খরিফ মরসুমে, ভারতে অনেক কৃষক আমন ধানের আবাদ করেন। ধানকে নগদ ফসল হিসাবে বিবেচনা করা হয়, কারণ এটি সাধারণত বাণিজ্যিক কারণে উত্পাদিত হয় এবং এজন্যই এই ফসল কৃষকদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিবেচিত। য়ামাদের দেশের কৃষকরা বিভিন্ন ধরণের ধান বপন করেন, তবে সাধারণত বাসমতী চালের বিভিন্ন জাত ভারতে বড় আকারে উত্পাদিত হয়।
উল্লেখ্য, বিগত কয়েক বছর ধরে কৃষকরা বাসমতী ধান উৎপাদনে আরও বেশি রাসায়নিক ব্যবহার করতে শুরু করেছেন বেশী ফলনের আশায়। ফলস্বরূপ, ফলন হ্রাস পাচ্ছে। এমতাবস্থায় কৃষকদের মাঝে এসেছে নতুন এক জাতের বাসমতী চাল। নতুন জাতটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাসমতী ১৬৩৭’। এই নতুন জাতটি রোগ প্রতিরোধী হিসাবে বিবেচিত, যা বিভিন্ন রোগ থেকে কোন রাসায়নিক স্প্রে ছাড়াই ফসলকে রক্ষা করে ভাল ফলন নিশ্চিত করে।
বাসমতী - ১৬৩৭: একটি নতুন বৈকল্পিক
ইন্ডিয়ান কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (আইসিএআর) পুসা বাসমতী -১ থেকে ১৬৩৭ জাতের বাসমতী ধানের (এটি ধানের উন্নত জাত) বিকাশ করেছে। ভারত সরকারের সীড অ্যাক্টের অধীনে বাসমতির আরও অনেক নতুন জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। ১৯৬৬ সাল থেকে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে প্রায় ২৯ টি প্রজাতির বাসমতী ধানের চাষ হয়।
রোগ প্রতিরোধী বাসমতী - ১৬৩৭
এই নতুন জাতটির উচ্চ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে। ধানের জাত পুসা বাসমতী -১ এ ব্লাস্ট রোগের ঝুঁকি রয়েছে, তবে নতুন জাতটিতে এই রোগ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা নগণ্য। এই ফসলে রাসায়নিক স্প্রের প্রয়োজন হয় না। কৃষকরা এ জাতটি বপন করে একর প্রতি ২২ থেকে ২৫ কুইন্টাল ফলন পেতে পারেন। এ জাতের বাসমতী বপন করে তারা তাদের আয় দ্বিগুণ করতে পারেন।
ব্লাস্ট রোগ কী?
এই রোগটি পিরিকুলারিয়া অরিজা নামক ছত্রাক থেকে হয়, যা ধানের ফসলের জন্য খুব ক্ষতিকারক। এই রোগের সংক্রমণে পাতা এবং এর নীচের অংশগুলিতে ছোট ও নীল দাগ দেখা যায়। রোগের লক্ষণ প্রথমে পাতায় প্রদর্শিত হয় এবং এরপর ফসলে আক্রমণ ঘটে।
দেশে যে যে রাজ্যে বাসমতি উত্পাদন হয় -
দেশজুড়ে বহু রাজ্যে বাসমতী চাষ হয়। এই রাজ্যের মধ্যে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, জম্মু কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ এবং দিল্লি। এর মধ্যে পাঞ্জাবকে বাসমতি উত্পাদনে শীর্ষস্থানীয় রাজ্য হিসাবে বিবেচনা করা হয়। কোনও কৃষক যদি ধানের আবাদে এই জাতটি বপন করতে চান, তবে তারা স্থানীয় কেভিকে তে বিশেষজ্ঞদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। তারা সম্ভাব্য দামে সেখান থেকে বীজও পেতে পারেন।
স্বপ্নম সেন