এই 20টি ব্যবস্থা পোল্ট্রি খামারকে বার্ড ফ্লু থেকে নিরাপদ রাখবে! ভার্মি কম্পোস্ট ইউনিটের জন্য ৫০% পর্যন্ত ভর্তুকি পাওয়া যাবে, শীঘ্রই আবেদন করুন এই হাইব্রিড জাতের টমেটো 900 কুইন্টাল প্রতি হেক্টর ফলন দেবে দুধের সঠিক সময় বেছে নিলে উৎপাদন বাড়বে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
Updated on: 9 January, 2021 1:39 PM IST
Betelvine (Image Credit - Google)

পান, একটি গুরুত্বপূর্ণ লতাজাতীয় বহুবর্ষজীবী অর্থকরী ফসল, যার বৈজ্ঞানিক নাম পাইপার বিটল। ভারতবর্ষে পানের উৎপাদনের দুই-তৃতীয়াংশ হয় পশ্চিবঙ্গে। এ ছাড়াও, ওড়িশা, অসম, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও তামিলনাড়ু রাজ্যে পানের চাষ হয়। পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৯০০০ হাজার হেক্টর এলাকায় পানের চাষ হয়। এর মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর ও হাওড়া জেলা প্রধান, এছাড়াও হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং নদিয়া-তেও পানের চাষ হয়।

স্থানীয় ভাবে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি সহ বীরভূম, বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ জেলাতেও কিছু কিছু পানের চাষ হয়। কাঁচা পাতা চুন, সুপারি, মশলা ইত্যাদি সহযোগে চিবিয়ে খাওয়া ছাড়াও ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে এবং ওষুধ, প্রসাধনী দ্রব্য ইত্যাদি প্রস্তুতিতে পান পাতা ব্যবহার করা হয়।

আজ আমরা এই প্রবন্ধে পান চাষে রোগ ও তার প্রতিকার সমন্ধে বলতে চলেছি।  

রোগের আক্রমণ ও তার প্রতিকার (Disease Management) -

১) গোড়া পচা ও পাতা পচা - 

ছত্রাকঘটিত এই রোগের আক্রমণের ফলে আক্রান্ত পাতাগুলো কিছুটা কম উজ্জ্বল ও নিষ্প্রভ হয়ে যায়। আর মাটির সংলগ্ন কাণ্ডে দু’টো গাঁটের মাঝে মাঝে কালো দাগ দেখা যায়। আক্রান্ত ডাঁটা পচে যায় এবং ডাঁটার ওপরের অংশ ঢলে পড়ে শুকিয়ে যায়। ছত্রাক মাটি থেকে কাণ্ডে প্রবেশ করে এই রোগ হয়। আক্রান্ত পাতার কিনারার দিকে থেকে গোলাকার গাঢ় বাদামি বা কালো রঙের ভেজা ভেজা পচা দাগ দেখা যায়। দাগগুলি দ্রুত বাড়তে থাকে এবং গোটা পাতাটি নষ্ট হয়ে যায়। গাছের নীচের দিকের পাতাগুলি বেশি আক্রান্ত হয়। আর বর্ষাকালীন সময়ে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হয়।

প্রতিকার -

বর্ষাকালে প্রতি মাসে এক বার ১% বোর্দো মিশ্রণ দিয়ে গাছের গোড়া ভিজিয়ে দেওয়া উচিত। এ ছাড়া, কপার অক্সিক্লোরাইড (৪ গ্রাম) বা ০.৫% বোর্দো মিশ্রণ ১৫ দিন অন্তর পাতার নীচের দিকে স্প্রে করতে হবে।

২) স্ক্লেরোসিয়াম জনিত গোড়া পচা রোগ (Rootrot) -

সাধারণত জ্যৈষ্ঠের প্রথম থেকে আষাঢ়-শ্রাবণ মাস পর্যন্ত এই রোগের প্রকোপ দেখা যায়। মাটি সংলগ্ন ডাঁটা ভেজা ভেজা মতো হয়ে পচে যায়, গাছ থেকে পাতা ঝরে পড়ে এবং গাছ ঢলে শুকিয়ে যায়। পচা জায়গার ওপর সাদা তুলোর মতো ছত্রাকের আবরণ দেখা যায়।

প্রতিকার -

আক্রান্ত পাতা ৬’’-৯’’ মাটি সমেত তুলে ফেলে পুড়িয়ে বা গভীর গর্ত করে পুঁতে দিতে হবে। এ ছাড়া প্রতি ১০০ বর্গমিটার জায়গায় ব্রাসিকল ২০% গুঁড়ো ২৫০ গ্রাম হারে মাটিতে ভালো ভাবে ছড়িয়ে দিয়ে সামান্য জল দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে। অথবা ৭৫% ব্রাসিকল ৫ গ্রাম প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে পাতার গোড়ায় মাটি ও মাটি সংলগ্ন কাণ্ডটি ভালো ভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে।

৩) পাতায় দাগ ধরা রোগ -

পাতায় কালো বা বাদামি রঙের অসংখ্য দাগ দেখা যায়। লতার নীচের দিকের পাতায় প্রথমে দেখা যায় পরে উপরের পাতাও আক্রান্ত হয়। দাগগুলি ঘিরে থাকে হলুদ আভা। অপেক্ষাকৃত গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় এই রোগ লতার কাণ্ডে আক্রমণ করে থাকে। কাণ্ডের সবুজ ত্বকের নীচে গোলাকার ছোট দাগ পড়ে। পরে অনুকূল আবহাওয়ার কারণে দুই বা ততোধিক দাগ একত্রে মিলে কাণ্ডের চারিদিকে ছড়িয়ে যায়। দাগগুলি শেষে ফেটে গিয়ে ফোঁটা ফোঁটা আঠাও বেরোতে পারে। সাধারণত বর্ষার প্রারম্ভে বা শেষে এই রোগের প্রকোপ বাড়ে।

প্রতিকার -

প্রতিরোধক ব্যবস্থা হিসাবে বর্ষা শুরুর আগে কপার অক্সিক্লোরাইড ৪ গ্রাম / লিটার বা ০.৫% বোর্দো মিশ্রণ জলে গুলে ডাঁটায় ও পাতায় ভালো ভাবে স্প্রে করতে হবে। ২০ দিন অন্তর ২-৩ বার স্প্রে করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন - বাড়ির ছাদ বাগানে পিটুনিয়া ফুল চাষ (Petunia flower cultivation)

English Summary: Disease of betel vine cultivation and its management
Published on: 09 January 2021, 01:36 IST