বর্তমান সময়ে করোনা ভাইরাসের আক্রমণ এবং লকডাউন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, এইসবকিছু মিলিয়ে আর্থিক অনটনে অনেকেই৷ শহর থেকে গ্রাম, প্রভাব পড়েছে সর্বত্রই৷ এমতাবস্থায় ঘুরে দাঁড়াতে হবে, আর তার জন্য কয়েকটি ছোট ব্যবসাকে বিকল্প হিসেবে বেছে নিতেই পারেন আপনি৷
কম পুঁজিতে, নিজের গ্রামের মধ্যে থেকেই এইসব ব্যবসা করতে পারবেন৷ এর জন্য করোনা ভাইরাসের সংক্রমণকে উপেক্ষা করে শহরে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না৷ এর থেকে শুধু উপার্জনই নয়, মুনাফাও অর্জন করতে পারবেন আপনি৷ কোন কোন ব্যবসা আপনার নাগালের মধ্যে রয়েছে এই প্রতিবেদনে তাইই উল্লেখ করা হল৷ বিশেষ করে যাঁরা ফুল চাষ, পশুপালনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তাঁদের পক্ষে খুবই লাভজনক৷
ফ্লোরিকালচার (Flower farming)
ফ্লোরিকালচার, ফুলের এই ব্যবসা থেকে আপনি প্রচুর মুনাফা অর্জন করতে পারবেন৷ পুজো, সাজসজ্জা থেকে শুরু করে উপহার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফুলের প্রয়োজন হয়৷ এমনকি অনলাইনেও এই ফুলের জোগান দেওয়া সম্ভব৷ আপনি যদি ফুল চাষের সঙ্গে যুক্ত তাহলে এই ব্যবসা আপনার পক্ষে করা খুবই সুবিধাজনক হবে৷ অনেকক্ষেত্রে সরকারী সাহায্যও পাওয়া যায়৷ আপনার যদি অর্ধেক একর জমির ওপর ফুল চাষ হয়ে থাকে তাহলে সারা বছরে আপনার ১০-১১ লক্ষ টাকার মুনাফা হতে পারে৷
ছাগল পালন (Goat rearing)
ছাগল পালন বা গোট ফার্মিং-ও চাইলে করতে পারেন৷ ছাগলের ব্রিডিং থেকে শুরু করে তার দুধ বিক্রি সবকিছুই আপনাকে অতিরিক্ত উপার্জনের সুযোগ করে দেবে৷ এই ব্যবসায় আপনি ১-২ লক্ষ টাকা লাভ করার সুযোগও পেতে পারেন৷
অ্যালোভেরার ব্যবসা (Aloe vera)
অ্যালোভেরার ব্যবসা মাত্র ৪০-৫০ হাজার টাকায় শুরু করতে পারেন৷ এর জন্য মাত্র একবার চাষের জমিতে গাছ রোপন করতে হবে৷ একবার ফসল লাগানোর পর প্রায় ৩ বছর পর্যন্ত আপনি এর থেকে ব্যবসা করতে পারেন৷ যদি ১ হেক্টর জমির ওপর এর চাষ করেন তাহলে সারা বছর এর থেকে ৯-১০ লক্ষ টাকা উপার্জন করতে পারেন আপনি৷
ডেয়ারির ব্যবসা (Dairy business)
গ্রামে সহজেই এই ব্যবসার সঙ্গে আপনি যুক্ত হতে পারবেন৷ এতে প্রচুর উপার্জনের সুযোগ রয়েছে৷ অনেকেই গ্রামে ডেয়ারি ফার্মিং-এর ব্যবসা করেন৷ বড় স্তরে এই ব্যবসা শুরু করতে চাইলে সেই মতো প্রস্তুতি নিতে হবে, প্রয়োজন জায়গারও৷ প্রসঙ্গত, এই ডেয়ারি ফার্মিং থেকে প্রায় ১-২ লক্ষ টাকা মুনাফা অর্জন করা যেতে পারে৷
তাই বর্তমানের এই কঠিন পরিস্থিতিতে আত্মনির্ভর হতে ব্যবসা শুরুর পরিকল্পনা করতে পারেন৷ এছাড়া, নীচের দুটি ব্যবসাও চাইলে করতে পারেন৷
পণ্যসামগ্রীর দোকান (General Store)
চাইলে আপনি নিজস্ব দোকান খুলতে পারেন, যেখানে পণ্যসামগ্রীর ব্যবসা আপনি করতে পারবেন৷ জেনারেল স্টোরে আপনি আপনার পুঁজি অনুযায়ী এবং গ্রামের চাহিদার কথা মাথায় রেখে পণ্যসামগ্রী রাখতে পারবেন৷ এতে আপনার বিক্রি ভালো হবে৷ সঠিকভাবে করতে পারলে এর থেকে আপনি প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা উপার্জন করতে পারবেন৷
কসমেটিকস্-এর দোকান (Cosmetic shop)
কসমেটিকস্-এর জন্য গ্রামের মহিলাদের অনেকক্ষেত্রেই শহরের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয়৷ সকলেই অনলাইনে অর্ডার করার মতো সুযোগও পান না৷ তাই এক্ষেত্রে আপনি চাইলে গ্রামে কসমেটিকস্-এর দোকান খুলতে পারেন৷ মহিলাদের থেকে অর্ডার নিয়ে, তাদের পছন্দমতো বা যে জিনিস বেশি বিক্রি হচ্ছে তা আরও বেশি করে এনে রাখতে পারেন নিজের এই দোকানে৷ কসমেটিকস্-এর চাহিদা সারাবছরই থাকে৷ এবং এই ব্যবসা করে অনেকে মাসে উপার্জনের পাশাপাশি প্রচুর লাভের মুখও দেখেন৷
আরও পড়ুন- গ্রামে এই ৫ ব্যবসাতেই (Business in Village) যুবকরা হয়ে উঠুন আত্মনির্ভর, উপার্জন করুন প্রচুর