এই 20টি ব্যবস্থা পোল্ট্রি খামারকে বার্ড ফ্লু থেকে নিরাপদ রাখবে! ভার্মি কম্পোস্ট ইউনিটের জন্য ৫০% পর্যন্ত ভর্তুকি পাওয়া যাবে, শীঘ্রই আবেদন করুন এই হাইব্রিড জাতের টমেটো 900 কুইন্টাল প্রতি হেক্টর ফলন দেবে দুধের সঠিক সময় বেছে নিলে উৎপাদন বাড়বে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
Updated on: 2 August, 2021 10:25 AM IST
Fish Disease (Image Credit - google)

মাছ চাষের সাথে যারা অনেকদিন যাব জড়িত আছেন তারা যেমন চট করে মাছের রোগ (Fish disease) বুঝতে পারে, নতুন যারা চাষ করছে তাঁদের ক্ষেত্রে মাছের রোগ নির্ণয় করা অতটা সহজ নয়, কখনো কখনো তো লক্ষণ বোঝাই যায় না, সেক্ষেত্রে মাছের চলন গমন ভঙ্গীমা দেখে বুঝতে হয়।

আসুন আমরা দেখে নি মাছের দেহে বিশেষ করে বাণিজ্যিক মৎস্য পালনের ক্ষেত্রে কী কী রোগ হতে পারে -

মাছের রোগ দুই ধরণের কারণবশতঃ হয় (Fish Disease) -

১। প্যাথোজেনিক ২। প্যারাসাইটিক

প্যাথোজেনিক -

ক) ভাইরাল ইনফেক্সন; যেমন-ইসোসিড লিম্ফোসারকোমা

এই ভাইরাসঘটিত রোগটি একটি ছোঁয়াচে টিউমারঘটিত রোগ, যা প্রধানত দুই ধরণের মাছের দেহকে আক্রান্ত করে, নরদার্ণ পাইক(আমেরিকা), এবং মাস্ক লাং (ইউরোপ)। এই রোগে টিউমার প্রথমত চামড়ায় তৈরি হয়। প্রথমে রোগটি আমেরিকা ও ইউরোপের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও, বর্তমানে এটি আন্তর্জাতিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে।

খ) ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন; যেমন-সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স (পাখনা পচা এবং মাছের ড্রপসি)

গ) ছত্রাক ঘটিত রোগ

ঘ) জল ঘটিত রোগ; যেমন-স্যাপ্রোলেগ্নিয়া এসপি।

প্যারাসাইটিক -

ক) মেটাজোয়ান প্যারাসাইট; যেমন-কপপডস্‌।

খ) এককোশী প্যারাসাইট; যেমন-ইচ্‌থাইপ্‌থিরিস মাল্টিফিলিস এতে মাছের দেহে চুলকানিজনিত লক্ষণ সৃষ্টি হয়।

গ) কৃমি ঘটিত রোগ; (হেলমিনথ্‌ প্রজাতি)-যেমন-উইসট্রোনজিলাইস্‌।

এই রোগ গুলি ছাড়াও রয়েছে কান্‌সা পচা রোগ

মাছ রোগগ্রস্থ হলে করণীয় পদক্ষেপ (Disease management) :

  • কোন্ পুকুরের মাছ রোগগ্রস্থ তা সঠিক ভাবে চিহ্নিত কুরুন।

  • প্রত্যেকটি রোগগ্রস্থ মাছকে আলাদা করে কোন জলাশয়ে রাখুন।

  • জলের গুণগত মানের কোন আকস্মিক বা অস্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটছে কিনা তা খেয়াল রাখুন ও নথিভুক্ত করুন।

