জাতীয় কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন ব্যাংক (NABARD) গ্রামীণ অঞ্চলের কৃষক ও দরিদ্র মানুষের জন্য চলতি আর্থিক বছরে পশ্চিমবঙ্গে এখন পর্যন্ত ১০৫০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করেছে, পিটিআই সূত্রে এমনটাই জানা গেছে।
নাবার্ডের এক আধিকারিকের কথায়, যে স্পেশাল লিকুইডিটি ফেসিলিটি (এসএলএফ) প্রকল্পের আওতায় আর্থিক প্যাকেজ রাজ্য সমবায় ব্যাংক, আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাংক এবং ক্ষুদ্র-আর্থিক সংস্থাগুলিকে (MFI) দেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, নাবার্ড ইতিমধ্যেই ৭২০ কোটি টাকা রাজ্য সমবায় ও গ্রামীণ ব্যাংকগুলিকে দিয়েছে। এমএফআইগুলির মাধ্যমে ঋণ শীঘ্রই দেওয়া শুরু হবে।
নাবার্ড MFI-এর খাতে ৩০০ কোটি টাকা, রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্কগুলির জন্য ৭০০ কোটি এবং আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাংকের জন্য ৫০ কোটি অনুমোদন করেছে। ডেভলপমেন্ট ব্যাংকের ব্যাখ্যায়, রাজ্যের গ্রামীণ অর্থনীতিতে ঋণের টাকা যাতে পৌঁছায়, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, কোভিড-১৯-এর জন্য অর্থনীতি যথেষ্ট লোকসানের মুখ দেখেছে। তাই অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এখন কৃষিই ভরসা। ভারতীয় কৃষক সংঘের ব্যখ্যায়, পরিযায়ী শ্রমিকরা নিজ নিজ রাজ্যে ফিরে আসায় দেশের বহু রাজ্যে শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানোর জন্য পারিশ্রমিক দ্বিগুণ করা হয়েছে। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, পশ্চিমবঙ্গ, তেলেঙ্গানা এবং অন্ধ্র প্রদেশের অনেক কৃষক নার্সারি বেড প্রস্তুত করতে এবং ধান বপন করতে স্থানীয় শ্রমিকদের একত্রিত করার চেষ্টা করছেন। তিরুপতি এগ্রি ট্রেডের কর্ণধারের সুরজ অগ্রবালের কথায়, “রাজ্যে কৃষি খাতে শ্রমিক খরচ ৫০% বেড়েছে। কোভিডের সময় মাঠে কাজের জন্য শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। করোনা আতঙ্কও রয়েছে যথেষ্ট। তাছাড়া, চাষবাসের জন্য যে যন্ত্রপাতি দরকার তার যোগানেও সমস্যা হচ্ছে”।
অন্যদিকে, বেশ কিছু দিন আগেই সরকার জাতীয় কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন ব্যাংকের (নাবার্ড) মাধ্যমে কৃষকদের জন্য ৩০,০০০ কোটি টাকার স্পেশাল লিকুইডিটি ফেসিলিটি খাতে অনুদান ঘোষণা করেছে। সরকারী মালিকানাধীন কৃষিক্ষেত্র ঋণদানকারী ন্যাবার্ডকে তাৎক্ষণিকভাবে রবি শস্যের জন্য কৃষকদের ফসল কাটার পরে প্রয়োজনীয় কাজের জন্য মূলধনের যোগান দেওয়া হবে। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ করোনা ভাইরাস (সিওভিড -১৯) মহামারী ও লকডাউনজনিত কারণে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় সরকারের অর্থনৈতিক প্যাকেজের ঘোষণা করেন।
সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, ৩০,০০০ কোটি টাকার লিকুইডিটি চলতি অর্থিক বছরে দেওয়া হবে। এটি নাবার্ড দ্বারা প্রদত্ত ৯০,০০০ কোটি টাকারও যে অর্থরাশি তার থেকে অতিরিক্ত হিসাবেই দেওয়া হবে। ২.৫ কোটি নতুন কৃষককে এই প্যাকেজের আওতায় আনা হচ্ছে। গ্রামীণ এবং সমবায় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে এই টাকা দেওয়া হবে। সমালোচকদের ব্যাখ্যায়, এই ব্যবস্থার জন্য কম দাম এবং ক্রমবর্ধমান চাহিদার মৌলিক সমস্যা থেকেই যাবে। তার সমাধান হবে না। তাছাড়া, ঋণ প্রকল্পে ২.৫ কোটি নতুন কৃষককে তালিকাভুক্ত করার পদক্ষেপের কোনও সময়সীমা নেই।
আবার, সরকারী মালিকানাধীন কৃষিক্ষেত্র ঋণদানকারী নাবার্ড, যা সাধারণত বাজার থেকে টাকা তুলে মুখ্যত গ্রামীণ কৃষি পরিকাঠামো উন্নত করতে অনুদান দিয়ে সাহায্য করে। জুন মাসেই খারিফ শস্যের ফলন শুরু হবে। তার আগেই যাতে নাবার্ডের হাতে টাকা চলে আসে তা দেখা হচ্ছে।
সুব্রত সরকার
Related link - https://bengali.krishijagran.com/news/through-kisan-credit-card-farmers-will-get-loan-upto-rs-1-60-lakh-without-paying-emi/