচিত। এছাড়াও, এই সময়ে প্রাপ্তবয়স্ক প্রাণীদের দৈনিক ৫০-৬০ গ্রাম এবং ছোট বাচ্চাদের ১০-১৫ গ্রাম ইলেকট্রল দিলে খুবই ভালো হয়। গ্রীষ্মের মরসুমে জমিতে উত্পাদিত চারায় (পশুর খাদ্যে) অনেক সময় বিষাক্ত পদার্থ থাকতে পারে, যা প্রাণীদের জন্য ক্ষতিকারক। সুতরাং, এই মরসুমে যদি বৃষ্টি না হয়, তবে আগে জমি ২-৩ বার জলে ভিজিয়ে নেওয়ার পরে তাদের চারা খাওয়ানো উচিৎ। এতে জমিতে কিছু বিষাক্ত পদার্থ থাকলে তা জলে ধুয়ে যাবে।
ম্যাস্টিটিস, ফুটরট, ব্ল্যাক কোয়ার্টার ইত্যাদির মতো রোগ থেকে তাদের রক্ষা করার জন্য এই মরসুমে পশুদের অবশ্যই টিকা দিতে হবে, যাতে আগত বর্ষায় তাদের এই ধরণের সকল রোগ থেকে দূরে রাখা যায়।
৩) গ্রীষ্মকালে পশুর আবাসস্থল পরিচালনা -
পশুর বসবাসের জন্য নির্মিত ঘরের ছাদে খড় রাখুন, যাতে ছাদ বেশি উত্তপ্ত না হতে পারে। পশুকে বেঁধে রাখলে ছায়াময় গাছের নীচে রাখুন। পশুর বসবাসকারী স্থানে গরম বাতাসের প্রবাহ সরাসরি এড়াতে কাঠের বস্তা বা ভেজা বস্তা রাখুন, যাতে পশুর বাসস্থান শীতল থাকে। একটি ঘরে বেশি প্রাণী বেঁধে রাখবেন না এবং রাতে খোলা জায়গায় প্রাণীদের রাখলে তা ভালো হয়। প্রাণীদের সরাসরি রৌদ্রক্ষেত্র থেকে রক্ষা করার জন্য প্রধান দরজায় পাটের বস্তার একটি পর্দা লাগানো উচিত। পশুর আবাসস্থলের আশেপাশে ছায়াময় গাছের উপস্থিতি গবাদি পশুর তাপমাত্রা কম রাখতে সহায়তা করে। গরুর ঘরের ছাদ যদি অ্যাসবেস্টর্স বা কংক্রিটের হয় তবে তার উপরে ৪-৬ ইঞ্চি পুরু ঘাসের প্যালেট লাগিয়ে রাখলে প্রাণীগুলি উত্তাপ থেকে অনেকটাই আরাম পাবে।
৪) পশুর টিকা প্রদান -
- প্রাণীদের রোগ থেকে রক্ষা করার জন্য পর্যায়ক্রমিক টিকা দেওয়া দরকার।
- এই সময় আবহাওয়া পরিবর্তনের সময়, রোগের সংক্রমণও এই সময়ে বেশী হয়। তাই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করার পরে টিকা প্রদান করা আবশ্যক।
-
যদি প্রাণীদের স্বাস্থ্য এবং খাদ্যে কোনও পরিবর্তন হয়, তবে অবিলম্বে তাদের ডাক্তারের কাছে দেখানো উচিত।
Image source - Google
Related link - (Turkey bird rearing) টার্কি পালন করে আয় করুন লক্ষাধিক
(Straw treated with urea) গবাদি পশুর উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ইউরিয়া দিয়ে উপচার করা খড়ের ব্যবহার