কৃষিজাগরন ডেস্কঃ কসমস একটি বিদেশি ফুল।বাড়ির সৌন্দর্য বাড়াতে এই ফুলের জোড়া মেলা ভাড়। তবে আপনি ব্যবসায়িক ভাবেও এই ফুলের চাষ করতে পারেন।এই ফুলের চাহিদা বাজারে ব্যপক পরিমানে রয়েছে।খুব অল্প টাকা বিনিয়োগ করে প্রচুর পরিমানে মুনাফা অর্জন করতে এই ফুল আপনাকে সাহায্য করতে পারে।তবে ব্যবসায় পুঁজি নিয়োগের আগে আপনাকে অবশ্যই কয়েকটি বিষয় আপনাকে অবশ্যই জেনে নিতে হবে।
কসমস ফুলে কি ঔষধি গুন আছে?
কসমসে প্রচুর পরিমানে ঔষধি গুন রয়েছে। জন্ডিস, জ্বর এবং অন্যান্য রোগগুলির চিকিত্সার ক্ষেত্রে কসমস ভালো ফল দেয় । এই উদ্ভিদের জন্য ঔষধি ব্যবহারের খুব কম প্রমাণ রয়েছে, যদিও কেউ কেউ পরামর্শ দেন যে কসমসের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং অক্সিডেটিভ ডিএনএ ক্ষতির বিরুদ্ধে একটি প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিউলিপ বাগান কোথায় আছে জানেন?কত ফুল ফোঁটে জানলে অবাক হবেন
কসমস ফুল কখন ফোটে ?
শীতের শুরু থেকে মার্চের শেষ পর্যন্ত এই ফুল ফোটে। এর বিভিন্ন ধরনের জাতগুলি শীতকালীন আবহাওয়ায় উদ্যানগুলিতে আলংকারিক উদ্ভিদ হিসাবে জনপ্রিয়।
কসমসের আগের নাম কি?
কসমস ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম Cosmos bipinnatus।
কসমস গাছ কত লম্বা হয়?
এটি সাধারণত ২ থেকে ৪ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট হয়। গোলাপী, সাদা, বেগুনী রং এর হয়ে থাকে। পাতার কিনারাগুলি খাঁজকাটা থাকে। লম্বা ডাটা, এক বা একাধিক ফুল হয়। এটি অঙ্কুরোদগমে ৭ থেকে ১০ দিন সময় লাগে এবং তাপমাত্র ২৪°C এবং এটি ফুল দেওয়া শুরু করে ৬০ থেকে ৯০ দিমের মধ্যে। এর উপযুক্ত মাটির পি এইজ ৬.০ থেকে ৮.৫ হলে ভাল হয়। পূর্ণ সূর্যালোকে এবং কিঞ্চিত ছায়াযুক্ত জায়গায়ও জন্মায়। এর সৌন্দর্যে প্রজাপতি ও কীটপতঙ্গকে সহজেই আকৃষ্ট হয়।
আরও পড়ুনঃ ঘরের সৌন্দর্য বাড়াতে চান? তাহলে এই গাছগুলি লাগান,অক্সিজেনও পাবেন
কসমস ফুলের বিশেষ বৈশিষ্ট্য
১.কসমসের বীজ দ্রুত ছড়ায় এবং খুব কম সময়ের মাঝেই আশেপাশের এলাকা দখল করে ফেলতে পারে বলে আমেরিকার কোনও কোনও জায়গায় একে আগাছা হিসেবে দেখা হয়।
২.কসমস একটি তৃণ জাতীয় গাছ। সাধারণত বহুবর্ষজীবী হলেও বাগানে একে চাষ করা হয় একবর্ষজীবী গাছ হিসেবে।
৩. গাছের উচ্চতা দ্রুতই বেশ লম্বা হয়ে যায় বলে অন্যান্য ছোট ফুলগাছের পেছনে লাগালে কসমস গাছ বেশী সুন্দর লাগে। অবশ্য কিছু কিছু কসমস গাছ এক ফুটের মতো ছোটও হয়।
৪.লম্বা হয়ে গেলে গাছ ঢলে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। সেক্ষেত্রে এর পাশে কাঠি পুঁতে তার সাথে গাছের কাণ্ড বেঁধে দিতে পারেন।
৫.কসমস গাছ লাগানোর জন্য খুব একটা উর্বর মাটি দরকার হয় না। বেশ উর্বর মাটিতে জন্মালে এরা হয়ে ওঠে লম্বা এবং লিকলিকে, আর এক্ষেত্রে ফুলের সংখ্যা কমে যায়।
৬.হালকা ছায়াতে জন্মালেও একেবারে পূর্ণ রৌদ্রোজ্জ্বল অবস্থায় এটা বেশী ভালো হয়।
৭. মাটিতে বীজ পড়লেই এটা জন্মানো শুরু করে। হালকা আর্দ্রতায় ৭ থেকে ১০ দিনের মাঝে এর অঙ্কুরোদগম ঘটে। তবে বহুবর্ষজীবী কসমস জন্মায় রাইজোম (এক ধরণের বিশেষায়িত মূল) থেকে।
৮.কসমসের চারা অনেকগুলো একসাথে হয়। এদেরকে তুলে পাতলা করে দেবার দরকার নেই কারণ ঘন হয়ে জন্মালেই ফুল ভালো হয়।
রোপনের পর পরিচর্যা
১.ফুল শুকিয়ে যেতে শুরু করলে তাকে ছিঁড়ে ফেলাই বুদ্ধিমানের কাজ কারণ এর ফলে নতুন আরও ফুল ফোটার সুযোগ পায়।
২. কসমস শুকনো পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে। বাগানের মাটিতে কসমস হলে তাতে সপ্তাহে একবার পানি দিলেও চলে। বেশী ঘন ঘন পানি দিলে ফুল ধরা বন্ধ হয়ে যাবে।
৩.কসমসে তেমন একটা রোগ-জীবাণু বা পোকামাকড়ের আক্রমণ হয় না।তাই কীটনাশক ব্যবহার তেমন প্রয়োজন নেই
৪.জমিতে বীজ বপনের উপযুক্ত সময় অক্টোবর থেকে নভেম্বর। সাধারণত বীজ থেকে চারা গজানোর প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ দিন পর থেকে গাছে ফুল ফুটতে থাকে। সরাসরি জমি ও টবে এ ফুল উৎপাদন করা যায়। রৌদ্র উজ্জ্বল পরিবেশে সু-নিষ্কাশিত দোঅাঁশ মাটি এ ফুল চাষের জন্য উত্তম, তবে এঁটেল দোআঁশ মাটিতেও ভালো জন্মে।