এই 20টি ব্যবস্থা পোল্ট্রি খামারকে বার্ড ফ্লু থেকে নিরাপদ রাখবে! ভার্মি কম্পোস্ট ইউনিটের জন্য ৫০% পর্যন্ত ভর্তুকি পাওয়া যাবে, শীঘ্রই আবেদন করুন এই হাইব্রিড জাতের টমেটো 900 কুইন্টাল প্রতি হেক্টর ফলন দেবে দুধের সঠিক সময় বেছে নিলে উৎপাদন বাড়বে, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
Updated on: 29 June, 2021 1:33 PM IST
Snail (Image Credit - Google)

গ্রামে গঞ্জে অজস্র ছোট-বড় পরিত্যক্ত পুকুর ডোবায় দেখা মেলে শামুকের। শামুক চাষের মধ্য দিয়েও সৃষ্টি হতে পারে বহু কর্মসংস্থান, আসতে পারে জল-কৃষিতে সাফল্য। জলাশয়গুলিতে মাছ ও চিংড়ি ছাড়াও আরো অনেক বৈচিত্র্যপূর্ণ জলজ সম্পদ রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো শামুক। অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় অপ্রচলিত এসব জলজ প্রাণীর বাণিজ্যিক চাষের (Commercial Cultivation) উদ্যোগ নিলে লাভবান হওয়া সম্ভব।

আপনার যদি পরিতক্ত্য পুকুর বা ডোবা থাকে, তবে আর দেরি না করে ঐ জলাশয়ে শামুক চাষে নেমে পড়ুন। যে জলাশয়েকে বাদের খাতায় ফেলে দিয়েছিলেন সেই জলাশয়ে থেকে আসতে পারে বড় অঙ্কের টাকা। কিন্তু কিভাবে ? শামুক চাষ অত্যন্ত সহজ পদ্ধতি। শামুকের প্রজনন ক্ষমতা বেশি হওয়ায় তা বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করা যায়।    

শামুক চাষ (Snail Farming) -

প্রতি ডেসিম্যাল পুকুরে এক কেজি গোবর, এক কেজি খোল (সরষে) ও ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া জলে ভালোভাবে মেশাতে হবে। এ মিশ্রণ সমান চার ভাগে ভাগ করে তিন দিন অন্তর জলে ছিটিয়ে দিতে হবে। পুকুরের জলের রং যখন গাঢ় সবুজ হবে, তখন বুঝতে হবে পুকুরটি শামুক চাষের উপযোগী হয়েছে। এরপর খালবিল বা পুকুর থেকে শামুক সংগ্রহ করে প্রতি ডেসিম্যাল হিসেবে ২৫০ গ্রাম শামুক পুকুরের চারদিকে ছিটিয়ে দিতে হবে। পরবর্তী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে শামুক ব্যাপকভাবে বংশবিস্তার করবে। এরপর ৩৫ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ শামুক পাওয়া যাবে। চাষ পদ্ধতি শুরুর ৪০-৪৫ দিন পর শামুক সংগ্ৰহ করতে হবে। এজন্য বাঁশ বা কাঠের বড় লাঠি পুকুরে দিয়ে রাখতে হবে শামুক গুলো ঐ বাশের সাথে আটকে থাকবে । এবার বাঁশ গুলোকে তুলে এনে শামুক গুলো ছাড়াতে হবে।

শামুক উৎপাদন -

এই শামুককে মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহারের জন্য শামুক গুলো ভেঙ্গে রোদে শুকিয়ে পরবর্তীতে মেশিনের সাহায্যে গুঁড়ো করতে হবে। এবার অন্যান্য খাবারের উপাদানের সঙ্গে মেশানোর পর পিলেট মেশিন দিয়ে মাছের খাবার তৈরি করতে হবে।  আগেই আলোচিত হয়েছে যে, এই ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করে একদিকে যেমন মাছের উৎপাদন খরচ কমবে, তেমনি মাছের প্রাকৃতিক স্বাদ অক্ষুন্ন থাকবে ও স্বাস্থ্যকর মাছ পাওয়া যাবে। বাজার সৃষ্টি করতে পারলে বাণিজ্যিকভাবে শামুক চাষ করে প্রচুর টাকা আয় করা সম্ভব। শামুক চাষে কম পুঁজি লাগে বলে সহজেই করা সম্ভব। পুকুর থেকে হেক্টরপ্রতি বছরে চারটি ধাপে চার থেকে ছয় মেট্রিক টন শামুক উৎপাদন করা সম্ভব।

