অ্যালোকোহলের মধ্যে মানুষের পছন্দের তালিকায় সবচেয়ে উপরে রয়েছে বিয়ার। বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি হোক কিংবা গরমের দিন বিয়ার খেতে কখনওই আপত্তি করে না মানুষ। কিন্তু আপনি কি জানেন বন্ধুরের সঙ্গে আড্ডার সঙ্গী হওয়া ছাড়াও বিয়ার আমাদের আরও বিভিন্নভাবে উপকার করতে পারে? মানসিক উদ্বেগ কমানোর জন্য বিয়ার যেমন উপকারী তেমনই বিয়ারের বেশ কিছু গুণাগুণ আছে। আমাদের স্বাস্থ্য, চুল ও ত্বকের জন্য বিয়ার অত্যন্ত উপকারী- যা হয়তো আমরা অনেকেই জানি না। লন্ডনের গায়’স হাসপাতালের একটা গবেষণায় জানা গেছে বিয়ারে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় তা আমাদের ত্বক সুন্দর ও উজ্জ্বল করে। বার্লিতে ফেরুলিক অ্যাসিড থাকায় তা থেকে বিয়ার তৈরি হয়, যার ফলে বিয়ার আমাদের ত্বকের উপকার করে। তবে বিয়ার যে শুধুমাত্র ত্বকের উপকার করে তা নয়। শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার হিসাবে বিয়ার ব্যবহার করলে আমাদের চুলেরও অনেক উপকার হয়।
কন্ডিশনার হিসাবে কীভাবে বিয়ার ব্যবহার করবেন জেনে নিনঃ
হলিউড অভিনেত্রী ক্যাথরিন জিটা জোনস 2009 সালে জানিয়েছিলেন তিনি বিয়ার এবং মধুর সাহায্যে নিজের চুল কণ্ডিশন করেন। তারপর থেকেই বহু বিশেষজ্ঞ এবং ব্লগার চুলের স্বাস্থ্যের জন্য বিয়ারের উপকারিতা বর্ণনা করেছেন। চুল স্বাস্থ্যকর করা থেকে শুরু করে চুল পড়া দূর করা এবং চুল মজবুত করতে বিয়ার অত্যন্ত সাহায্য করে।
অন্যদিকে বেশ কিছু ব্র্যান্ড বিয়ার শ্যাম্পু এবং অন্যান্য প্রোডাক্ট বাজারে নিয়ে এসেছে এবং জানিয়েছে ওই প্রোডাক্টগুলো ব্যবহারে চুল উজ্জ্বল, মজবুত ও ঘন হয়। বিয়ারে সিলিকা থাকে যা চুল মজবুত করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। আপনিও যদি চুলে বিয়ার ব্যবহার করতে চান তবে জেনে নিন কী ভাবে তা করবেন।
বাড়িতেই চুলে বিয়ার ব্যবহারের পদ্ধতি জেনে নিন এখানেইঃ
- একটা বাটিতে বা জগে কিছুটা বিয়ার ঢালুন। কিছুক্ষণের জন্য পাত্রেই বিয়ারটা রেখে দিন। বিয়ারটা ডি-কার্বোনেটেড হয়ে গেলে অন্য একটা ফাঁকা পাত্রে সেটা স্থানান্তরিত করুন। তবে একথা খেয়াল রাখবেন, চুলে কার্বোনেটেড বিয়ার ব্যবহার করা উচিত নয় না।
- আপনি নিয়মিত যে শ্যাম্পু ব্যবহার করেন তা দিয়েই চুল ধুয়ে ফেলুন। আর তারপর আপনার কন্ডিশনারের পরিবর্তে বিয়ার দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। মাথায় সরাসরি বিয়ার ঢেলে দিয়ে চুলের গোড়ায় আস্তে আস্তে এক মিনিট ম্যাসাজ করুন। বিয়ারে উপস্থিত খনিজ দ্রব্য আমাদের ত্বক ও চুলের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। তৈলাক্ত স্ক্যাল্পের ক্ষেত্রে বিয়ার অতন্ত উপকারী। এরপর মাথায় কিছুক্ষণ বিয়ারটা রেখে দিন।
- এরপর ঠাণ্ডা জলে বিয়ারটা ধুয়ে ফেলুন। মাথায় কিছুটা বিয়ার থেকে গেলেও চিন্তা নেই কারণ বিয়ার চুলের পক্ষে অতন্ত উপকারী। সপ্তাহে মাত্র এক বা দুইদিন এই পদ্ধতি অবলম্বন করুন কারণ অতিরিক্ত ব্যবহারে আপনার চুল রুক্ষ, শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।
টিপ: বিয়ার কন্ডিশনারের উপকারিতা বাড়াতে চাইলে আরও কিছু চুলের উপকারী উপকরণ যোগ করতে পারেন। মধু, অ্যাপেল সিডার ভিনিগার, ডিম, ক্যামোমাইল তেল, জোজোবা তেল ইত্যাদি বিয়ারের সঙ্গে যোগ করতে পারেন।
সুতরাং এবার আপনি বিয়ারের এই গুণটা জেনেই গেছেন। চুল পড়া, খুশকি বা অন্য কোনও ক্রনিক সমস্যা থাকলে বিয়ার চুলের থেকে দূরে রাখাই বাঞ্ছনীয়। সেক্ষেত্রে মেডিকেটেড কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত। তবে নিজের চুলের যত্নের ক্ষেত্রে কোনও পরিবর্তন আনার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অবশ্যই প্রয়োজন।
- Sushmita Kundu(sushmita@krishijagran.com)
Share your comments