ভারতীয় বাড়ির প্রতিটি রান্নাঘরে হলুদের তাৎপর্য সম্পর্কে সকলেই অবহিত। এই হলুদ বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি ছাড়া ভারতীয় রন্ধনপ্রণালীতে প্রচলিত রান্না সম্পূর্ণ নয়। এর ঔষধি গুণাগুণও যথেষ্ট। হলুদ শরীরের বিষাক্ত উপাদানগুলি দূর করতে, শরীরের রক্ত পরিষ্কার করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ব্যবহৃত হয়। এটি অন্ধ্র প্রদেশ, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাট, উড়িষ্যা, কর্ণাটক, মেঘালয়, মহারাষ্ট্র, আসামে বিশিষ্টভাবে চাষ হয়।
এর চাষাবাদকালে প্রায়শই বিভিন্ন রোগ এবং পোকার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এই রোগ ও পোকামাকড়ের প্রাদুর্ভাবের ফলে হলুদ কম উৎপাদন হওয়ার সাথে সাথে হলুদের মানও হ্রাস পায়। এই কারণে কৃষকদের অনেক সময় ক্ষতি হতে পারে। এ জাতীয় পরিস্থিতিতে শস্য রক্ষা জরুরি। হলুদের কয়েকটি বিশেষ রোগ সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হল।
রোগ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে তথ্য -
রুট বোরার: এটি হলুদের সবচেয়ে মারাত্মক পোকা। প্রায় ২০ মিমি পাখনা বিশিষ্ট মাঝারি আকারের এই পোকার ডানা কমলা রঙের। জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই পোকার প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এই পোকার প্রাদুর্ভাব প্রথমে অভ্যন্তরের পাতায় প্রদর্শিত হয়।
রোগ ব্যবস্থাপনা - ২১ দিনের ব্যবধানে হলুদের খেতে ০.১% পরিমাণে মেলাথিয়ন স্প্রে করুন। এর সাথে ০.৫% নিম তেলও স্প্রে করতে পারেন।
লিফ স্পট: এই রোগে পাতার উভয় প্রান্তে ছোট, ডিম্বাকৃতি এবং বাদামী দাগ দেখা দেয়। কিছুক্ষণ পরে এগুলি গাঢ় হলুদ এবং বাদামী হয়ে যায়। এক্ষেত্রে গাছপালাও ঝলসে যায়। রাইজোমের ফলন হ্রাস পায়।
রোগ ব্যবস্থাপনা - এর জন্য কৃষকরা ম্যানকোজেব ০.২% স্প্রে করে রোগটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
নিমাটোড কীটপতঙ্গ: নিমাটোড হলুদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। গাছের শিকড় থেকে শুরু করে কান্ড, পাতা, ফুল এবং বীজেও এটি সংক্রামিত হয়।
রোগ ব্যবস্থাপনা - নিমোটোড সমস্যার ব্যবস্থাপনার জন্য বপনের সময় পোমোনিয়া ক্ল্যামাইডোস্পোরিয়া প্রতি বেডে ২০ গ্রাম পরিমাণে (১০৬সিএফইউ / গ্রাম) ছড়িয়ে দিন।
রাইজোম পচে যাওয়া: পাইথিয়াম গ্র্যামিনিকোলামের কারণে হলুদ চাষে এই রোগ দেখা দেয়। এটিতে হলুদের গাছপালা পড়তে শুরু করে এবং একই সাথে রাইজোমে পচন শুরু হয়।
রোগ ব্যবস্থাপনা - এই রোগ প্রতিরোধের জন্য, কৃষকরা ম্যানকোজেব ০.৩% জমিতে স্প্রে করুন।
স্বপ্নম সেন ([email protected])
Share your comments