করোনা মহামারী আবহে ২০২১-২২ অর্থবছরে ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা কৃষি ঋণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা গত অর্থবছরের লক্ষ্যের চেয়ে ৮ শতাংশের মত বেশি। শুধু তাই নয়, তার সাথে কৃষি ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ করার কথা বলা হয়েছে নতুন অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা এবং কর্মসূচিতে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, মহামারীর কারণে সৃষ্ট আর্থিক সঙ্কট মোকাবিলা এবং সরকারের ‘কৃষি ও কৃষকবান্ধব নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এই কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি উদ্ভাবন করা হয়েছে | যাতে প্রত্যেক কৃষকবন্ধুদের এই কঠিন সময়ে সাহায্য করা যায় | দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুধা মুক্তি এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে পল্লী অঞ্চলে পর্যাপ্ত কৃষি ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধি করে কৃষি উৎপাদন বাড়ানোই এর প্রধান লক্ষ্য।
এবারের প্রধান উদ্দেশ্য ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকার কৃষি ও পল্লী ঋণের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৭ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা বিতরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন -West Bengal Lockdown Extends: ১৫ আগস্ট পর্যন্ত রাজ্যে বাড়ানো হলো কোভিড নিয়ন্ত্রণ বিধি
বাংলাদেশ ব্যাংক গত অর্থবছরে মোট ২৬ হাজার ২৯২ কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্য স্থির করেছিল। এর মধ্যে ২৫ হাজার ৫১১ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো, যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৭ শতাংশের মত। সাধারণত, মোট ৩০ লাখ ৫৫ হাজার ১৬৬ জন গত অর্থবছর কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন। এর মধ্যে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও এমএফআই লিংকেজের মাধ্যমে ১৬ লাখ ৫ হাজার ৯৪৭ জন নারী পেয়েছেন ৯ হাজার ২৮৭ কোটি টাকার ঋণ।
২২ লাখ ৪৫ হাজার ৫১২ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১৭ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা এবং চর ও হাওর অঞ্চলের মত অনগ্রসর এলাকার ৭ হাজার ৭৯৬ জন কৃষক প্রায় ৩৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা কৃষি ও পল্লী ঋণ পেয়েছেন।
নতুন নীতিমালা ও কর্মসূচি:
১) সোনালী মুরগী পালনের জন্য ঋণ দেওয়ার নিয়ম
২) মহিষ ও গাড়ল পালনের জন্য ঋণ দেওয়ার নিয়ম
৩) ফসলভিত্তিক ঋণদানের নিয়মে একর প্রতি ঋণসীমা কৃষকদের প্রকৃত চাহিদা ও বাস্তবতার নিরিখে ১৫% পর্যন্ত বৃদ্ধি/হ্রাস করা
৪) মাছ চাষের ঋণদানের নিয়মে একর প্রতি ঋণ সীমা বৃদ্ধি করা
৫) ব্যাংকের মাধ্যরেম বিতরণ করা ঋণের তদারকি জোরদার করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ
মহামরীর সঙ্কট মোকাবিলায় চলতি মূলধন ভিত্তিক কৃষি খাতে (মৌসুম ভিত্তিক ফুল ও ফল চাষ, মৎস্য চাষ, পোল্ট্রি, ডেইরি ও প্রাণিসম্পদ খাত) চলতি মূলধন সরবরাহের জন্য গত অর্থবছর বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব অর্থায়নে ৫ হাজার কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করা হয়েছিল, যার মেয়াদ গত জুন মাসে শেষ হয়েছে। সেই স্কিমের আওতায় তফসিলি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪ হাজার ২৯৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়া সুদ-ক্ষতি সুবিধার আওতায় শস্য ও ফসল খাতে ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণের জন্য নেওয়া নেওয়া স্কিমের আওতায় মোট ৪ হাজার ৮৮০ কোটি ৭১ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে।
আরও পড়ুন -Cloudbursts: বাংলাসহ অন্য রাজ্যগুলিতে IMD -র চরম সতর্কতা জারি