আগামীকাল ২৪ শে জুলাই সারা দেশে আষাঢ় মাসের গুরু পূর্ণিমা উদযাপিত হবে। সনাতন ধর্মে, পূর্ণিমা দিবসে গঙ্গায় স্নান করা এবং কিছু দান করাকে অত্যন্ত পবিত্র বলে বিবেচিত হয়। বিশ্বাস করা হয় যে, বেদের রচয়িতা মহর্ষি বেদব্যাস আষাঢ় মাসের পূর্ণিমায় (Full Moon) জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
মহর্ষি বেদ ব্যাসের জন্মের পর থেকে কয়েক শতাব্দী ধরে গুরু পূর্ণিমার দিন গুরু উপাসনার রীতি চলে আসছে। গুরু পূর্ণিমা ব্যাস পূর্ণিমা নামেও পরিচিত। হিন্দু ধর্মে পুরাণের মোট সংখ্যা ১৮ টি। এই সকল খণ্ডের রচয়িতা হলেন মহর্ষি বেদ ব্যাস।
গুরু পূর্ণিমার শুভ সময় (Full Moon Timing) -
আগামীকাল পূর্ণিমা উদযাপন করা হলেও পূর্ণিমা তিথি আজ সকাল থেকেই পড়ে গেছে।
পূর্ণিমা তিথি শুক্রবার, ২৩ শে জুলাই, ২০২১ (ইংরেজি), ৭ ই শ্রাবণ, অর্থাৎ আজ (বাংলা) সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট-এ শুরু হয়েছে।
পূর্ণিমা তিথি সমাপ্তি –
বাংলা – ৮ ই শ্রাবণ, ইংরেজি – ২৪ শে জুলাই, শনিবার। সময়– সকাল ০৮টা ০৬ মিনিট।
আজ, ৭ ই শ্রাবণ, ২৩ শে জুলাই, শুক্রবার পূর্ণিমার নিশি পালন এবং আগামীকাল, ৮ ই শ্রাবণ, ২৪ শে জুলাই, শনিবার শ্রী শ্রী গুরুপূর্ণিমা।
গুরু পূর্ণিমার পূর্ণ যোগ (Yog Timing In Full Moon) -
এই বছর, গুরু পূর্ণিমায়, বিষকুম্ভ যোগ থাকবে সকাল ০৬.১২ অবধি, ২৫ শে জুলাই সকালে ০৩.১৬ অবধি প্রীতি যোগ হবে এবং এর পরে আয়ুষ্মান যোগ শুরু হবে। জ্যোতিষশাস্ত্রে প্রীতি এবং আয়ুষ্মান যোগ একসাথে তৈরি হওয়াকে শুভ বলে মনে করা হয়। প্রীতি এবং আয়ুষ্মান যোগে সম্পন্ন কাজের ক্ষেত্রে সাফল্য পাওয়া যায়। তবে বিষকুম্ভ যোগকে বৈদিক জ্যোতিষ মতে, শুভ যোগগুলির মধ্যে গণনা করা হয় না।
পূর্ণিমার পূজাবিধি (Worship of the full moon) -
শাস্ত্র মতে, গুরু পূর্ণিমায় পান পাতা, নারকেলের জল, মোদক, কর্পূর, লবঙ্গ, এলাচ দিয়ে পুজো করলে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যায়।
কথিত আছে, এই পূর্ণিমাতে গঙ্গায় স্নান করলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং মানুষ দীর্ঘায়ু লাভ করে।
বৈদিক মন্ত্র জপ (Vaidik Mantra Chanting) -
প্রাচীন অভিমত অনুসারে, কোন ব্যক্তি বৈদিক মন্ত্র জপ করে এবং বিষ্ণু সহস্রনাম পাঠ করলে গুরুঢ় বিশেষ অনুগ্রহ লাভ করবেন।
ক্ষীর নিবেদন –
গুরু পূর্ণিমার রাতে ক্ষীর বানিয়ে ভোগ নিবেদন করলে চন্দ্র গ্রহের প্রভাব থেকে মুক্তিলাভ করা যায়।
আরও পড়ুন - Surya Grahan - 2021, বছরের প্রথম সূর্যগ্রহণ কখন? কোথা থেকে দেখা যাবে, জানুন বিস্তারিত
ধর্মমত -
বৌদ্ধ ধর্মমত অনুযায়ী, বোধিজ্ঞান লাভের পরে আষাঢ় মাসের পূর্ণিমায় সারনাথে প্রথমবার শিষ্যদের উপদেশ দেন ভগবান গৌতম বুদ্ধ। আবার হিন্দু পুরাণ মতে, ভগবান শিব বা মহাদেব হলেন আদি গুরু। সপ্তর্ষির সাতজন ঋষি অত্রি, বশিষ্ঠ, পুলহ, অঙ্গীরা, পুলস্থ্য, মরীচি এবং কেতু ছিলেন তাঁর প্রথম শিষ্য। কথিত রয়েছে, স্বয়ং শিব এই তিথিতে আদিগুরুতে রূপান্তরিত হন এবং এই সাতজন ঋষিকে মহাজ্ঞান প্রদান করেন। তাই এই তিথিকে গুরু পূর্ণিমা রূপে পালন করা হয়।
আরও পড়ুন - Lord Buddha Jayanti: আগামীকাল বুদ্ধ জয়ন্তী, জানেন কি এই দিনটির বিশেষত্ব কি?