চুন তৈরির কাজে শামুকের খোলস ব্যবহার হওয়ার এর চাহিদাও রয়েছে। শামুক চাষে কম পুঁজি লাগে বলে এ থেকে আয়ও হয় অনেক বেশি। শামুককে উনুনে পুড়িয়ে চুন তৈরি হয়। উনুনটি ছোট্ট কুয়োর মতো আকারের করতে হবে। উনুনের নিচে ইট বিছিয়ে দিতে হবে। ইটের ওপর সাজানো হয় ভাঙা টালির অংশ। এর ওপর ছোট ছোট কাটা জ্বালানী কাঠের টুকরো বিছিয়ে তাতে কেরোসিন তেল ঢালা হয় আগুন ধরানোর জন্য। এরপর আগুন ধরিয়ে ধুঁয়া ওঠা উনুনে ঢালা হয় শামুকের খোসা। এই শামুকের খোসার ওপর আবার দেওয়া হয় জ্বালানী কাঠের টুকরো এবং তার ওপরে আবারো শামুক। অর্থাৎ জ্বালানী কাঠের টুকরো আর শামুক স্তরে স্তরে সাজাতে হবে।

শামুকের খোসা হল চুন তৈরির প্রাচীন কাঁচামাল। এই সব খোসায় আছে চুনের মূল উপাদান ক্যালসিয়াম কার্বনেট। জ্বালানী কাঠ ও শামুকের খোসায় উনুন ভরে উঠলে, উনুনের নিচের গর্ত দিয়ে বাতাস করতে হবে। বাতাস পেয়ে জ্বালানী কাঠের স্তরে স্তরে পুড়তে থাকে শামুকের খোসা । আগুনের তাপে শামুকের খোসার ক্যালসিয়াম কার্বনেট ভেঙে তৈরি হয় ক্যালসিয়াম অক্সাইড। এই ক্যালসিয়াম অক্সাইড সাধারণত চুন বা কুইক লাইম নামে পরিচিত। পুড়ে যাওয়া শামুকের খোসার কুঁড়া চালুনি দিয়ে চেলে এরপর একটি গর্তে ঢালতে হবে। আর এতে পরিমাণ মতো জল মিশালে তৈরি হয় ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড নামের চুন। এটি খাওয়ার উপযোগী ধবধবে সাদা চুন। এই ভাবে শামুক দিয়ে পান খাওয়ার উপযোগী চুনও তৈরি করা যায়।

শামুকের খোলস থেকে চুন তৈরি এবং এর মাংসল অংশ মাছ ও হাঁস-মুরগির খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।  আর শামুক খোসা বা খোলস থেকে তৈরি চুন আবার মাছ চাষেই ব্যবহার করা হয়। আবার শামুকের মাংস মানুষের খাদ্য হিসেবেও  বাজারে বিক্রি হয়ে থাকে। যেমন হলদিয়ার মাখন বাবুর বাজারে শামুক নিয়মিত বিক্রি হয়। এছাড়া অন্যন্য বাজারেও শামুকের মাংস বিক্রি হতে দেখা যায়।    

আরও পড়ুন - Medicinal Plant Farming - ঔষধি উদ্ভিদের চাষ করে আয় করুন প্রচুর মুনাফা

সুতরাং পরিকল্পিত ভাবে শামুক চাষ করতে পারলে খুবই লাভবান হওয়া যাবে। ছোট দেশীয় শামুক চাষ সম্প্রসারণ ও সঠিক বাজারজাতকরণের মধ্য দিয়ে এই জলজ সম্পদের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব।

আরও পড়ুন - Cow Dung Business- কৃষকরা কম সময়ে স্বল্প ব্যয়ে এই ব্যবসায় লাভ করতে পারেন প্রচুর মুনাফা

English Summary: Employment of rural youth through snail farming, find out how to do it in detail
Published on: 28 June 2021, 07:19 IST

எங்களுக்கு ஆதரவளியுங்கள்!

প্রিয় অনুগ্রাহক, আমাদের পাঠক হওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার মতো পাঠকরা আমাদের কৃষি সাংবাদিকতা অগ্রগমনের অনুপ্রেরণা। গ্রামীণ ভারতের প্রতিটি কোণে কৃষক এবং অন্যান্য সকলের কাছে মানসম্পন্ন কৃষি সংবাদ বিতরণের জন্যে আমাদের আপনার সমর্থন দরকার। আপনার প্রতিটি অবদান আমাদের ভবিষ্যতের জন্য মূল্যবান।

এখনই অবদান রাখুন (Contribute Now)