কৃষকদের তাদের পছন্দ ও সুবিধামতো ফসল বিক্রি করার সুযোগ করে দিতে রাজ্যের কৃষি উৎপাদন বিপণন (নিয়ামক) আইন ১৯৮৭ সংশোধন করেছে তামিলনাড়ু সরকার।
বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে এই পদক্ষেপটি তাৎপর্যপূর্ণ কারণ এটি এখন কৃষকদের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম যেমন অ্যামাজন (Amazon) এবং বিগবাসকেটের (BigBasket ) মতো তারা তাদের পণ্যগুলি বিক্রি করতে সক্ষম করে তোলে। ২০১৭ সালেই তামিলনাড়ু সরকার বন্টন ব্যবস্থায় ইউনিফর্ম লাইসেন্স এবং সিঙ্গল পয়েন্ট লেভি একটি সংশোধনের মাধ্যমে আনে। এটি কৃষকদের জন্য যেমন হিম ঘর, গোডাউন এবং লাইসেন্সকৃত বেসরকারী বাজার সংস্থাগুলির জন্যও নতুন দিশা দেখাবে।
এর আগে, কৃষকরা সরকার পরিচালিত কৃষি উৎপাদন বাজার কমিটির (এপিএমসি) মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। সেখানেই তাদের উৎপাদন বিক্রি করতে হত। করোনা ভাইরাস মহামারী ও লকডাউনের কারণে বিধিনিষেধের মধ্যে পড়তে হয় কৃষকদের, সমস্যায় পড়তে হয় গ্রাহকদেরও।
কৃষি উৎপাদন কমিশনার গগনদীপ সিং-এর কথায়, "এটি সরকার নিয়ন্ত্রিত বাজারগুলির গুরুত্ব হ্রাস করতে পারে। তবে সময়ের চাহিদা অনুযায়ী কৃষকরা যাতে তাদের উৎপাদনের ভাল দাম পান তার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”
কেন্দ্রীয় সরকার ১ জুন থেকে লকডাউন ৫.০ (৩০ জুন অবধি অব্যাহত থাকবে) নির্দেশিকা জারি করেছে। কনটেন্ট জোন ছাড়া বেশিরভাগ স্থানে পর্যায়ক্রমে নিষেধাজ্ঞাগুলি তুলে নেওয়া হবে। হটস্পট হিসাবে বিবেচিত অঞ্চলগুলিতে রাজ্য সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সব ধরনের ছাড় দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, করোনা ভাইরাসে অচলাবস্থা তৈরি হলেও তা কৃষি এবং গ্রামীন উন্নয়নে কোনও প্রভাব ফেলবে না বলে অভিমত কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং-এর। তিনি জানান, “নরেন্দ্র মোদী সরকারের অগ্রাধিকার হ'ল কৃষক, গ্রামীণ ভারত এবং দরিদ্র মানুষকে মহামারী থেকে রক্ষা করা। আমরা কৃষিকাজ ও ফসল সংগ্রহ, কৃষির বাজার ও মান্ডি কাজ, এমএসপিতে ক্রয় (ন্যূনতম সহায়তা মূল্য), বীজ ও সার সরবরাহ, এবং কৃষি / ফল-ফুল সম্পর্কিত পণ্য সরবরাহ সম্পর্কিত বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করেছি। কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই লক-ডাউনের জন্য গ্রামীণ ও কৃষিক্ষেত্রকে একাধিক ছাড় দিয়েছে। এটি স্বাভাবতই, ফসল কাটা ও বপনের মরসুমের সরবরাহ পদ্ধতিতে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সহায়তা করেছে। আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।”
আবার, করোনার জন্য দুগ্ধজাত দ্রব্য এবং ফুলের চাষে প্রভূত লোকসান হয়েছে। তার হাত থেকে বাঁচতে সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে?
কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর কথায়, কোভিড -১৯ মহামারীর প্রভাবে দেশে সংকটজনক পরিস্থিতির কারণে কিছু জায়গায় এটি ঘটে থাকতে পারে। তবে কৃষকদের সময়মতো সুবিধা দেওয়ার জন্য সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। মোদি সরকার ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী-কিষান প্রকল্পের আওতায় ২৪ শে মার্চ থেকে কৃষকদের কাছে ১৭,৯৮৬ কোটি টাকা পৌঁছে দিয়েছে। ১ এপ্রিল থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাকী থাকা কিস্তির টাকা ৮.১৩ কোটি কৃষকদের ক্ষেত্রে পরিশোধ করা হয়েছে। কিসান ক্রেডিট কার্ডের আওতায় ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে মোট ১৮,০০০ কোটি টাকার জন্য প্রায় ২০ লক্ষ আবেদনকারীর জন্য অনুমোদন করা হয়েছে। তাছাড়া, এমনারেগাতেও জোর দেওয়া হচ্ছে এবার। বহু পরিযায়ী শ্রমিক লক-ডাউনের জন্য নিজের নিজের জায়গায় ফিরে গেছে। তাদের কাজের প্রয়োজন। সেই চাহিদা মেটাবে এমনারেগা। রাজ্যগুলির জন্য ৩৩,৩০০ কোটি টাকা এমনারেগা খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে। যার মধ্যে ২০,৭৫২ ইতিমধ্যেই দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সুব্রত সরকার (৯৬৭৪৪৮২৬১৫)