তরাই অঞ্চলের মাটি পাহাড় ধোয়া অভ্ৰ সংযুক্ত পরিবর্তিত শিলা চূর্ণ দিয়ে তৈয়ারী হয়। এই এলাকায় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের জন্য ধনাত্মক আয়ন জাতীয় খাদ্যউপাদান মাটির নিচে চলে যায়।তাই প্রকৃতিগত ভাবেই মাটির গঠন কোথাও অনেকটা হালকা বলি যুক্ত দোয়াস ও অম্ল জাতীয়।এই এলাকার সমতলে অনেকসময়ই বর্ষার সময়ে বন্যার ও খরার কবলে পরে।মাটি আমাদের খাদ্য যোগান দেয় তাই আমাদের কর্তব্য হচ্ছে বৈজ্ঞানিক উপায়ে মাটি তথা ভূমি সংরক্ষণ।
মাটি আর জল একে অপরের পরিপূরক।
মাটির মধ্যে রয়েছে ৫% জৈব পদার্থ,৪৫%খনিজ,২৫%জল এবং বায়ু ২৫%(শতাংশ) এছাড়াও মাটির মধ্যে থাকে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু যা মাটিকে সক্রিয় রাখে। বৈজ্ঞানিক তথ্য বলছে যে, এক ইঞ্চি মাটি তৈরি হতে সময় লাগে ৫০০-১০০০ বছর কিংবা আরো বেশি।
এই মাটির অবৈজ্ঞানিক ব্যবহার ও সঠিক সংরক্ষণ এর অভাবে মাটি ক্ষয় হয়ে চলছে সবার অলক্ষে।এক ইঞ্চি মাটি দুই বা তিনটি ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ক্ষয় হয়ে যায়, এই ক্ষয়ের ফলে মাটির খাদ্য উপাদান গুলি ভেসে যায়। এইজন্য ভূমিক্ষয় কে মাটির ব্যহামান মৃত্যু বলা হয়।
পশ্চিম বঙ্গের জনসংখ্যার নিরিখে প্রতি জন মানুষে মাথা পিছু মাত্র ১৬ ডেসিমেল এর কম আবাদি জমি আছে।জমির পরিমান বৃদ্ধি হবে না কিন্তু জন সংখ্যা বৃদ্ধি পাবেই।তাই এই অবস্থায় যতটুকু জমি আছে সেটুকু জমিকে পূর্ণ ব্যবহার ও ভূমি সংরক্ষণ করতে না পারলে বিপদ অবশ্যম্ভাবী।
এইসব পদ্ধতি অবলম্বন করলে ভূমিক্ষয় রোধ করা অনেকাংশে সম্ভব:
১.ঢালু জমিতে আরা আড়ি ভাবে বাঁধ দেওয়া দরকার।
২.সেই জমির ঢালে আরা আড়ি ভাবে চাষ আবাদ করতে হবে।
৩.খাদ বা নালি ক্ষয় রোধের ক্ষেত্রে "বাঁধ"নির্মাণ করে জল নিস্ক্রমনের ব্যবস্থা করা।
৪.পর্যায় ক্রমে চাষ আবাদ করতে হবে।
৫.পংক্তিতে চাষ করতে হবে।
৬.ক্ষয় রোধক কিংবা স্বল্প ক্ষয় জাতীয় ফসল চাষ করতে হবে।
৭. ঘন আচ্ছাদন কারী(ধান, গম, মিষ্টি আলু) ও শুঁটি জাতীয়(চীনা বাদাম, বরবটি, ধঞ্চে, মুগ) ফসল চাষ করতে হবে।
৮.গো চরণ ভূমির পরিমিত ব্যবহার করতে হবে।
৯.বিভিন্ন ভাবে বাঁধ দিতে হবে-পরিধি বাঁধ, আলী বাঁধ, বন্যা নিরোধক বাঁধ।
১০.পতিত জমি গুলোতে বিভিন্ন ধরনের গাছ(ফার্ম ফরেস্ট)ও ফসল ও বনের চাষ(এগ্রো ফরেস্ট) করা দরকার।
-অমরজ্যোতি রায়।(amarjyoti@krishijagran.com)