'হিং' সাধারণত অনেকের মতে কেবল স্বাদ-বর্ধক হিসাবে ব্যবহার করা হয়। যে কোন খাবারকে সুস্বাদু খাবারে রূপান্তর করতে পারে এটি। তবে খাদ্যকে সুস্বাদু করা ছাড়াও হিং-এর অনেকগুলি ঔষধি গুণ রয়েছে। এটি পাচনতন্ত্রের ক্ষমতাকে উন্নত করতে পারে। লক্ষণীয় বিষয়, দেশে প্রথমবার হিং চাষে সাফল্য এসেছে। আমাদের দেশে হিং-এর ব্যবহার প্রায় ৪০ শতাংশ এবং এর বাজারমূল্য প্রতি কেজি প্রায় ৩৫০০০ টাকা। এটি যথেষ্ট আশ্চর্যের বিষয় যে, হিং-এর বাজারমূল্য এত বেশী হওয়া সত্ত্বেও এতদিন পর্যন্ত দেশে এর চাষ হয় নি, অন্য দেশ থেকে আমদানি করা হয়।
দেশজুড়ে কৃষকদের জন্য হিং-এর চাষ প্রচুর সমৃদ্ধি আনতে পারে, কারণ এটি দেশের অন্যতম ব্যয়বহুল মশলা হিসাবে বিবেচিত। COVID-19 এর এই প্রাদুর্ভাবের সময়ে কৃষকরা যদি তাদের খামারে হিং চাষ করেন, তবে তারা আরও বেশি উপকৃত হতে পারেন।
সম্প্রতি হিমাচল প্রদেশ সরকার কৃষকদের কল্যাণে হিং চাষের উদ্যোগ নিয়েছে। হিমাচল প্রদেশের কৃষি বিশেষজ্ঞ ডঃ বিক্রম শর্মার দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টা অবশেষে সফল হয়েছে এবং রাজ্যের কৃষকরা এখন হিং চাষ করতে পারবেন। তদুপরি, সরকার হিমালয়ের অন্যান্য অঞ্চলেও এর চাষের পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।
হিং-এর বীজ কৃষকদের বিনামূল্যে দেওয়া হবে -
ডাঃ শর্মার মতে, এখন সময় এসেছে কৃষকদের ক্ষমতায়নের, যা কেবল তাদের সহায়তা করেই করা যেতে পারে। তিনি ইরান থেকে হিং বীজ আমদানির নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন যে, কৃষকদের অর্থনৈতিক অবস্থাও দেখার দরকার, অতএব, কৃষকদের কাছ থেকে হিং বীজের জন্য কোনও অর্থ নেওয়া হবে না এবং তাদের বিনা খরচে চাষের জন্য তা দেওয়া হবে। লাহাউল-স্পিতি, পাঙ্গি এবং কিন্নাউর – এই জায়গাগুলি হিং চাষ শুরু করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। কারণ ড. শর্মার মতে, এই জায়গাগুলির জলবায়ু হিং চাষের উপযোগী।
হিং চাষের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ -
হিং চাষের জন্য উপযোগী পরিবেশ, জলবায়ু সন্ধান করা খুবই কঠিন। হিং চাষের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুকূল তাপমাত্রা। এটি কেবলমাত্র এমন জায়গায় চাষ করা যেতে পারে, যেখানে তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রী থেকে ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কারণ হিং গাছ এর চেয়ে বেশি তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে না। তাপমাত্রা খুব ঠাণ্ডা বা খুব গরম কোনটাই যেন না হয়।
গ্রীণ হায়সে প্রথমে ২-২ ফুট দূরত্বে হিং-এর বীজ বপন করা হয়। এরপরে গাছটি বের হয়ে গেলে এটি ৫-৫ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়। জমির আর্দ্রতা পর্যবেক্ষণ করে তাতে জল দেওয়া হয়, লক্ষ্য রাখতে হবে অতিরিক্ত জল যেন না দেওয়া হয়, তাতে গাছের ক্ষতি হতে পারে।
গাছগুলির আর্দ্রতা বজায় রাখতে সিক্ত ঘাস ব্যবহার করা যেতে পারে। একটি বিশেষ বিষয় হল, হিং গাছটি পূর্ণ হতে সময় নেয় ৫ বছর।
উচ্চ উপার্জনের সুযোগ হিং চাষে (Income Double) -
ডাঃ শর্মার মতে, হিং চাষ কৃষকদের পক্ষে খুব লাভজনক হতে পারে। কৃষকরা যদি এটির চাষ শুরু করেন তবে তারা বহুগুণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এখন পর্যন্ত, হিং-এর বাজারমূল্য প্রতি কেজি প্রায় ৩৫,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকা পর্যন্ত।
Related Link - https://bengali.krishijagran.com/others/basmati-1637-will-double-the-income-of-farmers-from-paddy-fields/
Share your comments