পশ্চিমবঙ্গের শকুনের নির্বংশ হওয়ার পেছনে এতদিন কারণ দেখানো হত নগরায়ন, বা ডাইক্লোফেনাক-কে। কিন্তু এতদিন পর বোঝা গেল এর আসল কারণ, ভাগাড়ে মাংস যে মানুষের পাতে যেত, সে কথা কী ঘুণাক্ষরে টের পেয়েছিলো আজকের কলকাতাবাসী? কিন্তু সব জানাজানি হবার পর অনেকেই (মানে যারা রেস্টুরেন্টের রেগুলার কাস্টমার) অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ বিশেষজ্ঞদের মতে বাসি বা পচা মাংস খেলে মানব অন্ত্রে ফিতাকৃমি, কেঁচো কৃমি ইত্যাদি বাসা বাঁধে। এমনিতে -৪০ ডিগ্রিতে মাংস সংরক্ষণ ২০ দিনের বেশী করা যায় না, তারমধ্যে ৩৭ ডিগ্রি temperature এ ভাগাড়ে পড়ে থাকা মৃত জীবজন্তুর দেহে নানাবিধ ক্ষতিকারক ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে, এহেন অবস্থায় সেই পচা গলা মাংসকে সংরক্ষণ এর জন্য মেশানো হয় সাঙ্ঘাতিক সব chemical। এই মাংস খেলে পেটের রোগ অবশ্যম্ভাবী। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এর প্রভাব আরও মারাত্মক। এমনিতেই বাচ্চাদের ইনফেক্টেড হওয়ার প্রবণতা খুব বেশী, পচা মাংসে থাকা Shiella, Salmonella ইত্যাদি শিশুদের টাইফয়েডের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, যদি কুকুরের মাংস খাওয়া হয় তাহলে যে কোনো মানুষ Clostrigdium botulinum নামক ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে, আবার Bacillus anthracis এর দ্বারাও আক্রান্ত হতে পারে এবং অ্যানথ্রাক্স রোগের শিকার হতে পারেন। কিছু কিছু রোগজীবাণু বিশেষজ্ঞদের মতে এতদিন পর জানা যাচ্ছে অ্যানথ্রাক্স জীবাণু আসছে কোথা থেকে। তবে খেলেই যে সাথে সাথে রোগ হবে তার কোনও মানে নেই, অনেকের শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভালো তাদের ক্ষেত্রে বারংবার বাইরের এই সব খাদ্য গ্রহণের ফলে বাড়তে পারে টক্সিন এর মাত্রা, যা পরবর্তীকালে যেকোনো মারণ রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই এখন সস্তা হোটেলের বন্ধ কেবিনে মাংস খাওয়ার দিন শেষ, বাড়িতে মা কিংবা গিন্নির ভালোবাসা মাখানো Mutton কিংবা Chicken খান এবং সুস্থ থাকুন।
- প্রদীপ পাল