কৃষিজাগরন ডেস্কঃ লাম্পি ভাইরাসের কারণে ভারতের অনেক রাজ্যের কৃষকরা আতঙ্কে রয়েছেন। এই ভাইরাস রাজস্থানে মহামারির আকার ধারন করেছে। রাজ্য সরকারের মতে, এই ভাইরাসের কারণে এখানে ২১০০ টিরও বেশি গরু মারা গেছে। একই সঙ্গে চার লাখের বেশি গবাদিপশু এই ভাইরাসে আক্রান্ত বলে জানা গেছে। হরিয়ানাতেও আক্রান্ত গরুর সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। এখানকার অনেক জেলায় প্রতিদিন শত শত গরু মারা যাচ্ছে। এই রোগটি গুজরাটের ১৪টি জেলায় একপ্রকার ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। আপাতত সরকার থেকে এই রোগে আক্রান্ত গরুকে গাউট পক্সের ভ্যাকসিন নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
লাম্পি ভাইরাস উত্তরপ্রদেশের গ্রামে সর্বনাশ শুরু করেছে। বর্তমানে, রাজ্যে এর সাথে সম্পর্কিত ১৫ হাজার গরু আক্রান্ত বলে জানা গেছে । সরকার থেকে ৯ সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়েছে। এই দলটি এই রোগ প্রতিরোধে ২৯ আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত 6 দিনের প্রচার চালাবে বলে জানা গেছে ।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ান! কি এমন বৈশিষ্ট আছে? পড়ুন বিস্তারিত
বর্তমানে, এই সংক্রমণ উত্তর প্রদেশের আলিগড়, আমরোহা, বাগপত, বিজনৌর, বাদাউনের সহ ২১টি জেলায় দেখা গেছে । এটি বুলন্দশহর, ইটাহ গৌতম বুদ্ধ নগর, গাজিয়াবাদ, হাপুর, হাতরাস, মথুরা, মিরাট, মোরাদাবাদ, মুজাফফরনগর, সাহারানপুর, সম্বল, শাহজাহানপুর, শামলি, ফিরোজাবাদ এবং বেরেলিতে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এ পর্যন্ত ১১৫টি গরু মারা গেছে। মৃত্যুর হার প্রায় ০ দশমিক ৭৯ শতাংশ। রাজ্যে পশুর প্রবেশ, মেলা ও পশু চলাচলও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
লাম্পি ভাইরাসের লক্ষণ
এই ভাইরাসে আক্রান্ত প্রাণীদের নাক ও মুখ থেকে জল ও লালা পড়তে শুরু করে। প্রচণ্ড জ্বর হয় এবং এই ধরনের প্রাণীরা খাবার খাওয়া ছেড়ে দেয়। এই জাতীয় প্রাণীর চামড়ার নীচে প্রথমে ছোট দানা দেখা দেয়। এই ফুসকুড়ি ক্ষতে পরিণত হয়। এগুলি বেশিরভাগ গবাদি পশুর মুখ, ঘাড় এবং যৌনাঙ্গের কাছে দেখা যায়।
গরু লাম্পি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কী করবেন ?
১) অবিলম্বে নিকটস্থ ভেটেরিনারি অফিসারের সাথে যোগাযোগ করুন। সংক্রমিত গাভীকে সুস্থ গাভী থেকে দূরে রাখুন।
২) সংক্রমিত গাভীর চলাচল বন্ধ করুন। গরুকে সর্বদা বিশুদ্ধ জল দিন।
৩) সংক্রমিত গাভীর দুধ পান করবেন না।
৪) মশা, মাছি, ইত্যাদি থেকে রক্ষা পেতে কীটনাশক ব্যবহার করুন।
৫) গবাদি পশুর গোয়ালঘর ফিনাইল/সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট দিয়ে পরিষ্কার করুন।
আরও পড়ুনঃ আজই শুরু করুন দুধের ব্যবসা, লাভ জানলে চমকে যাবেন!
গরু লাম্পি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কী করবেন না ?
১) মাঠে গরু পাঠাবেন না।
২) পশুমেলা ও প্রদর্শনীতে গবাদি পশু পাঠাবেন না।
৩) গরুর মৃতদেহ খোলা জায়গায় ফেলবেন না বরং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গভীর গর্তে পুঁতে ফেলবেন।
৪) অসুস্থ ও সুস্থ গরুকে একসঙ্গে খাবার ও জল দেবেন না।
৫) আক্রান্ত এলাকা থেকে গবাদি পশু কিনবেন না।
৬) বাছুরকে অসুস্থ পশুর দুধ খাওয়াবেন না।
পাঞ্জাবের অনেক কৃষক আছে যাদের আয় পশুপালনের উপর নির্ভরশীল। লাম্পি ভাইরাস এই রাজ্যে দুগ্ধ খাতের অনেক ক্ষতি করেছে। প্রতিদিন শতাধিক গরু মারা যাওয়ায় গোশালাগুলোর অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। একই সঙ্গে আতঙ্কে গরুর মালিকরা। তারা বাধ্য হচ্ছেন গরু কমদামে বিক্রি করতে ।কৃষকদের দাবী, গরুর মৃত্যুর জন্য সরকার যেন ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করে।