  • জলের দ্রবীভূত, অ্যামোনিয়া, নাইট্রেট ও জলের pH এর মাত্রা পরীক্ষা করুন।

  • মাছের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

প্রতিকারের কিছু সরল উপায় (Disease Management) -

রোগ যাতে জলাশয়ে আসতে না পারে, তার জন্যে বিঘা প্রতি কুড়ি কেজি হারে চুন প্রয়োগ করা প্রয়োজন। চুন প্রয়োগ করার পরের দিন রেকার দিয়ে পুকুরের তলদেশ ঘেঁটে দিতে হবে। বাইরে থেকে জল যাতে পুকুরে না আসতে পারে, তার জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। দশ লিটার জলে এক গ্রাম পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট ও ২০০ গ্রাম খাবার লবণ মেশানো জল পুকুরের পাড় থেকে ঝোলানো প্লাস্টিক বা পেট বোতলে ছিপিতে সামান্য ছিদ্র করে সারাদিন ধরে ড্রপ ড্রপ করে পড়ার ব্যবস্থা করে দিতে পারলে ভালো হয়।

ভেষজ দেশীয় প্রযুক্তির ব্যবহার -

এছাড়া ভেষজ দেশীয় প্রযুক্তির ব্যবহার অনেক ক্ষেত্রেই মাছ চাষীরা বংশ পরম্পরায় ব্যবহার করে থাকেন। কাঁচা হলুদ, তুলসী পাতা, রসুন ও কচি নিমপাতা (প্রত্যেকটি ২৫ গ্রাম করে নিয়ে) হামান দিস্তায় পেস্ট বানিয়ে খাবারের সাথে সপ্তাহে একবার দিলে রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা প্রায় থাকবে না বললেই চলে।

মাছের ক্ষত রোগ নিয়ন্ত্রনে রসুনের ব্যবহার করা যায়। রসুনটি কার্যকর ভেষজ হিসাবে বিবেচিত হয়, কারণ এটিতে অ্যালিসিন নামক অ্যান্টিমাইকোবাইল যৌগ আছে যার ঔষুধি গুণ আছে। পুকুরে খাবার প্রয়োগের পূর্বে প্রতি ১০০ কেজি মাছের জন্য ১০ গ্রাম রসুন ৩ দিন পর পর প্রয়োগ করলে মাছের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে। এপিজুটিক আলসারেটিভ সিন্ড্রোম বা মাছের ক্ষত রোগের জন্য ২ কেজি রসুন, ২ কেজি লবন, ২০ গ্রাম পটাশিয়াম পার ম্যাঙ্গানেট ও ২০ গ্রাম কপার সালফেট (তুঁতে) ভাল করে ৩০-৫০ লিটার জলে মিশিয়ে ৩৩ ডেসিম্যাল (১বিঘা) পুকুরে স্প্রে করে ছড়িয়ে দিলে উপকার পাওয়া যায়। এটা জানা গেছে যে রসুনকে, তুলসী এবং হলুদের সঙ্গে মিশিয়ে দিলে কাতলা মাছের ডিমপোনার রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ে। 

আরও পড়ুন - Mixed Fish Farming - কোন কোন মাছের মিশ্রচাষ আপনাকে দেবে দ্বিগুণ লাভ, জেনে নিন কি বলছেন মৎস্য বিশেষজ্ঞ সুমন কুমার সাহু

সুতরাং, বাণিজ্যিক ভাবে যারা মাছ চাষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছো; তাঁদের উদ্দেশ্যে বলা হচ্ছে, এই রোগভোগ গুলির জন্য বিশেষ ভাবে অবগত হয়ে তারপর তাঁরা যেন এই কাজে উদ্যোগী হয়; নাহলে অর্থনৈতিক ক্ষতি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন - Profitable Cow Breed - কৃষকরা আয় বাড়াতে কোন জাতের গরু পালন করবেন, জানুন গরুর অধিক উৎপাদনশীল প্রজাতি সম্পর্কে

English Summary: Learn How To Use Herbal Technology In Fish Farming And Cure Fish Diseases
Published on: 25 July 2021, 06:10 IST