অন্যান্য বছরের ন্যায় এবছরও হোলি প্রায় এসেই গেল। বাজারে রঙ, আবির, মিথাই-এ ভরে গেছে। আর যেমন যেমন ভাবে হোলির দিন কাছে আস্তে থাকে তেমন তেমন ভাবে বাজার ক্রমাগত ভারী হতে থাকে, বাজারে দাম চরতে থাকে। হোলিকে ভাতৃত্বের প্রতীক হিসাবে মানা হয়, এই সময় কোনো মানুষ তার কঠোর শত্রুকেও আলিঙ্গন করে তাকে এক চিমটে রঙ মাখিয়ে আপন করে নেয়। সময়ের সাথে সাথে হোলি খেলার নিয়ম নীতিতেও বদল ঘটেছে। এখনতো বাজারে কত রকমের পিচকারি, আবির, রঙ আর না জানি কত হরেক রকমের জিনিষ পাওয়া যায়। কিন্তু একটা জিনিষ এমন আছে যা বদলেছে, যাকে আরও বেশি মাত্রায় বদলানো প্রয়োজন। আসলে আমরা সেই ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি যে, হোলিতে মহিলাদের সাথে খুব জোর জবরদস্তি হয়ে থাকে, এবং এটা কোনো নতুন ব্যাপার নয়। অবশ্য একথা ঠিক যে বর্তমানে মহিলারা সময়ের সাথে সাথে নিজেদের অনেক বেশি সজাগ করেছে এমনকি নিজেদের অধিকার সম্বন্ধেও তারা অনেক বেশি সজাগ হয়েছে। হোলিতে বাড়ির মহিলাদের বাড়ির লোকেদের কাছে বা কোনো বহিরাগত লোকেদের কাছে লাঞ্ছিত হতে হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এমন অবস্থার সূচনা কেনো বারবার হোলিতেই হয়ে থাকে? আসুন দেখে নেওয়া যাক এর কিছু বিশেষ কারণ-
হোলিতে মদ্যপান
হোলি তাদের কাছেই সবথেকে বেশি আনন্দের হয় যারা হোলি উৎসবের নামে মদ্যপানেই বেশি ব্যস্ত থাকেন। একবার কোনো মানুষ যখন মদ্যপানে বেহুঁশ হয়ে যায় তখন তার মধ্যে কোনটা ভালো ও কোনটা মন্দ তার কোনো চেতনা থাকে না। তাই হোলির দিন অন্তত আপনারা কোনো নেশাদ্রব্য বা খাদ্য সেবন বা পান না করার। ঘরে হোলি খেলার পর বাচ্চা ও বুড়োদের মধ্যে গুজিয়া ও অন্যান্য মিঠাই পরিবেশন করে ঘরের মধ্যে একটি মিষ্টি বাতাবরণ তৈরি করার চেষ্টা করুন। মদ্যপান করবেন না।
উল্টোপাল্টা কাজ বা ব্যবহার সহ্য করবেন না
মহিলারা একটা কথা মাথায় রাখবেন যে কোনো ব্যক্তির উল্টোপাল্টা কাজ বা বদমেজাজি দেখালে তা একেবারেই সহ্য করবেন না। যদি আপনার সাথে অহেতুক কোনো শাসন শোষণ চলে তাহলে সাথে সাথেই পুলিশকে জানান। আজ যদি আপনি সাহসের সাথে রুখে দাঁড়ান তাহলে সমাজের আর পাঁচটা মানুষ আপনাকে দেখে ভরসা পাবে, যা আখেরে সমাজে মঙ্গল করবে।
ঘরের মানুষের বিরুদ্ধেও আওয়াজ তুলুন
কখনো কখনো এমন কিছু ব্যাপার ঘটে যেখানে ঘর কিংবা বাইরের মানুষের দ্বারা মহিলারা লাঞ্ছিত হন। জামাই বাবু, শালা, মেসো, কাকা, দেওর আর না জানি আরও কতশত নিজের মানুষরাই ঘরের মেয়েদের সাথেই এই সব অহেতুক শাসন ও শোষণ চালাতে থাকে। মহিলাদের সাথে এই ধরণের শোষণের ব্যাপারে পুলিশ রিপোর্ট বলছে যে মেয়েরা সমাজের লোকনিন্দা ও লোকলজ্জার ভয়ে এইসব কথা বাইরের কোনো মানুষকে বলতে পারে না তাই বাড়ীতে যেই ঘটনাই ঘটুক না কেন মেয়েরা তা বাইরে প্রকাশ করবে না, এই জন্যই পুরুষ মানুষের এই ধরণের কাজ করে থাকে। আর হোলির দিন তারা ঘরের মহিলাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে রঙ লাগানোর বাহানায়।
আইন আপনার সাথে আছে
মহিলাদের ক্ষেত্রেও বলা হচ্ছে তারা যেন না ভাবে আইন তাদের সাথে আছে বলে তারাও এর অপব্যবহার করবে। কিন্তু তাদের সাথে উল্টোপাল্টা কিছু হলে অবশ্যই তারা পুলিশই সাহায্য নিতেই পারে। পুলিশ অন্তত হোলির দিনে সদা তৎপর থাকে, এবং যারা হোলির দিন মদ্যপান করে মানুষের সাথে দুর্ব্যবহার করে তাদের হিসাব তো তারা আলাদা ভাবে নেয়। পুলিশ সবসময়ই চেষ্টায় থাকবে যাতে সাধারণ মানুষের কোনো অসুবিধা না হয়।
- প্রদীপ পাল (pradip@krishijagran.com)